দেড় বছর কেটে গেছে। অথচ নারদ স্টিং-কান্ডে ম্যাথুর আইফোনের রিপোর্ট আমেরিকা থেকে এসে পৌঁছয়নি সিবিআই এর হাতে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার আইনজীবীর মুখে বৃহস্পতিবার একথা শুনে রীতিমতো বিস্মিত কলকাতা হাইকোর্ট। যার জেরে অস্বস্তিতে পড়ে যান সিবিআইয়ের আইনজীবী। পরিস্থিতি বুঝে ফোনের রিপোর্ট পেতে সংস্থা কী ব্য়বস্থা নিয়েছে তা শোনাতে যায় সিবিআই। যা শুনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি। সিবিআই-এর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা(সিবিআই) কী কী করেছেন এখন আর তা শুনতে চাইছি না।
নারদ স্টিং অপারেশনে ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে রাজ্যের শাসকদলের কয়েকজন মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক ছাড়াও আইপিএস অফিসারের ফুটেজ সংগ্রহ করেন ম্যাথু স্য়ামুয়েল। সেই স্টিং ফুটেজেই ধরা পড়ে শাসক দলের নেতা মন্ত্রীদের টাকা নেওয়ার দৃশ্য। ম্যাথুর আইফোনের মাধ্যমে দৃশ্যগুলির রেকর্ডিং হয়েছিল। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই তদন্তভার হাতে নেবার পর ম্যাথুর আইফোন আমেরিকায় পাঠানো হয় ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য। আদৌ ম্যাথুর আইফোন থেকেই ভিডিও রেকর্ডিং হয়েছিল কিনা তা জানতেই আমেরিকায় পাঠানো হয় ফোন। কিন্তু দেড় বছর কেটে গেলেও সেই রিপোর্ট এখনও সিবিআই এর হাতে আসেনি।
নারদা স্টিং ফুটেজে তৃণমূলের অন্যান্য কয়েকজন সাংসদ, বিধায়কের পাশাপাশি সাংসদ অপরূপা পোদ্দার এবং কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র ইকবাল আহমেদকেও টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল। সিবিআই-এর এফআইআরে অপরূপা, ইকবালের নাম রয়েছে। তারা এফআইআর থেকে নাম খারিজের জন্য কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
বৃহস্পতিবারের আগে বেশ কয়েকবার শুনানি হয়েছে। প্রত্যেক শুনানিতেই সিবিআই জানিয়েছে, আমেরিকা থেকে এখনও রিপোর্ট আসেনি। ফলে আদালতও এর আগে বেশ কয়েকবার শুনানি স্থগিত রেখেছে। কিন্তু এদিন ফের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির এজলাসে সিবিআই এর আইনজীবী অমাজিৎ দে ওই একই কথা বলেন, আমেরিকা থেকে এখনও রিপোর্ট এসে পৌঁছয়নি। তবে স্টিং ফুটেজে থাকা চারজন সাংসদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে লোকসভার স্পিকারের কাছে অনুমতি চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু সেই ছাড়পত্রও এখনও মেলেনি। দেড় বছরেও রিপোর্ট না মেলায় বিচারপতি বলেন, আপনারা কী কী করেছেন এখন আর তা শুনতে চাইছি না। এর ফল কিীহচ্ছে এখন সেটাই লক্ষ্য।
নারদ কাণ্ডে ইতিমধ্যেই অপরূপা পোদ্দার, ইকবাল আহমেদ ছাড়াও মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও নারদ এফআইআর থেকে নাম খারিজের জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছেন। শুভেন্দুর শুনানির আবেদন আদালত গ্রহণ করেছে। মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে হাইকোর্টের শীতকালীন ছুটির পর।