বিনা প্ররোচনায় যাত্রীকে মারধর, গালিগালাজ আরপিএফ কর্মীর। আর এই অভিযোগেই সোমবার সন্ধ্যায় উত্তেজনা ছড়াল কালীঘাট মেট্রো স্টেশনে। যাত্রীদের পাল্টা বিক্ষোভে পরিস্থিতি সামাল দিতে ছুটে আসতে হয় মেট্রো রেলের আধিকারিকদের। শেষ পর্যন্ত যথাযথ তদন্তের আশ্বাস দিয়ে অভিযুক্ত আরপিএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ গ্রহণ করার পরে শান্ত হন যাত্রীরা।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার সন্ধ্যায়। এক মহিলা যাত্রী কর্তব্যরত দুই আরপিএফ জওয়ানের কাছে গিয়ে অভিযোগ করে বলেন, এক যুবক অনুমতি না নিয়েই তাঁর ছবি তুলেছেন। সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবককে কর্তব্যরত আরপিএফ জওয়ান আটক করেন। কিন্তু সিজার মিশ্র যুবকের ফোন পরীক্ষা করে অভিযোগের স্বপক্ষে কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই অভিযোগকারী মহিলাও নিজের ভুল বুঝতে পেরে লিখিতভাবে নিজের অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেন।
অভিযোগ, তার পরেও ওই যুবককে ছাড়েননি কর্তব্যরত এক আরপিএফ জওয়ান। ভিন রাজ্যের বাসিন্দা ওই আরপিএফ জওয়ান উল্টে যুবককে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ওই যুবকের অভিযোগ, অভিযুক্ত জওয়ান তাঁকে হুমকি দিয়ে বলেন, 'এমন কেস দেব যে ষোল বছর জেলে থাকতে হবে।' গালিগালাজ এবং মারধর করতে করতে তাঁকে স্টেশন মাস্টারের ঘরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ ওই যুবকের।
এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই কালীঘাট স্টেশনে হাজির হয় 'বাংলা পক্ষ' নামে একটি সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়ে ওঠে। আরপিএফ জওয়ানের আচরণের বিরুদ্ধে স্টেশনেই শুরু হয় বিক্ষোভ। তাতে যোগ দেন অন্যান্য যাত্রীরাও। 'বাংলা পক্ষ' নামে ওই সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হয়, ইচ্ছাকৃতভাবে বাঙালি যুবককে হেনস্থা করেছে ভিন রাজ্যে থেকে আসা ওই জওয়ান। অভিযুক্ত আরপিএফ জওয়ানকে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবিতে চলতে থাকে বিক্ষোভ। সংগঠনের তরফে আরও দাবি করা হয়, কলকাতা এবং বাংলায় আরপিএফ-এ শুধু বাঙালিদেরই রাখতে হবে। অভিযুক্ত আরপিএফ জওয়ান রাজেশ কুমার মিনার নামে কালীঘাট থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়েছে।
চাপে পড়ে পিছু হটে মেট্রো কর্তৃপক্ষও। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় অভিযুক্ত জওয়ানকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন মেট্রো আধিকারিকরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কালীঘাট থানার পুলিশ। নিগৃহীত যাত্রীর সঙ্গে কথা বলেন মেট্রো কর্তারা। আরপিএফ জওয়ানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবক। এর পরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে এই ঘটনার জন্য মেট্রো চলাচল ব্যাহত হয়নি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে মেট্রো রেলের জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, কালীঘাট থানায় যেহেতু অভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাই পুলিশই এ বিষয়ে তদন্ত করবে। মেট্রো রেলের পক্ষ থেকে আলাদা করে কোনও তদন্ত হওয়ার খবর তাঁর কাছে নেই।