সীমান্তে প্রসব যন্ত্রণা পরিযায়ী শ্রমিকের, পুলিশের উদ্যোগে দাঁতন  হাসপাতালে জন্ম নিল শিশুকন্যা

  • যতটুকু উপার্জন হয়েছিল লকডাউনে ফুরিয়ে যায় তাও
  • এদিকে স্ত্রী নাজিরা বিবি এই সময় সন্তান সম্ভবা 
  • উপায়ান্তর না দেখে শেষমেশ বেরিয়ে পড়েন বাড়ির দিকে
  • গত দুদিন ধরে সেখানে আটকে পড়েন পুলিশি নাকায়

Asianet News Bangla | Published : May 27, 2020 2:30 PM IST

শাহজাহান আলি, পশ্চিম মেদিনীপুর : ভালো রোজগারের আশায় বেশ কয়েকমাস আগে অন্ধ্রপ্রদেশে রওনা দিয়েছিলেন পরিযায়ী দম্পতি।সেখানে ঠিকাদার সংস্থার মাধ্যমে জোটে কাজ। এরই মধ্যে গর্ভবতী হন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের বাসিন্দা ওইদুল আলি মোল্লার স্ত্রী নাজিরা বিবি। ভালোই চলছিল কাজকর্ম। হঠাৎই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে সারা দেশ জুড়ে শুরু হলো লকডাউন। বন্ধ সমস্ত কাজকর্ম। যতটুকু উপার্জন হয়েছিল লকডাউনে এই  দুমাসে ফুরিয়ে যায় তাও।এদিকে স্ত্রী নাজিরা বিবি আসন্ন প্রসবা।এমতাবস্থায় কোন উপায়ান্তর না দেখে শেষমেশ বেরিয়ে পড়েন বাড়ির উদ্দেশ্যে। ৬ জায়গায় ৬ বার গাড়ি বদলে শেষে এসে পৌছান বাংলা ওড়িশা সীমান্তে লক্ষ্মণনাথে।গত দুদিন ধরে সেখানে আটকে পড়েন পুলিশি নাকায়।

 দাঁতন থানা ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে আটকে পড়া সমস্ত শ্রমিকদের সাথে এই শ্রমিক দম্পতিরও লালা রসের নমুনা সংগ্রহ করে৷ মঙ্গলবার দুপুরে খাওয়ার পর বাসে করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ভাঙড়ের উদ্দেশ্যে রওনা করার উদ্যোগ নেয়।  এমন সময় প্রসব বেদনা ওঠে নাজিরা বিবির। বিষয়টি জানতে পেরে সাথে সাথে অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করে দাঁতন গ্রামীন হাসপাতালে পাঠান দাঁতন থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি সুব্রত মজুমদার। সেখানেই জন্ম হয় ফুটফুটে এক কন্যা সন্তান।দাঁতন থানার পুলিশের তৎপরতায় সুস্থ সবল মেয়েকে জন্ম দিতে পেরে খুশি নাজিরা বিবি। 

পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের এই সহমর্মিতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন পরিযায়ী শ্রমিক ওইদুল আলি মোল্লা। তার গলায় ঝরে পড়লো পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা। সন্ধ্যায় দাঁতন গ্রামীন হাসপাতালে এসে উপস্থিত হন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ ও খড়গপুরের মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরী। তাদের কে সামনে পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন ওইদুল। নিজের অভাবের কথাও শোনান।আর এই কথা শোনার পর পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয় দম্পতির হাতে।একইসঙ্গে সদ্যজাতের জন্যও তুলে দেওয়া হয় নানা সামগ্রী। মহকুমা শাসক আশ্বাস দেন হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই প্রশাসনের উদ্যোগে সদ্যজাত সহ দম্পতিকে পৌঁছে দেওয়া হবে তাদের বাড়ি। একইসাথে যাতে এই পরিবার সরকারি সুবিধা পেতে পারে তার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করা হবে।

মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরী জানান এই ধরনের কাজ করতে পেরে আনন্দিত জেলা প্রশাসন। দীর্ঘ দুমাস ধরে সীমান্তে কর্মরত প্রশাসনের সার্থকতা এই ধরনের ভালো কাজ করতে পেরে।ফুটফুটে কন্যা সন্তানকে কোলে নিয়ে বাংলা ওড়িশা সীমান্তের দাঁতন থেকে পুলিশ প্রশাসন সম্বন্ধে ভালো অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরলো এই পরিযায়ী শ্রমিক দম্পতি।

Share this article
click me!