কলকাতার বিমানবন্দরে দুই প্রতিবন্ধী সমাজকর্মীকে অপমান করল কর্তৃপক্ষ। কলকাতা বিমানবন্দরের এক মহিলা নিরাপত্তা কুহু দাস নামে এক প্রতিবন্ধী সমাজকর্মীকে প্যান্ট খোলার নির্দেশ দেন। কুহু দাস পোলিওতে আক্রান্ত। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে কুহু দাসের পায়ে ক্যালিপার্স লাগানো রয়েছে। বিমানবন্দরের মহিলা নিরাপত্তারক্ষী কুহুকে ওই ক্যালিপার্স খুলে দেখানোর নির্দেশ দেন। কুহু বার বার বলতে থাকেন, ক্যালিপার্স খুলতে গেলে তাঁকে প্যান্টও খুলতে হবে। এই কথায় ওই মহিলা নিরাপত্তারক্ষী কর্ণপাত করেন না বলে জানা গিয়েছে।
কুহুর সঙ্গে ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ কর্মী জিজা ঘোষ। তিনি সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। তিনিও ওই নিরাপত্তা রক্ষীকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু কুহুর ক্যালিপার্স না দেখানো পর্যন্ত কিছুতেই তাঁকে ছাড়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই সময় বাধ্য হয়েই জিজা ঘোষ নিজের উড়ান ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ঠিক করেন, কুহুকে না ছাড়া পর্যন্ত কিছুতেই তিনি বিমানবন্দর ছাড়বেন না। পরে কলকাতা বিমানবন্দর নিজেদের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চেয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
তিন বছর বয়সে পোলিও আক্রান্ত হন কুহু দাস। দীর্ঘদিন ধরে তাঁর পায়ে টাইটানিয়াম রডের একটি ক্যালিপার্স আছে। কুহু দাস ও জিজা ঘোষ প্রতিবন্ধীদের অধিকার নিয়ে আয়োজিত একটি সেমিনারে যোগ দিতে দিল্লি যাচ্ছিলেন। সাংবাদিকদের কুহু দাস জানিয়েছেন, বিমানবন্দরের তরফে জানানো হয়, ক্যালিপার্সটা খোলার পরেই তিনি স্ক্যানারের মধ্য দিয়ে যেতে পারবেন। কিন্তু কুহু দাস ক্যালিপার্স খুলতে অস্বীকার করেন। কারণ, ক্যালিপার্স খুলতে গেলে তাঁকে প্যান্ট খুলতে হবে। কুহু জানিয়েছেন, ' আমি যখন ক্যালিপার্স খুলতে অস্বীকার করলাম, ওই মহিলা নিরাপত্তা রক্ষী আর এক জন অফিসারকে আমার সামনে নিয়ে এল। আমার সঙ্গে এমন ব্যবহার করা হচ্ছিল, যেন আমি অন্যগ্রহ থেকে এসেছি। ঘটনায় আমি খুব অপমানিত বোধ করেছি। এই ধরনের অপমান ও অমানবিক আচরণ দেশের বাইরের কোনও বিমানবন্দর থেকে পাইনি।'
পরে জিজা ঘোষ ও কুহু দাসকে বিমানে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। রবিবারের ঘটনা হলেও সোমবার কলকাতা বিমানবন্দর টুইটারে ক্ষমা প্রার্থনা করে। জানানো হয়েছে, রবিবারের ঘটনায় জন্য তাঁরা লজ্জিত। এই ঘটনার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।