মহারাষ্ট্র থেকে বাসে করে ফেরার পথে ওড়িশাতে আবার এক স্বর্ণশিল্পীর মৃত্যু হল।মৃতের নাম কমল সেনাপতি(৪৩) , পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার রাজনগর এলাকার বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার পরিযায়ী শ্রমিক ভর্তি বাসটি ঘাটালে পৌঁছলে মৃতদেহ নামিয়ে প্রয়োজনীয় তদন্ত নিয়ে যায় স্বাস্থ্য দপ্তর। বাসের বাকি ৩০ যাত্রীকে পাঠানো হয় কোয়ারেন্টাইনে।
লকডাউনে আটকে পড়ে কোনও ভাবেই বাড়িতে আসতে পারছিলেন না কমল সেনাপতি।অবশেষে মহারাষ্ট্রে থাকা ঘাটাল মহকুমার বিভিন্ন পরিযায়ী শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বাস ভাড়া পাওয়ার পরে বাড়িতে ফিরছিলেন।২৬ মে ৩১ জন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ভাড়া করা বাসটি ঘাটালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। বাড়ি আসার পথে ওড়িশাতে অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই ব্যক্তি। দুপুর পর্যন্ত পরিবারের লোকের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে ওই ব্যক্তির।
মৃতের জামাইবাবু অশোক মাইতি বলেন- "দুপুরেই স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছিলেন ৷ বাড়িতে ফিরলে বাচ্চারা যাতে ছুঁয়ে না ফেলে তার জন্য বাচ্চাদের সরিয়ে রাখতে বলেছিলেন তিনি ৷ পরে ফোন জানতে পারি কমল অসুস্থ হয়েছে ৷ আমরা ফোনেই যে কোনো ভাবে অ্যাম্বুলেন্স করে পাঠাতে অনুরোধ করেছিলাম ৷ কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই শুনলাম মারা গিয়েছে বাসেই ৷" বুধবার বিকেলের পর ওড়িশাতে অসুস্থ বোধ করায় পথের মধ্যে একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর চেষ্টা করেন বাসের অন্যান্য যাত্রীরা।
কিন্তু মহারাষ্ট্র থেকে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিক হওয়ার জন্য ওড়িশার কেউই চিকিৎসা করতে রাজী হয়নি।বাস থেকে নামানোর সুযোগ পর্যন্ত দেয়নি বলে অভিযোগ।এই অবস্থায় বুধবার বিকেলে বাসের মধ্যেই মৃত্যু হয় কমল সেনাপতির ।বৃহস্পতিবার মৃতদেহ সহ পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে দাসপুরে পৌঁছয় ওই বাসটি।আগে থেকেই খবর পেয়ে দাসপুর থানার পুলিশ ও ঘাটাল মহকুমার পুলিশ আধিকারিকরা মৃতদেহ সমেত যাত্রীবোঝাই বাসটিকে নিয়ে আসেন ঘাটাল অরবিন্দ স্টেডিয়ামে।মৃতদেহটি নামিয়ে করোনা রয়েছে কিনা তা তদন্তের জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালে।
বাসের বাকি থাকা তিরিশ জন যাত্রীদের রাখা হয় অরবিন্দ স্টেডিয়ামে কোয়ারেন্টাইনে।প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ওই বাসের বেশ কয়েকজন যাত্রী রয়েছেন হুগলি জেলার। তাদের সকলকেই কোয়ারেন্টাইন করা হয়েছে। উল্লেখ্য,এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে মহারাষ্ট্র ফেরত দুজন দাসপুরের বাসিন্দা পরিযায়ী শ্রমিকের রাস্তাতেই মৃত্যু হল, বুধবার পিংলার বাসিন্দা আরো এক শ্রমিকের উড়িষ্যাতে বাসে আসার সময় মৃত্যু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার এর ঘটনা নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার তিনজন পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হলো রাস্তায় ফেরার পথে।যারা সকলেই মহারাষ্ট্র থেকে ফিরছিলেন বিভিন্ন ভাবে ৷