প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এনআরসি এবং নাগরিকত্ব আইন প্রত্যাহার করার দাবি জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে রাজ্যের বকেয়া প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন মমতা।
এ দিন বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ কলকাতায় এসে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারে তিনি আসেন রেসকোর্সে। সেখান থেকে সড়কপথে পৌঁছন রাজভবনে। প্রধানমন্ত্রী কলকাতায় এলে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক হতে পারে বলে আগেই সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। সেই সম্ভাবনাকে সত্যি করেই এ দিন প্রধানমন্ত্রী আসার আগেই রাজভবনে পৌঁছন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগতও জানান তিনি।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক সেরেই ধর্মতলার বিক্ষোভে,ভারসাম্যের রাজনীতি মমতার
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরনোর সময় মুখ্যমন্ত্রী রাজভবনে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানানোটা আমার সাংবিধানিক দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। বিমানবন্দরেও একজন মন্ত্রীকে পাঠানোটা রীতি। এখানে আমি দেখা করলাম কারণ ৫৪ হাজার কোটি টাকা ঋণশোধ করার পরেও আমার রাজ্যের ২৮ হাজার কোটি টাকা পাওনা আছে। ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জন্য সাত হাজার কোটি টাকা পাওনা আছে। এই দুটো নিয়েই প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। আমাদের যেটা দাবি, আমাদের প্রাপ্য যাতে মিটিয়ে দেওয়া হয় সেটা আমি ওনাকে বলেছি। '
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'ওনাকে আমি বলেছি আপনি আমাদের অতিথি। কিন্তু নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি নিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। আমি বলছি যে আমরা এনপিআর, এনআরসি এবং সিএএ-র বিরুদ্ধে। মানুষে মানুষে বৈষম্য হওয়া উচিত নয়। কোনও মানুষকে যাতে দেশ থেকে তাড়ানো না হয় এবং কারও উপরে যাতে অত্যাচার না হয়, এটা দেখুন। সিএএ এবং এনআরসি নিয়ে আপনারা ভাবনাচিন্তা করুন। এবং এটা যাতে প্রত্যাহার করা হয়, সেটা দেখুন।'
মমতা জানিয়েছেন, রাজ্যের আর্থিক দাবির বিষয়টি চিঠিপত্র খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। আর নাগরিকত্ব আইন, এনআরসি এবং এনপিআর নিয়ে দিল্লিতে গেলে তাঁদের মধ্যে কথা হতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর।
যদিও মমতা- মোদীর এই সাক্ষাৎকে কটাক্ষ করে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, 'শীতকালে যাত্রার বাজার জমে যায়। পদ ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী যাত্রায় নাম লেখান। এনআরসি, সিএএ নিয়ে কথা বলতে গেলে দিল্লি যেতে হবে কেন, রাজভবনে বলা যায় না? আর আর্থিক দাবি নিয়ে কথা বলতে গেলে সঙ্গে কেন অর্থমন্ত্রী বা অর্থসচিবকে নিয়ে গেলেন না কেন? এসব কি একান্ত আলোচনায় বলার বিষয়?'