বরষা তুমি ঝোড়ো না-কো এমন করে, এমন প্রার্থনা নিয়ে পুজোর ভিড়ে মেতে গড়িয়াহাট

  • আকাশে তখন ঘন কালো মেঘ
  • গড়িয়াহাট-এর ফুটপাথের বই-এর দোকানগুলি  প্লাস্টিকে ঢাকা 
  • পুরনো বাটিক-প্রিন্টের মধ্যেই নতুন নকশা-র চাদর
  • ববি-প্রিন্টের ছাতার তলায় তখনও প্রেম চলছে

debojyoti AN | Published : Sep 25, 2019 7:38 AM IST

আকাশে তখন ঘন কালো-মেঘ।গড়িয়াহাট-এর মোড়ের ফুটপাথের বই-এর দোকানদারগুলি মুখ ব্যাজার করে বইগুলিকে প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ছেন। বুক-পকেটের ছোট্ট রেডিও-তে তখন চলছে  মান্না দে-র গান - 'সবে যখন আকাশ জুড়ে মেঘ জমেছে..'। আর ফুটপাথের জামা-কাপড় জুতোর দোকান অবশ্য আগে থেকেই অস্থায়ী বাঁশের ছাওনি বানিয়ে রেখেছেন। তবু এত সব কিছুর পরও বর্ষা আটকানো গেল না। কিন্তু বর্ষাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে  ছাতা মাথায় দিয়ে দিব্যি এলেন একদল সুন্দরীরা ,পুজোর কেনাকাটি করতে। মুগ্ধ হলেন  ব্যবসায়ীরা । তবে সুন্দরীদের রূপে নয়, এই ভরা বর্ষাতেও খদ্দেরের দেখা পেয়ে খুশি তাঁরা। 

গড়িয়াহাটের ফুটপাথের চাদর ব্যবসায়ীরা এবার প্রচুর নতুন ধরনের চাদর-এর পসরা সাজিয়েছেন। পুরনো বাটিক-প্রিন্টের মধ্যেই নতুন ধরনের নকশা। জুতোর দোকানে ফ্ল্যাট আর পেন্সিল-হিলের নতুন আড়ম্বর। একটার পর একটা জুতো জোরে জোরে  বাড়ি মেরে দেখাচ্ছেন যে, এ জুতো কত না টেঁকসই। গয়নার দোকানেও বেশ ভিড় । টালিগঞ্জ থেকে এসেছিলেন প্রীতি সাউ। তাঁর পছন্দ লম্বা রঙ-বেরঙের ঝুমকো দুল। 

ঘর সাজাবার দোকানেও টুকটাক ভিড়। গড়িয়াহাট-এর ফুটপাতেও এমন একাধিক ঘর সাজাবার জিনিসের দোকান রয়েছে। পুজোর আগে এই সব দোকানে ভীড় উপচেও পড়ে। এমন এক দোকানে বৃষ্টির মধ্যে দেখা মিলল একগোছা প্লাস্টিক ফুলের। বৃষ্টির ছাঁট এসে সেগুলি যেনও আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল।  

অঝোরে তখনও বর্ষা পড়ছে। মন দিয়ে বেগুনি খাচ্ছেন মুচি-বাবুরা। আর হাতের তেলটা সোজা মুছে দিলেন কাস্টমারের জুতোতে। এতে বোধহয় জুতোটা আরও বেশি চকচকে হবে।   পুরো গড়িয়াহাট চত্বর তখন কাদা জলে কাই-কাই। যাদবপুরের এক গৃহবধূ ,আমাদের সংবাদমাধ্যম-কে নিজের পরিচয় দিলেন। নাম- সুস্মিতা সরকার ,বহু ব্যস্ততা নিয়েই তিনি এসেছেন পুজোর বাজার করতে । দুপুর গড়িয়ে তখন বিকেল হচ্ছে । তার মেয়ে  স্কুল থেকে ফিরবে আবার বয়স্ক শাশুড়ি বাড়িতে একা। তাই এক চিলতে হাসির মাঝেও কপালে চিন্তার ভাঁজ। তাহলে, কে বলেছে - এ যুগের মেয়েরা শাশুড়ির কথা ভাবেন না। আর ওদিকে, কমলা রঙের ববি প্রিন্টের ছাতার তলায় তখনও প্রেম চলছে। ছেলেটি এক হাতে পুজোর ব্যাগ ধরে, অন্য হাতে ছাতা। আর চাতক পাখির মতো তাকিয়ে আছে তার প্রেমিকার দিকে। প্রেম জেগেছে বলে মোটেই নয়,আইসক্রিমের এক কামড় পাবার আশায়।    


 

Share this article
click me!