
ভারত জীবন্ত সংস্কৃতির দেশ। এই ভূখণ্ডে শিবভক্তির ধারা চিরকাল প্রবহমান। এই শ্রাবণ মাসে লাখ লাখ ভক্ত শিব উপাসনা করে, দর্শন করে শিবধাম। আপনি জানেন কি ভারতের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে রয়েছে মোট ১২ টি জ্যোতির্লিঙ্গ। বিশ্বাস করা হয়, এই জ্যোতির্লিঙ্গ দর্শন করলে মানুষের সমস্ত পাপ ক্ষয় হয়, ইচ্ছা পূর্ণ হয় এবং জীবনে আসে শান্তি, মেলে মোক্ষ।
আজকের প্রতিবেদনে ভারতের এমনই ৫টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক মর্যাদা সম্পন্ন জ্যোতির্লিঙ্গ সম্পর্কে জানবো।
১। সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ
গুজরাটের ভেরাভালে অবস্থিত, সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ ভগবান শিবের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি। এটি পৃথিবীর প্রথম জ্যোতির্লিঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শিবপুরাণ অনুসারে, যখন দক্ষ প্রজাপতি চন্দ্রকে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার অভিশাপ দিয়েছিলেন, তখন চন্দ্রদেব এই স্থানে তপস্যা করে অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আজও বিশ্বাস করা হয়, শিবের এই পবিত্র স্থানে পূজা করলে ভক্তের যক্ষ্মা, কুষ্ঠ ইত্যাদি রোগ নিরাময় হয়।
২। কাশী বিশ্বনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ
উত্তর প্রদেশের বারাণসীতে অবস্থিত, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ভগবান শিবের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি। বিশ্বাস করা হয় যে ভগবান শিব নিজেই এই স্থানটিকে রক্ষা করেন। শ্লোক আছে, "काश्यां मरणं मुक्तिः" অর্থাৎ কাশীতে মৃত্যু মানেই মোক্ষ লাভ।
৩। কেদারনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ
কেদারনাথ জ্যোতির্লিঙ্গ উত্তরাখণ্ডে হিমালয়ের কেদার নামক চূড়ায় অবস্থিত শিবের প্রিয় স্থান। বিশ্বাস করা হয়, মহাভারতের সময় ভগবান শিব এই স্থানে ষাঁড়ের আকারে পাণ্ডবদের কাছে আবির্ভূত হয়েছিলেন।
৪। মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ
মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ মধ্য প্রদেশের উজ্জয়িনে অবস্থিত। এটি একমাত্র জ্যোতির্লিঙ্গ যেখানে দক্ষিণমুখী জ্যোতির্লিঙ্গের পূজা করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে এই স্থানে ভগবান মহাকালের দর্শন করলে সকল ধরণের ভয়, রোগ এবং ত্রুটি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
৫। ত্রয়ম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ
মহারাষ্ট্রের নাসিকে অবস্থিত ত্রয়ম্বকেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গ হল বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে অষ্টম জ্যোতির্লিঙ্গ। এখানকার জ্যোতির্লিঙ্গ তিনটি মুখবিশিষ্ট জ্যোতির্লিঙ্গ—ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও রুদ্রের প্রতীক।