ট্রেনে চাকায় কাটা পড়েছে হাত। স্টেশন চত্বরে রীতিমতো যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এক বৃদ্ধা। কিন্তু তাঁর দিকেই ফিরেও তাকাল নেই কেউ! অতি উৎসাহী কেউ কেউ আবার ব্যস্ত ছিলেন মোবাইলে ছবি তুলতে! শুক্রবার সকালে এমনই অমানবিক ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতায়। শেষপর্যন্ত রেলের উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দারা ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে যান হাসপাতালে।
ওই বৃদ্ধার নাম লক্ষ্মী হালদার। ঘরবাড়ি নেই, গড়বেতা স্টেশন চত্বরে ভিক্ষা করেন তিনি। শুক্রবার সাতসকালেই দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। স্টেশনে তখন একটি পণ্যবাহী ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। ট্রেনের তলা দিয়ে লাইন পেরোতে যান লক্ষ্মীরা। এদিকে ততক্ষণে ট্রেনটি চলতে শুরু করেছে। তড়িঘড়ি নিজেকে সরিয়ে নেন ওই বৃদ্ধা, কিন্ত ট্রেনের চাকায় কাটা যায় তাঁর হাতের কব্জি! কাটা হাত থেকে গলগল করে রক্ত বেরোচ্ছিল। স্টেশনে চত্বরে যন্ত্রণা কাতরাচ্ছিলেন লক্ষ্মী। কিন্তু যাত্রীদের সেদিকে হুঁশ ছিল না। কীভাবে দ্রুত গন্তব্য পৌঁছাবেন, তা নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন সকলেই। কেউ কেউ তো আবার গুরুতর জখম ওই বৃদ্ধার ছবি তুলছিলেন বলে জানা গিয়েছে। এভাবেই কেটে যায় ঘণ্টা খানেক। শেষপর্যন্ত গড়বেতা স্টেশনে কর্তব্যরত রেলপুলিশের কর্মীকে লক্ষ্মীকে উদ্ধার করে নিয়ে যান গড়বেতা হাসপাতালে। বেশ কয়েকজন যাত্রীই স্টেশন ম্যানেজারে অফিসে খবর দেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: আইআইটি থেকে গুম হয়ে যাওয়া কুকুরের হদিস, হিজলি ফরেস্টের রাস্তায় সার সার লাশ
যদিও দুর্ঘটনার পর লক্ষ্মী যে দীর্ঘক্ষণ স্টেশনে চত্বরেই যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন, তা মানতে চাননি গড়বে স্টেশনের ম্যানেজার তপন রায়। তিনি বক্তব্য, 'আমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওই মহিলাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি।' গড়বেতা হাসপাতাল থেকে ওই বৃদ্ধাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে।