বেতন কাঠামো-সহ চার দফা দাবিতে সল্টলেকে এখন অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন পার্শ্বশিক্ষকরা। তাঁদের আন্দোলনের আঁচ পৌঁছে গিয়েছে সংসদেও। অবশেষে নড়চড়ে বসল রাজ্য সরকার। আন্দোলনকারীদের শোকজ করল শিক্ষাদপ্তর। শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাফ কথা, 'পার্শ্বশিক্ষকরা সরকারি চাকরি করেন। কাউকে কিছু না জানিয়ে দীর্ঘক্ষণ স্কুলে অনুপস্থিত থাকছেন তাঁরা। ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারছে না। এটা বরদাস্ত করা হবে না। '
রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি ও সরকার অনুমোদিত স্কুলের পার্শ্বশিক্ষকের সংখ্যা কম নয়। বেতন কাঠামো চালু-সহ চার দফা দাবিতে অনশনে বসেছেন তাঁরা। আন্দোলনকারীর সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দাবি যতক্ষণ না পূরণ হবে, ততক্ষণ অনশন চলবে। গত ১৬ নভেম্বর থেকে পার্শ্বশিক্ষকদের অনশন চলছে সল্টলেকে সেন্ট্রাল পার্কের মেলার মাঠে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে বিজেপি। বস্তত, পার্শ্বশিক্ষক যেদিন থেকে অনশন শুরু করেন, সেদিন সল্টলেকে তাঁদের অনশনমঞ্চে হাজির হন খোদ বিজেপি-এর রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন থেকে কাটমানির খাওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি। এরইমাঝে আবার পশ্চিম মেদিনীপুরে এক পার্শ্বশিক্ষকদের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছিল রাজ্যে। আন্দোলনকারীদের দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে সল্টেলেকে এসে অনশন কর্মসূচিতে শামিল হয়েছিল তিনি। অনশন চলাকালীন অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওই পার্শ্বশিক্ষককে বাড়ি বাড়িতে নিয়ে চলে যান পরিজনেরা। অনশনজনিত অসুস্থতার কারণেই মারা গিয়েছেন তিনি। ওই পার্শ্বশিক্ষক দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন বলে পাল্টা দাবি করেন পরিবারের লোকেরা।
এদিকে এই ঘটনার পর পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে সোচ্চার হন এ রাজ্যের দুই বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় ও বাবুল সুপ্রিয়। রাজ্য সরকারের দিকে আঙুল তোলেন তাঁরা। পার্শ্বশিক্ষকদের আন্দোলন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধানকড়। টুইট করে সবপক্ষকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু, ঘটনা হল, এতকিছুর পরেও রাজ্য সরকারের তরফে কোনও ইতিবাচক বার্তা আসেনি। উল্টে সেন্ট্রাল পার্কে অনশনে আপত্তি জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করা হয়। তবে আন্দোলনরত পার্শ্বশিক্ষকদের পক্ষেই রায় দেয় আদালত। শেষপর্যন্ত আন্দোলনকারীদের শোকজের চিঠি ধরাল শিক্ষা দপ্তর।