ড্রাগন-মুখো সিংহ থেকে চাল-কুমড়ো বলি, প্রাচীণ ঐতিহ্য বহণ করে আজও সেজে ওঠে বসুমল্লিক বাড়ির ঠাকুর দালান

ঠাকুর দালানের সামনের উঠোনে থামের উপর ঢালাই করা লোহার দশটি লাস্যময়ী পরীর মূর্তি আছে। এই বাড়ির প্রতিমা একচালা মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি। প্রতিমার ডাকের সাজ হয়। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীকে বেনারসি শাড়ি ও কার্তিক-গণেশকে সিল্কের ধুতি পড়ানো হয়।

deblina dey | Published : Oct 5, 2023 7:27 AM IST / Updated: Oct 05 2023, 12:58 PM IST

Potoldanga Basumallick Barir Puja: আরও নানা বনেদি বাড়ির মতো প্রায় ২০০ বছর ধরে এই বাড়িতে দুর্গা পুজো হয়। কলকাতার প্রাচীন বনেদি বাড়িগুলির পুজো আজ শুধুমাত্র দর্শনীয় স্থান নয়, ঐতিহ্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্যও। সে রকমই এই বাড়ি অর্থাৎ পটলডাঙ্গার বসুমল্লিক বাড়ি। বাড়ির ঠিকানা ১৮, রাধানাথ মল্লিক লেন। এই বাড়িটির ঠাকুর দালান পাঁচ খিলান বিশিষ্ট দু'দালান। বাইরের দেওয়ালের খিলানের উপর দশাবতারের ছোট ছোট মূর্তি আছে। বারবার রঙ হওয়ার দরুন তা কি দিয়ে তৈরি বোঝার উপায় নেই।

ঠাকুর দালানের সামনের উঠোনে থামের উপর ঢালাই করা লোহার দশটি লাস্যময়ী পরীর মূর্তি আছে। এই বাড়ির প্রতিমা একচালা মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি। প্রতিমার ডাকের সাজ হয়। দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীকে বেনারসি শাড়ি ও কার্তিক-গণেশকে সিল্কের ধুতি পড়ানো হয়। সিংহের মুখ ড্রাগন আকৃতির। কলাবউ স্নান করানো হয় বাড়ির দালানেই। পুজোর একটি বিশেষত্ব হল, এখানে বন্দুক থেকে গুলি ছোড়ার পর এক বিশেষ ধরণের তলোয়ার দিয়ে আখ, চাল-কুমড়া ইত্যাদি বলি দেওয়ার প্রথা আছে।

অব্রাহ্মণ পরিবার বলে পুজোয় অন্নভোগ দেওয়া হয় না। তার বদলে গোটা ফল, গোটা আনাজ, শুকনো চাল, নানা ধরনের মিষ্টি ইত্যাদি ভোগ দেওয়া হয়। দশমীর সকালে ও বিকালে মা কে বরণ করার পর নিমতলা ঘাটে প্রতিমা নিরঞ্জন করা হয়। এই বাড়ির এক উল্লেখযোগ্য নিয়ম হল কাদামাটি খেলা। এই খেলায় বাড়ির ছেলেরা পুজোর সময় কাদামাটি নিয়ে খেলে আর ঢাকের তালে তালে নেচে উমা-কে বিদায় জানান।

পুজোর কটা দিন হাসি-ঠাট্টা-আনন্দে মেতে থাকেন বসুমল্লিক বাড়ি। তারপর বিদায় বেলায় মন খারাপের সঙ্গে থাকে আবার পরের বছরের পুজোর উন্মাদনা। তবে আগেকার নিয়ম যথাসম্ভব মেনেই এখনো তাদের পরম্পরা ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করছেন বসু মল্লিক পরিবার।

Read more Articles on
Share this article
click me!