হাতে ঘাসফুল-মনে পদ্মফুল, দলের 'গদ্দারদের' নিয়ে চিন্তায় তৃণমূল

  • ঘাসফুলের ঘরের মধ্য়েই বিজেপির বাস
  • খুঁজে না বের করলে পরিস্থিতি হবে ভয়াবহ
  • ঘাসফুলের 'গিরগিটি'দের খোঁজ শুরু
  • ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের লক্ষ্যে মমতা

ঘরের মধ্য়েই রয়েছে শত্রু। এখনই খুঁজে না বের করলে পরিস্থিতি হবে লোকসভা নির্বাচনের মতো। তাই তড়িঘড়ি ঘাসফুলের 'গিরগিটি'দের খুঁজে বের করতে নির্দেশ এসেছে কালীঘাট থেকে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই সব 'ভেকধারীদের' দলে চাইছেন না তৃণমূল সুপ্রিমো। 

লোকসভা নির্বাচনের আগেও ঘটেছিল একই ঘটনা। দল বিপুল আসন পাবে বলে আশা করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। কিন্তু ফল বেরোনোর পর দেখা গেল অন্য চিত্র। ৪২-এ ৪২ তো দূরের কথা, রাজ্য়ে ১৮ টা আসন পেল বিজেপি। যে দলের রাজ্য়ে সংগঠনই দুর্বল, তারা কীভাবে এই আসন পায় ভেবে কুল পাচ্ছিলেন না মমতা। যদিও বিষয়টা পরিষ্কার করেন রাজ্য় বিজেপির 'চাণক্য' মুকুল রায়। 

Latest Videos

প্রাক্তন এই তৃণমূল নেতা জানান, দল ছাড়লেই মামলা দিচ্ছিল মমতার সরকার। রাজ্য়ে গণতন্ত্র বলে কিছু ছিল না।  বিজেপিকে জেতাতে তাই  তৃণমূলের নেতাদের 'ঘরে থেকেই' পদ্মে ছাপ দিতে বলেন তিনি। ঘাসফুলে থেকে এরা আসলে পদ্মফুলের কাজ  করছিলেন। যার ফলও পাওয়া গিয়েছে লোকসভা নির্বাচনে। মুকুল রায়ের এই দাবি যে অমূলক নয়, তা বীজপুরের এক তৃণমূলে নেতার কর্মকাণ্ডেই প্রকাশিত। বার বার দলের সঙ্গে সংঘাত হলেও দীনেশ ত্রিবেদীকে বিপুল ভোটে জেতানোর আশ্বাস দেন তিনি।  কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, ব্যারাকপুরের বিজেপির পার্থী অর্জুন সিং জয়লাভ করেছেন। এমনকী এই ফলের পরই দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি ও তার অনুগামীরা। 

এরকম একটা ঘটনা নয়, বহু ঘটনার সাক্ষী থেকেছে বঙ্গ রাজনীতি। লোকসভা নির্বাচনের আগে দিল্লির এক বিজেপি নেতার মুখেও ছিল এই কথা,'শাসকদের পয়সায় খাও। কিন্তু ভোটটা বিজেপিকে দাও।' দলে নতুন করে এই পরিস্থিতি নিয়েই চিন্তায় পড়েছে টিম পিকে। সূত্রের খবর, ইতিমধ্য়েই বিজেপিতে ভাঙনের খবর খাওয়ানো হচ্ছে রাজ্য়ের সাংবাদিকদের।  'তৃণমূলপন্থী' কিছু সাংবাদিক রোজই দিলীপ-মুকুল ব্রিগেডের সংঘাত নিয়ে খবর করে চলেছেন। 

তৃণমূল থেকে আসায় বিজেপিতে মুকুলকে কর্তৃত্ব করতে দেবেন না, এটাই দিলীপ ঘোষের স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হওয়া উচিত। কিন্তু দিলীপবাবুও জানেন, রাজ্য় বিজেপিকে শক্তিশালী করতে মুকুল একটা বড় কার্ড। দীর্ঘদিন দলের 'সেকেন্ড  ইন কমান্ড' থাকার কারণে তৃণমূল ভাঙানো তার কাছে অতি সহজ কাজ। তাই এই ধরনের খবরে ঘি ঢালছেন না কেউ। উল্টে মুকুল নিজেই জানিয়েছেন, 'তৃণমূলে ফিরছি না'। একই ভাবে দিলীপের মুখেও শোনা গিয়েছে, 'দলে কোনও বিভাজন নেই'-এর মতো কথা।  

এরই মধ্য়ে দিদির রক্তচাপ বাড়াচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী। শোনা যাচ্ছে, দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে আনার পরও রাজ্য়  রাজনীতির জল মাপছেন শুভেন্দু। দলের রদবদলের পর কদিন আগেই প্রথম বৈঠক ছিল তৃণমূলের কোঅর্ডিনেশন কমিটির। কিন্তু সেই বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। পরিবহণ মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের দাবি, দলে যোগ্য সম্মান পাননি শুভেন্দু। যার ফল আগামী বিধানসভা নির্বাচনে পড়তে বাধ্য। 

এমনিতেই রাজ্য়ের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাকফুটে রাজ্য়। গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো যন্ত্রণা দিচ্ছে আমফান দুর্নীতি। পাল্টা বিজেপির দৌলতে 'চাল চোর' অভিযোগ শুনতে হচ্ছে দলকে। সঙ্গে দশ বছরের প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়া। সব মিলিয়ে বিধানসভা নির্বাচনের আগে পিকে-র পরিকল্পনা বিশ্বস্ত  নেতাদের মধ্য়েই রাখতে চাইছেন নেত্রী।  সেক্ষেত্রে 'হাতে ঘাসফুল-মনে পদ্মফুল' আঁকা নেতাদের আগে ভাগেই বিদায় দিতে চাইছেন তিনি।   
 

Share this article
click me!

Latest Videos

'এটা কোন মুখ্যমন্ত্রী? হিন্দুদের দায়িত্ব মুসলিমরা নেবে, বাংলাদেশ হয়ে যাবে তো' | Suvendu Adhikari
রাগের মাথায় এ কী করে বসলো স্বামী! দেখলে আঁতকে উঠবেন, চাঞ্চল্য Nadia-এ | North 4 Parganas News Today
সুকান্ত মজুমদারকে বিজেপির নবজাতক আখ্যা কুণালের, পাল্টা দিয়ে যা বললেন সুকান্ত : Sukanta on Kunal
নেতাজির 'মৃত্যুদিন' ঘোষণা রাহুলের, ক্ষোভ উগরে একহাত নিলেন সুকান্ত মজুমদার | Sukanta on Rahul
‘Mamata Banerjee আর Modi দুজনেই ‘বিভাজনের রাজনীতি করছেন’ বিস্ফোরক মন্তব্য Adhir Ranjan Chowdhury