
Historical Kali Puja 2025: ডাকাতি করে এসে ডাকাতরা করত মা কালীর পুজো। তাই এই কালীর নাম ডাকাতে কালী। এই পুজোর বয়স প্রায় ১১২ বছর। ভক্তদের মুখের কথায় খুবই জাগ্রত এই ডাকাতে কালী। পুজোতে জড়িয়ে রয়েছে ইতিহাস। নদীয়ার মাজদিয়ার ঘোষপাড়া ডাকাতে কালীতলায় ধুমধাম করে পুজো হচ্ছে এবারেও। প্রাচীন এই পুজোকে ঘিরে রয়েছে ইতিহাস প্রসিদ্ধ কাহিনী।
স্থানীয় শিক্ষক সুকুমার ঘোষের কাছ থেকে জানা যায়, আজ থেকে প্রায় ১১২ বছর আগে ওই গ্রামের দিন কাটছিল অভাব -অনটনের মধ্যে দিয়ে। অনেকই পাচ্ছিলেন না দুবেলা -দুমুঠো খাবার , সেই করুন অবস্থা দেখে ব্যথিত হয়ে পড়লেন গ্রামবাসীরা। ওই গ্রামের কয়েকজন তরতাজা যুবক সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তারা ডাকাতি করবেন ডাকাতি করেই যোগাড় করবেন গ্রামের মানুষের জন্য খাবার।
তখন চলছে কড়া ব্রিটিশ শাসন হঠাৎই ওই যুবকরা খবর পেলেন , বাংলাদেশের ঢাকার দিকে যাচ্ছে ব্রিটিশদের মালবাহী ট্রেন ওই ট্রেনেই তারা ডাকাতি করার সিদ্ধান্ত নেন। রাত হয়ে গিয়েছে মাজদিয়ার ইছামতি ব্রিজের ওপর দিয়ে ব্রিটিশদের মালবাহী ট্রেনটি যাচ্ছিল ,কু -ঝিক ঝিক করে, হাতে লন্ঠনের লাল আলো দেখিয়ে ব্রিজের ওপরই দাঁড় করিয়ে দেওয়া হল ট্রেনটিকে সময় নষ্ট না করে ট্রেনের বগি থেকে কাপড়ের বান্ডিল বেশ কয়েকটা ফেলে দেওয়া হল নদীর জলে লুট করা হল খাদ্যসামগ্রীও এরপর ডাকাতরা লাল আলো নিয়ে সরে যেতেই ট্রেন ছাড়ে।
ট্রেন বেড়িয়ে গেল ঠিকই কিন্তু অল্প সময়ের মধ্যেই খবর পৌঁছে গিয়েছিল ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে। শুরু হয়ে গেল খোঁজ খোঁজ। ডাকাতদলের লোকজন আশ্রয় নিয়েছিলেন জঙ্গলে ব্রিটিশ বাহিনী নদীতে ফেলা কাপড়ের বান্ডিলের হদিশ পাইনি। সেই কাপড় তুলেও লুট করা খাদ্য সামগ্রী ওই ডাকাতেরা গ্রামের মানুষের মধ্যে বিলি করেন কিন্তু যারা করেছে এই কাজ তাদের সন্ধানে ব্রিটিশ পুলিশদের খোঁজ খবর চলছিল কড়াভাবেই।
ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে ধরা পড়ার ভয়ে জঙ্গলেই কাটতে লাগল তাদের সময় সেইসময় তারা স্মরণ করেছিলেন মা কালীকে। বলেছিলেন ,’মা তুমি বাঁচিয়ে দাও, আমরা তোমার পুজো দেব। অলৌকিকভাবেই সেবার তাদের সন্ধান পায়নি ব্রিটিশ পুলিশ। ফিরে যেতে হয় তাদের। ব্রিটিশবাহিনীর ফিরে যাওয়ার পরদিনই ছিল অমাবস্যা। কালীপুজো। জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে একটি বেল ও নিম গাছের পাশেই বেদি বানিয়ে ডাকাতরা করেছিলেন মা কালীর পুজোর আয়োজন। বহু মানুষ এইখানে আজও মায়ের পুজো দেন, শোভাযাত্রায় হাজার হাজার পুরুষ মহিলা পা মেলান। বলা যেতেই পারে ডাকাতে কালী এখন এলাকার মানুষের কাছে একটা আবেগ।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।