ছোট থেকেই সিনেমা দেখতে ভালোবাসতেন শপথ দাস। আর সেই ভালোলাগার হাত ধরেই তিনি পৌঁছে গেলেন বিশ্বের দরবারে। চলতি বছরে সুইজারল্যান্ডের লোকার্নো শহরে আয়োজিত ফিল্ম ফেস্টিভালে দক্ষিণ এশিয়া থকে একমাত্র প্রতিনিধিত্ব করবেন তিনিই। তবে এখানে চলচ্চিত্র প্রদর্শন বা সিনেমা দেখতে নয়, শপথ যাচ্ছেন সম্পূর্ণ একটা অন্য লক্ষ্যে। কেন চলচ্চিত্র উৎসবগুলি ক্রমশ দর্শক হারাচ্ছে তার কারণ খুঁজে বের করাটাই তাঁর কাজ।
শপথের চলচ্চিত্র জগতে আসাটা কিছুটা হঠাৎ করেই হয়েছিল বলা যেতে পারে। কারণ আঈর পাঁচজনের মতো তিনিও প্রথমে গতানুগতিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শুরু করেছিলেন। তার জন্যই ২০১০ সালে তিনি বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন। আর সেখানে গিয়েই ঘটে যায় ম্যাজিক। এক বন্ধুর হাত ধরে তাঁর প্রথম পরিচয় হয়েছিল ওয়ার্লড মুভিজ বা বিশ্ব-চলচ্চিত্রের সঙ্গে। তারপর থেকেই একের পর এক চলচ্চিত্র উৎসবে চষে ফেলেছেন শপথ। সিনেমা বানানোকেই পেশা করবেন বলে ঠিক করে নেন। চলচ্চিত্র নির্মাতা সুদীপ চ্যাটার্জির সহ-পরিচালক হিসাবে বেশ কয়েকটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বাংলাদেশী পরিচালক আফজল হোসেন মুন্নার সঙ্গে মিলে 'ওল্ড ম্যান অ্যান্ড দ্য গার্ল' নামে একটি পূর্ণ দৈর্ঘের চলচ্চিত্রও বানিয়েছেন।
তবে চলচ্চিত্র নির্মাণের পাশাপাশিই তাঁর কৌতূহল জেগেছিল ক্রমে চলচ্চিত্রের দর্শক ঘাটতি হওয়া নিয়ে। সেই থেকেই চলচ্চিত্র কীভাবে গুরুত্ব হারাচ্ছে দর্শকদের কাছে, সেই নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন। সিনেমার কোথায় ভুল হচ্ছে, কীভাবে দর্শষকদের হলমুখী করে তোলা যায় - এটাই হয়ে ওঠে তাঁর চর্চার বিষয়। পোল্যান্ডের 'হরাইজোন ফিল্ম ফেস্টিভাল' -এর দর্শক কমা নিয়ে তাঁর গবেষণাপত্র তিনি পাঠিযেছিলেন উদ্যোক্তাদের কাছে। তাতে ভাল সাড়াও পেয়েছিলেন। দীর্ঘ ছয় বছর গবেষণার পর এবার তাঁর ডাক এসেছে লোকার্নো প্রো অনুর্দ্ধ ৩০ প্রোগ্রাম থেকে। এর জন্য তাঁকে একটি ইন্টারভিউ দিতে হয়। সেটা ভাল হওয়ায় ডাক যে আসবে সেই বিষয়ে অনেকটাই নিশ্চিত ছিলেন শপথ। ৭ অগাস্ট থেকে শুরু হচ্ছে এই চলচ্চিত্র উৎসব। চলবে ১৭ অগাস্ট পর্যন্ত।