সেঁজুতি দাস
ঢাকে পড়ে গিয়েছে কাঠি। শরতের নীল আকাশ আর কাশ ফুল জানান দিচ্ছে মা আসছে। মা আসার সেই আনন্দ মেতে উঠেছে শহর কলকাতা। সেই সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছে পুজোর প্রস্তুতিও। বেহালার ঐতিহ্য মন্ডিত পুজো-এর কাজও পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। এবছরও একটি নতুন ও অভিনব ভাবনা দিয়ে নিজেদের পুজো প্যান্ডেল সাজাতে চলেছে দক্ষিণ কলকাতার বড়িশা সর্বজনীন। এবছর তাদের থিম হল 'পালক'।
মানুষ যত আধুনিক হয়েছে, ততই প্রকৃতি থেকে দূরে সরে এসেছে। কংক্রিটের জঙ্গলে ভরছে শহর। এক চিলতে সবুজ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চাষের জমিও প্রমোটারের দখলে চলে যাচ্ছে। পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছে কৃষক। এমনটা চলতে থাকলে খাদ্যসঙ্কট তৈরি হতে বাধ্য। এবারের দুর্গাপুজোয় মানুষকে এই বার্তাই দিচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার বড়িশা সর্বজনীন। সমাজবন্ধু কৃষকদের কথা মাথায় রেখেই ক্লাবের এবারের থিম 'পালক'। রোদ, ঝড়, জল মাথায় করে এঁরা ফসল ফলান, আমাদের পালন করেন। তাই তাঁদের সম্মান জানাতে গোটা মন্ডপটাই কৃষি সরঞ্জাম দিয়ে সাজিয়ে তুলেছেন শিল্পী গৌরাঙ্গ কুইল্যা। শিল্পীকে সাহায্য করতে তমলুক থেকে আনা হয়েছে একশো জন কারিগর। রাত দিন এক করে কাজ করছেন। একচালা ঘরে মৃন্ময়ী মা এখানে আটপৌরে গ্রাম্য বধূ। পুরো মন্ডপটা ধরে রেখেছে একটা গাছের কান্ড, মূল, শাখা মূল। মন্ডপকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে ছোট্ট পরিখা। তাতে রয়েছে পদ্ম।
বড়িশা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সদস্য দীপরাজ সামন্ত জানিয়েছেন, এবার তাঁদের পুজোর বাজেট ষাট লক্ষ টাকা। তৃতীয়াতে প্যান্ডেল দর্শকদের জন্য খুলে দেওয়া হবে। স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে নিরাপত্তা, বায়ো টয়লেট, চব্বিশ ঘন্টার মেডিক্যাল ক্যাম্পের যথাযথ ব্যবস্থা থাকছে। গত দু বছরের মতো এবার ও পুজোর উদ্বোধনে আনা হবে চলচ্চিত্র অভিনেতা বা অভিনেত্রীকে।
গত বছর তাদের থিমে উঠে এসেছিল আন্দামানের জারোয়া জনজাতিদের জীবন যাত্রা। এবছর তাদের এই থিমের স্বাদ নিতে আপনাকে যেতে হবে বেহালার বড়িশা সর্বজনীন-এর পুজোতে।