জেলা সফরে গিয়ে আধিকারিকদের দেখা পাননি। এবার আচার্য হিসেবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে উপচার্য- সহ কোনও পদাধিকারীরই দেখা পেলেন না রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ঘটনা ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বললেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে ভুল করে থাকলে ফাঁসি দিন।'
এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেনেট বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের। কিন্তু আচমকাই সেই বৈঠক স্থগিত হয়ে যায়। তা সত্ত্বেও আচার্য হিসেবে এ দিন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রাজ্যপাল।
সেই মতো এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ স্ট্রিট ক্যাম্পাসে পৌঁছন জগদীপ ধনখড়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার সময় বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল সমর্থিত কর্মী সংগঠনের সদস্যরা। রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছনোর পরে উপাচার্য দূরে থাক, কোনও পদাধিকারী তাঁকে স্বাগত জানাতে আসেননি। দৃশ্যতই অবাক রাজ্যপাল সোজা উপাচার্যের ঘরের সামনে পৌঁছন। কিন্তু সেই ঘরও তালা বন্ধ ছিল। রাজ্যপাল চাবি আনতে বললেও তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। ছিল না তাঁকে আপ্যায়নের কোনও ব্যবস্থাও। কোনওক্রমে এক কাপ চা দেওয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যকে।
বেশ কিছুক্ষণ সেখানে অপেক্ষার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন রাজ্যপাল। ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেন, 'আমি তো আগে থেকে জানিয়েই এখানে এসেছিলাম। উপাচার্য কি তাঁর ঘরের চাবি নিয়েই চলে গিয়েছেন? আমাকে আট ফুট বাই আট ফুটের একটা ঘরে গিয়ে বসতে হল। কেউ আমাকে স্বাগত জানাতে পর্যন্ত এলেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে কোনও ভুল করে থাকলে আমাকে ফাঁসি দিন।' রাজ্যপাল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফেই সেনেট বৈঠকে সভাপতিত্ব করার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন, তা ২৯ নভেম্বরই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছিলেন ধনখড়। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁকে জানানো হয়, অনিবার্য কারণবশত বুধবারের বৈঠক বাতিল করতে হচ্ছে।
রাজ্যপাল আরও অভিযোগ করেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পদাধিকারীদের সঙ্গে মোবাইল, ল্যান্ড ফোন এবং ই মেলে যোগাযোগের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। তবে এভাবে যে তাঁকে দমিয়ে রাখা যাবে না, তা ফের স্পষ্ট করেছেন রাজ্যপাল। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরনোর আগে গ্রন্থাগারেও যান রাজ্যপাল। কিন্তু সেখানেও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তাঁকে স্বাগত জানাতে কেউ হাজির ছিলেন না। জগদীপ ধনখড়ের অভিযোগ, এসবই হয়েছে রাজ্য সরকারের নির্দেশে। এর পরেও অবশ্য পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি মেনেই বৃহস্পতিবার বিধানসভায় যাবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যপাল।