কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিচারপতির বেনজির সংঘাত। বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের নির্দেশ এবং মন্তব্য অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁর এজলাসে শুনানিই বয়কট করলেন সরকারি আইনজীবীরা। এভাবে রাজ্য সরকারের আইনজীবীদের একজন বিচারপতির এজলাস বয়কট করার ঘটনা স্মরণকালের মধ্যে মনে করতে পারছেন না হাইকোর্টের প্রবীণ আইনজীবীরা।
বিভিন্ন পুরসভায় আস্থা ভোট নিয়ে যে আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে, সেই মামলাগুলি বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসেই উঠেছিল। এখনও বনগাঁ এবং হালিশহর পুরসভার আস্থা ভোট সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলছে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে। এই মামলাগুলির শুনানি চলাকালীন রাজ্য সরকারস পুলিশ এবং শাসক দলের ভূমিকা নিয়ে একাধিকবার প্রশ্ন তুলে কঠোর সমালোচনা তুলেছেন বিচারপতি। যা রাজ্যের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেই কারণেই রাজ্যের আইনজীবীরা বেনজিরভাবে ওই বিচারপতির এজলাস বয়কট করলেন বলে আইনজীবী মহলের ধারণা।
আরও পড়ুন- দেওয়া- নেওয়া থেকেই কাটমানি কনসেপ্ট, কল্যাণের আক্রমণের জবাবে বললেন ক্ষুব্ধ বিচারপতি
আরও পড়ুন- বনগাঁ, হালিশহর নিয়ে ক্ষোভ আদালতের, আস্থা ভোটে অস্বস্তি রাজ্যের
বিধাননগর পুরসভায় সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে আনা তৃণমূল কাউন্সিলরদের অনাস্থাও বেআইনি বলে খারিজ করে দিয়েছিলেন এই বিচারপতিই। সব্যসাচী দত্তের দায়ের করা মামলার শুনানির সময়ই তৃণমূল সাংসদ এবং আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন।
তার পরে বনগাঁয় আস্থা ভোটের সময় অশান্তির জন্য পুলিশ এবং পুরসভার চেয়াম্যানের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ওই বিচারপতি। তাড়াহুড়ো করে হালিশহর পুরসভার আস্থা ভোট করানো চেষ্টা করায় রাজ্যের ভূমিকার সমালোচনা করেছিলেন বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়। এমন কী, হালিশহরের আস্থা ভোটের উপরেও স্থগিতাদেশ জারি করেন তিনি।
এ দিন হাইকোর্টের এগারো নম্বর ঘরে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে বেলা বারোটা পর্যন্ত আটটি মামলায় গরহাজির ছিলেন রাজ্য সরকারের আইনজীবীরা। এ দিনই ফের বনগাঁ অনাস্থা মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে।