সল্টলেকের বাড়িতে এসি-র তার চুরিতে ঘাম ছুটল বাসিন্দাদের। এহেন শহরের তীব্র তাপপ্রবাহে এসির কপার পাইপ ও তার চুরি করে সল্টলেকবাসীকে চরম ভোগান্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে চোর।
সল্টলেকের বাড়িতে এসি-র তার চুরিতে ঘাম ছুটল বাসিন্দাদের। একেই এপ্রিলের তীব্র দাবদাহ। তার উপর এসিতে রাত কাটালে হঠাৎ এসি বন্ধ, স্বাভাবিকভাবে জ্বালা ধরানো গরমে আরও বেশি আকাশ অন্ধকার করে আনে। এহেন শহরের তীব্র তাপপ্রবাহে এসির কপার পাইপ ও তার চুরি করে সল্টলেকবাসীকে চরম ভোগান্তির মুখে ঠেলে দিয়েছে একদল চোর। তাই শীততাপযন্ত্র ঘরে ভিতরে থাকলেও অবলার মতোই এই মুহূর্তে তাঁকিয়ে আছে। ভয়াবহ গরমে সল্টলেকের বিএ ব্লকের ৬ টি বাড়িতে চুরির ঘটনাটি ঘটেছে। তবে এহেন গরমে এসির কানেকশন উড়ে গেলে, কারই বা মাথা ঠিক থাকে। ব্যাস আর কি, ভয়াবহ গরমে আওয়াজ শুনে নড়েচড়ে বসে সল্টলেকবাসী। শেষ অবধি ধাওয়া করে হাতেনাতে ধরে ফেলে এক কিশোরকে।
ফাঁটা গরমে যদিও অমানবিক হননি সল্টলেকবাসী।ওই কিশোরকে এরপরে পুলিশের হাতে তুলে দেন এলাকার ক্ষিপ্ত বাসিন্দারা। ওই কিশোরের থেকে দুই বস্তা তামার তার উদ্ধার করা হয়েছে। দোয়েল ভট্টাচার্য নামের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, 'আমি তখন ঘুমোচ্ছিলাম। আচমকা আওয়াজে আমার ঘুম ভেঙে যায়। হঠাৎ দেখি গরম লাগতে শুরু করেছে। এসি থেকে বেরোচ্ছে গরম হাওয়া। সন্দেহ হতেই জানলা খুলি আমি। তারপরেই দেখলাম বাইরে অনেকে ঘোরাঘুরি করছে। বেশ ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।' পাশাপাশি বিএ ৫৮ এর বাসিন্দা সোমা মিত্র বলেছেন, 'আমাদের তিনটে এশি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। কারণ চোর দুটি থেকে তামার তার চুরি করেছে। একটি থেকে গ্যাস লিক করেছে।' এদিকে এসির টেকনিশায়ানরাও খুব ব্যাস্ত।যার দরুণ এখন সল্টলেকবাসীর এই পরিবার গুলির সবমিলিয়ে এখন ঘোর দুর্ভোগ। বিএ ব্লক অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি অরুণাভ দাস বলেছেন,' এখন একটা করে বাড়ির কলে সময় দিতে কমপক্ষ ৫ দিনের গ্যাপ লাগবে।'
আরও পড়ুন, কলকাতার পূর্বালোকে তীব্র গরমে রাস্তায় পড়ে মৃত্য়ু যুবকের, পরিবারের খোঁজে পুলিশ
প্রসঙ্গত, রাজ্যে তীব্র দাবদাহে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। অনেকেই বেলা এগারোটা থেকে ৪ টের মধ্যে বাইরে থাকলে অসুস্থ অনুভব করছেন। ইতিমধ্য়েই শহরে প্রচন্ড তাপে এক ছাত্রী সহ এক যুবকের মৃত্যুও হয়েছে। কচি-কাঁচারা স্কুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ায়, ইতিমধ্যেই স্কুলে গরমের ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। এহেন পরিস্থিতি থেকে এখনই বিরাম নেই। দাবদাহের দাপটের সম্ভাবনা রয়েছে। উল্লেখ্য, এই সময় অন্য বছরগুলিতে তিন থেকে চারটি কালবৈশাখী হয়ে যায়। কিন্তু, এবছর এখনও পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গে একটিও কালবৈশাখী হয়নি। বিগত অনেকদিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। শীতের সময় উত্তরবঙ্গের থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বেশি হয়েছিল। কিন্তু, তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষবারের মতন বৃষ্টি হয় দক্ষিণবঙ্গে। তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন, 'তীব্র গরমে ক্লাসে মাস্ক পরা খুব কষ্টের', স্কুল ছুটির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেন শিক্ষকরা
আরও পড়ুন, অপেক্ষা শেষ, আজ থেকেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ঝড়-বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি