বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য়ে বাড়ছে ভুয়ো খবরের সংখ্যা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মমতার সরকারের বিরুদ্ধে বিষদ্গার করা হচ্ছে খবরে। যার ফলে চিন্তায় ঘুম ছুটেছে তৃণমূল নেত্রীর। তড়িঘড়ি ভুয়ো খবরের প্রচারকদের ধরতে কড়া হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সাইবার সেলকে।
দুর্গাপুজো নিয়ে ভুয়ো খবরের রেশ কাটেনি এখনও। ফের শুরু হয়েছে আসানসোল পুরনিগম নিয়ে আরও একটি মিথ্য়ে খবর। দুই খবরের নিশানাতেই রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। যার ফলে অস্বস্তি বেড়েছে ঘাসফুল ব্রিগেডে। কালীঘাটে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে,বিরোধীদের আইটি সেল থেকে এই ধরনের ভুয়ো খবরে সজাগ দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে দলের নেতা কর্মীদের।
করোনা আবহে দুর্গাপুজো নিয়ে এমনিতেই আশঙ্কার অন্ত নেই। নতুন করে মুখ্যমন্ত্রীর চিন্তা বাড়িয়েছে দুর্গা পুজো নিয়ে হোওয়াটস অ্য়াপ মেসেজ। সম্প্রতি হোওয়াটস অ্য়াপে ঘুরে বেড়াচ্ছে দুর্গাপুজো নিয়ে কিছু মেসেজ। যেখানে বলা হয়েছে, এ বছর রাজ্য়ে দুর্গা পুজোয় রাত জেগে আর ঠাকুর দেখা যাবে না। কারণ রাজ্য় সরকারের তরফে বিকেল পাঁচটার পর নাইট করাফিউ জারি করা হবে। পঞ্চমী থেকে একাদশী পর্যন্ত বিকেল থেকে সকাল চারটে পর্যন্ত জারি থাকবে এই কারফিউ। তার মানে পুজো হলেও উৎসবে ঘরেই কাটাতে হবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সৌজন্যে।
এখানেই শেষ নয়। করোনা পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে মণ্ডপে পাঁচজনের বেশি ঢোকা যাবে না বলে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। অঞ্জলিতে থাকছে নিষেধাজ্ঞা। ফুলের বদলে করজোড়ে দিতে হবে অঞ্জলি। মণ্ডপে ঢোকার ক্ষেত্রে করোনার উপসর্গ দেখা দিলে করোনা টেস্ট দিতে হবে সঙ্গে সঙ্গে। যা দেখেই রাগে অগ্নিশর্মা হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। সোশ্য়াল মিডিয়ায় দুর্গা পুজো নিয়ে ভুয়ো খবর রুখতে পুলিশকে কড়া ব্যবস্থা নিতে বলেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।
এখানেই শেষ হয়নি ভুয়ো খবরের সংখ্যা। পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোল শহরটি একেবারেই ঝাড়খণ্ড লাগোয়া। শহরে আবাঙালি বা হিন্দিভাষী মানুষের সংখ্যাও নেহাতই কম নয়। কিন্তু তা বলে পুরনিগমের সাইনবোর্ডে স্থান পাবে না বাংলা ভাষা! সোশ্য়াল মিডিয়ায় ছবি ভাইরাল হতেই জমে ওঠে বিতর্ক। ছবিতে স্পষ্ট দেখা দিয়েছে, পুরনিগমের সাইন বোর্ডে সবার ওপরে রয়েছে ইংরেজি, মাঝে উর্দু এবং সবশেষে হিন্দি! এই ইস্যুতে হাতিয়ার করে সুর চড়িয়েছে বিজেপি।
এই খবর প্রকাশ্য়ে আসতেই পুরনিগমের মূল ভবনে লাগানো সাইনবোর্ডের সম্পূর্ণ ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে দেন আসানসোল শহরের বাসিন্দারাই। দেখা যায়, সাইন বোর্ডে বড় বড় হরফে জ্বলজ্বল করছে বাংলায় 'আসানসোল পুরনিগম' লেখাটি। আর তার ঠিক নীচে রয়েছে ইংরেজি, উর্দু ও হিন্দি ভাষার বোর্ডটি। এরপর আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি অভিযোগে ভিত্তিত তদন্তে নামে পুলিশ। অবশেষে ধরা পড়েছে অভিযুক্ত।
রাজ্য় রাজনৈতিক মহল বলছে, অতীতে লোকসভা নির্বাচনের আগেও এরকম প্রায় ১৫০-রও বেশি ভুযো খবর ঘুরে বেড়িয়েছে সোশ্য়াল মিডিয়ায়। যার ফল ভুগতে হয়েছে তৃণমূল নেত্রীকে। এবার তাই আগেভাগেই সতর্ক হচ্ছেন দলনেত্রী। সজাগ থাকতে বলা হয়েছে প্রশাসনকেও।