কলকাতার সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনার সড়ক পথে যোগাযোগ আগামী দিনে পড়তে চলেছে বেশ সঙ্কটে। এই দুই জেলাকে যুক্ত করে অন্যতম রাস্তা বিটি রোডের ওপর থাকা টালা ব্রিজের অবস্থা এতটাই খারাপ যে তা ভেঙে ফেলার প্রস্তাব দিল রাইটস। এই বিষয়ে শুক্রবার জরুরী বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ইতিমধ্যে টালা ব্রিজে ভারী যান চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলবে শুধু ছোট গাড়ি। পুজোর আগেই টালা ব্রিজে হাইটবার বসানো হবে। ঘুরপথে চালানো হবে বাস।
উত্তর শহরতলীর সঙ্গে সড়ক পথে কলকাতার সংযোগ স্থাপনের অন্যতম মাধ্যমই হল টালা ব্রিজ। কিন্তু মোটেই ভাল নেই ব্রিজের অবস্থা। তাই ভেঙে ফেলতে হবে ব্রিজের দুর্বল অংশ। রাজ্য প্রশাসনকে এমন সুপারিশই করেছে বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস। ফলে আগামী দিনে কলকাতা শহরের সঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সড়ক পথে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হতে চলেছে।
গত বছর পুজোর আগে মাঝেরহাট ব্রিজ ভেঙে পড়ার পর থেকেই তৎপর প্রশাসন। শহর জুড়ে একের পর এক গুপুত্বপূর্ণ ব্রিজের চলছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা। সম্প্রতি টালা ব্রিজ নিয়ে রিপোর্ট দিয়েছে বিশেষজ্ঞ সংস্থা রাইটস। তাতে বলা হয়েছে, বিটি রোডের ওপর থাকা টালা ব্রিজের অবস্থা এতটাই খারাপ যে তা ভেঙে ফেলতে হবে। সূত্রের খবর, রাইটসের সুপারিশের পরেও অবশ্য আরও একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থার পরামর্শ নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। তবে বৃহত্তর কলকাতার সঙ্গে মূল কলকাতার সংযোগকারী এই ব্রিজের একটা অংশ ভাঙার কাজ শুরু হলে শহরে প্রবল যানজট তৈরির আশঙ্কা থাকছে।
ব্রিজের নীচে থাকা প্রায় ৫০০ বস্তির বাসিন্দদের ইতিমধ্যে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। টালা ব্রিজে গাড়ি চলবে কি না তা খতিয়ে দেখতে বুধবার পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাইটস ছাড়াও গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স, রেল ও পূর্ত দফতরের আধিকারিকরা। এর পরেই রিপোর্ট দেওয়া হয় নবান্নে। রিপোর্টে ব্রিজের ভারবহন ক্ষমতা কমেছে বলে উল্লেখ রয়েছে। তাইজন্য হাইটবার বসানোর পরামর্শ দেওয়া হয়।
এদিকে ব্রিজ ভাঙা হলে নতুন ব্রিজ কোথায় হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। নতুন ব্রিজ বানাতে সময় লাগবে প্রায় তিন বছর। এই সময় কোন বিকল্প পথে গাড়ি চালান হবে তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে। সেক্ষেত্রে বিটি রোড দিয়ে টালা ব্রিজ মারফত যে গাড়িগুলি শ্যামবাজার বা বাগবাজারে আসে, তাদের জন্য বিকল্প পথের ব্যবস্থা করতে হবে প্রশাসনকে৷ এদিকে টালা ব্রিজ বন্ধ হলে বালির বিবেকানন্দ সেতু দিয়ে ডানলপ হয়ে কলকাতা শহরে পণ্যবাহী যান ঢোকার পথও বন্ধ হবে। ব্রিজের অবস্থা বিবেচনা করে ২৬ লক্ষ টাকা খরচ করে ব্রিজে বসতে চলেছে ৮ ফুট উঁচু হাইট বার। এই হাইট বারের নীচ দিয়ে শুধুমাত্র ছোট গাড়ি যেতে পারবে। ফলত টালা ব্রিজে বাস চলাচল বন্ধ করা হচ্ছে।