শাজাহান আলি,মেদিনীপুর: পরকীয়া সম্পর্কে বাধা দেওয়ার মাশুল। ভরদুপুরে নিজের বাড়িতে বউমা ও তার প্রেমিকের হাতে খুন হয়ে গেলেন শ্বাশুড়ি। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে দাসপুরে প্রৌঢ়া খুনের কিনারা করে ফেলল পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে দুই অভিযুক্তকেও।
আরও পড়ুন: উত্তর দিনাজপুর পুলিশের অভিযান, ভিনরাজ্যে পাচারের আগেই উদ্ধার ভেজাল মদ
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের হুসেনবাজার এলাকায় তিনতলা বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে-বউমা ও নাতনিকে নিয়ে থাকতেন নিমাই গোস্বামী। তাঁর একমাত্র ছেলে এলাকা থেকে কিছুটা দুরে একটি সমবায় সমিতিতে চাকরি করেন। তখন তিনি কর্মস্থলে ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছেন, দুপুরে যখন পুরোহিতের খোঁজ করেন নিমাইবাবু, তখন বউমা সৌমতা জানায় পুরোহিত আসবে না। এরপর তিনি নিজেই পুজো করতে ঠাকুরঘরে চলে যান। পুজো সেরে ঘরে ফিরে দেখেন, মেঝেতে পড়ে রয়েছে স্ত্রী মৌসুমীর গলা কাটা দেহ! গোটা ঘর তখন রক্তে ভেসে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, যে ঘরে মৃতদেহটি পড়ে ছিল, সেই ঘরে জিনিসপত্র লণ্ডভন্ড করা দেওয়া হয়েছিল। এমনকী, খোয়া গিয়েছে বেশ কয়েকটি সোনার গয়নাও। তাহলে কি ছিনতাইকে বাধা দিতে গিয়ে খুন হয়ে গেলেন ওই প্রৌঢ়া? তদন্তে নেমেছে মৃতার ছেলে ও বউমাকে দফায় দফায় জেরা করতে শুরু করে পুলিশ। জানা যায়, বাড়ির পুরোহিত গোরাচাঁদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ-বর্হিভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল মৃতার বউমা সৌমিতা। মাস ছয়েক আগে ঘটনাটি জেনে যায় মৌসুমীদেবী।
আরও পড়ুন: ভাটপাড়া সমবায় ব্য়াঙ্কে জালিয়াতি, গোয়েন্দাদের জালে অর্জুন সিংয়ের ভাইপো
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার সকালে শ্বশুরকে ঠাকুরঘরে পাঠিয়ে প্রথমে বালিশ চাপা দিয়েস শ্বাসরোধ করে মৌসুমীকে খুনের চেষ্টা করেন সৌমিতা ও গোরাচাঁদ। কিন্তু তাতে কাজ না হওয়ায় শেষপর্যন্ত হাঁসুয়ার কোপে ওই প্রৌঢ়ার গলার নলি কেটে দেওয়া হয়। এরপর হাঁসুয়াটি ফেলে দেওয়ার হয় বাড়ির সেপ্টিক ট্যাঙ্কে। কিন্তু ঘরের জিনিসপত্র লণ্ডভন্ড করা হয়েছিল কেন? ঘটনাটিকে ডাকাতি বলে সাজানোর জন্য একাজ করেছিল অভিযুক্তেরা। শেষরক্ষা আর হল না। অভিযুক্ত সৌমিতা গোস্বামী ও তার প্রেমিক গোরাচাঁদ মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। দোষীদের ফাঁসির দাবি তুলেছেন মৃতার ছেলে।