মঙ্গলবার বিকেল চারটেয় মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভা খড়্গপুরের ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে ,করোনা আবহে পরিবর্তন প্রবেশের অনুমতি পদ্ধতি ৷ এবার মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে প্রবেশ করতে হলে গলাতে ঝোলানো থাকতে হবে করোনা নেগেটিভ সংশাপত্র,যেখানে থাকবে মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিকের স্বাক্ষর ৷ নির্দিষ্ট ফাঁক রেখে সভা হলে স্থান দেওয়া কারনে অনেক আধিকারিকই সভাতে স্থান পাবেন না ৷ ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ নেবেন ৷
প্রবেশে অনুমতি নিতে গিয়ে ইতিমধ্যেই করোনা পজিটিভ হয়ে বাতিল হয়েছেন ভাতা প্রাপকের লাইনে থাকা এক পুরোহিতও ৷ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায় -মুখ্যমন্ত্রীর সভার মঞ্চে ও ডি জোনে যারা থাকবেন তাদের সকলের জন্য করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে ৷ প্রায় ১৫০ জনের পরীক্ষা হয়েছে , বাকি কিছু লোকের হবে সভাস্থালে প্রবেশের আগে ৷
কঠোরভাবে করোনাবিধি মানা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক সভাকে ঘিরে। সভাকক্ষে ঢোকার অনুমতিও পাচ্ছেন না অনেক আধিকারিকও। লাইন দফতরের আধিকারিকরা সকলে ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দেবেন। এদিন দুই পুরোহিত মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে ভাতার চেক হাতে নিতেন। কিন্তু তাদের একজনের করোনা পজিটিভ হয়ে যাওয়ায় চুড়ান্ত সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। গত রবিবারই দুই পুরোহিতের করোনা পরিক্ষা করা হয়। ফলে এখন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে একজনেরই চেক নেওয়ার কথা আছে। আবার মাইকম্যান, ফাইফরমাশ খাটার লোকজন থেকে শুরু করে আধিকারিক, প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রীর কাছাকাছি যারা থাকবেন তাদের প্রায় শতাধিক ব্যক্তির করোনা পরিক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।
সোমবার রাতে তাদের রিপোর্ট আসার কথা আছে। যদি কারও পজিটিভ রিপোর্ট আসে তাকে সভাস্থলের ধারেকাছেই ঘেঁষতে দেওয়া হবে না। আবার এর বাইরে যারা সভাকক্ষে ঢুকবেন তাদেরকেও অ্যান্টিজেন টেষ্টের মাধ্যমে হলে প্রবেশ করতে হবে। অ্যান্টিজেন টেষ্টের পর মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের স্বাক্ষর করা নেগেটিভ সার্টিফিকেটের ব্যাচ গলায় ঝুলিয়ে তবেই ভেতরে ঢোকার অনুমতি পাবেন মন্ত্রী, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে আধিকারিকরা। ঢোকার মুখে থাকছে ফুট অপারেটেড স্যানিটাইজ মেশিনও। এখানেই শেষ নয়। ভেতরে যারা ঢুকবেন তাদের প্রত্যেককে একটি করে কিট ধরিয়ে দেওয়া হবে। যার মধ্যে ফেস শিল্ড, মাস্ক, একজোড়া গ্লাভস থেকে শুরু করে ১০০ মিলিলিটারের একটি করে স্যানিটাইজারের বোতলও থাকছে।
সভাকক্ষে কারা কারা ঢুকতে পারবেন তার তালিকাও তৈরি করে ফেলা হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে যে সভাকক্ষের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কলকাতা থেকে আসা মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, রাজ্য পুলিশের ডিজি ছাড়া মাত্র চারজন সচিব পর্যায়ের আমলা থাকছেন। জেলার মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়কদের পাশাপাশি জেলা পরিষদের সভাধিপতি, সহ সভাধিপতি ও কর্মাধ্যক্ষরা থাকবেন। থাকছেন জেলা পরিষদের মেন্টরও। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরাও সভাকক্ষে ঢোকার অনুমতি পেয়েছেন। জেলাস্তরের আমলাদের মধ্যে জেলাশাসক, ৪ জন অতিরিক্ত জেলাশাসক, ৩ জন মহকুমাশাসক, ২১ জন বিডিও থাকছেন।
থাকছেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকও। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে থাকছেন আইজি, ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ২ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ২৩ জন ওসি এবং আইসি। বাকীরা সব থাকছেন ভার্চুয়াল সভায়। সেখানে ৫৮ জন লাইন বিভাগের আধিকারিক, ১০ জন ডিএসপি এবং এসডিও, জেলা পরিষদের বাকী সদস্যরা, জেলার সাতটি পুরসভার চেয়ারম্যান অথবা প্রশাসক থাকছেন ওই সভায়। জেলাপর্যায়ের আধিকারিকরা জেলা কালেক্টরেটের কনফারেন্স হলে এবং বাকীরা সংশ্লিষ্ট মহকুমা শাসকের অফিস থেকে ওই ভার্চুয়াল বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। করোনা সতর্কতায় কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না প্রশাসন।