Love Story, ৫০ বছর পর রাজস্থানের ভুতুড়ে গ্রামের বৃদ্ধ দারোয়ান ফিরে পেলেন তাঁর প্রেমিকাকে

  • সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল বৃদ্ধ দারোয়ানের প্রেম কাহিনি 
  • ৫০ বছর আগে রাজস্থানে লেখা হয়েছিল প্রেমকথা
  • দীর্ঘ দিন পরে যোগাযোগ প্রেমিকার সঙ্গে 
  • প্রেমিকার অপেক্ষায় দিন কাটছে ৮২র বৃদ্ধর 

Asianet News Bangla | Published : Apr 2, 2021 10:52 AM IST

প্রেম কখনও দেশ-কাল-সীমা মানে না-  শুধুই রোমান্টিক গল্পের জন্য এই ফর্মুলা প্রযোজ্য নয়। বাস্তাবেও তা হয়। তার আরও একবার প্রমান করলেন রাজস্থানের ভুতুড়ের গ্রামের দারওয়ান। এক বা দু বছর নয়। প্রায় ৫০টি বসন্তে পেরিয়ে পাতাঝরা দিনে এল তাঁর প্রেম পত্র। যা নিয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় একটি সোশ্যাল মিডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকালে তিনি ফিরে গেলেন তাঁর সেই মিষ্টি মধুর দিনগুলিতে। তিনি রাজস্থানের কুলকারার গ্রামের দারোয়ান  ৮২ বছরের দারোয়ান। 

সম্প্রতি হিউম্যান অব বোম্বে নামের একটি সোশ্যাল মিডিয়ায়  তাঁর আর ম্যারিনার ৫০ বছর আগের প্রেম কাহিনী প্রকাশিত হয়েছিল। যা নিমেষের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় নেটদুনিয়া। শত শত নেটিজেনরা অখ্যাত দারোয়ানের প্রেমকাহিনীতে মশগুল হয়ে যান। 

সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের ফিল্মি লাভস্টোরি বলার সময় ভুতুড়ে গ্রামের দারোয়ান বলেছিলেন, 'সালটা ছিল ১৯৭০। তখন সময়টা ছিল এমনই যখন প্রথম দেখাতেই প্রেম হয়ে যেত।সেই সময় জয়সালমেরে মেরিনা বেড়াতে এসেছিলেন। তিনি ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বাসিন্দা। আমরা পাঁচ দিন একসঙ্গে ছিলাম। সেই পাঁচ দিন আমার জীবন বদলে দিয়েছিল।' মেরিয়ার সঙ্গে সেই সময়েই তিনি প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলেও জানিয়েছেন বৃদ্ধ দারোয়ান। পাঁচ দিনের সফর শেষে মেরিয়া অস্ট্রেলিয়া ফিরে যায়। কিন্তু মেরিয়া অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগেই প্রেম নিবেদন করেন। 'আমি সেই সময় খুবই লাজুক ছিলাম। তাই নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে পারিনি। বলতে পারিনি আমিও তোমাকে ভালোবাসি। লজ্জায় লাল হয়ে গিয়েছিলেন। তখন আমার বয়স ছিল ১৯। মেরিয়ার সঙ্গে দিনরাত ঘুরে বেড়ালেও একে অপরের দিকে তাকাতেও পারতাম না। কিন্তু আমরা প্রথম দর্শনেই একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেছিলাম।'

বৃদ্ধার কথায় মেরিয়া অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার পরেও চিঠি মারফত তাদের যোগাযোগ ছিল। তিনিও অস্ট্রেলিয়া গিয়েছিলেন। তিন মাস সেখানে ছিলেন। সেটা ছিল তাঁর জীবনে ম্যাজিকের মত। মেরিনা তাঁকে ইংরেজি শিখিয়েছিল। আর মেরিনাকে তিনি ঘুমার শিখিয়েছিলেন। তাঁরা বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মেরিনা অস্ট্রেলিয়া ছেড়ে আসতে চায়নি। আর তাঁর পক্ষেও পরিবার ছেড়ে মেরিনার সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় বাস করা সম্ভব ছিল না বলেও জানিয়েছেন তিনি। সেইখানেই তাদের সম্পর্কে ছেদ পড়ে। 

দেশে ফিরে কুলধারার গ্রামে দারোয়ানের চাকরি নিয়েছিলেন। তারপর দেখতে দেখতে কেটে গেছে অনেক দিন। কোনও যোগাযোগ না থাকলেও প্রথম প্রেম মেরিনাকে তিনি এক দিনের জন্যেও ভুলে যাননি। বিয়ে করেছিলেন। সন্তানরা আজ অন্যত্র থাকে। আর তিনি এখনও ভুতুড়ে গ্রাম আগলে রয়েছেন। স্ত্রীও মারা গেছে বছর দুই হল। কিন্তু মাসখানেক আগে আসা একটা চিঠি তাঁর ৫০ বছরের জীবনে ওলটপালট করে দিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। ৮২র বৃদ্ধর কাছে মাসখানেক আগে অস্ট্রেলিয়া থেকে চিঠি আসে। সেই চিঠি লিখেছিল মেরিনা। 

মেরিনা লিখেছিল, 'কেমন আছো? তুমি আমার বন্ধু, ৫০ বছর পরে তোমাকে খুঁজে পেয়েছি। ' এতটা বলেই বৃদ্ধ থেমে গিয়েছিল। কিছু সময় পর তিনি জানিয়েছিলেন এখনও প্রতিদিন সে তাঁকে ডাকে। আমাদের মধ্যে এখনও সম্পর্ক রয়েছে। তিনি আরও বলেন মেরিনার এখনও বিয়ে করেনি। 'রামজির কমস চিঠি পাওয়ার পরে মনে হয়েছিল আমি যেন ২১ বছরের।' তারপরই তিনি বলেন তিনি জানেন না ভবিষ্যতে তাঁর জন্য কী অপেক্ষা করে আছে। কিন্তু এতদিন পরে নিজের প্রথম প্রেমকে ফিরে পেয়ে সত্যি অন্যরকম লাগছে । এখন তাঁরা প্রতিদিনই কথা বলেন। এটা সম্পূর্ণ অন্যরকম ভালোলাগা জড়িয়ে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। মেরিনা খুব তাড়াতাড়ি ভারতে আসবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। আর সেই জন্য মেরিনার অপেক্ষাই তাঁর দিন কাটছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

Share this article
click me!