
হিন্দু ঐতিহ্য অনুসারে, মহাষষ্ঠীর দিন দেবী দুর্গা তাঁর পরিবারসহ কৈলাস থেকে পৃথিবীতে পাঁচ দিনের বার্ষিক যাত্রা শুরু করেন। ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে এই পবিত্র দিনে, দেবী তাঁর স্বর্গীয় বাসস্থান ছেড়ে পৃথিবীতে তাঁর সন্তানদের শান্তি, সমৃদ্ধি এবং সুখের আশীর্বাদ দিতে আসেন।
মহাষষ্ঠীর রীতিনীতি গভীর প্রতীকী অর্থ বহন করে। এই অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে কল্পারম্ভ (দুর্গাপূজার আনুষ্ঠানিক সূচনা), বোধন (দেবীর মূর্তির উন্মোচন, যা দেবীর জাগরণকে বোঝায়), আমন্ত্রণ (দেবীকে পৃথিবীতে আসার জন্য আহ্বান) এবং অধিবাস (দেবীকে মণ্ডপে স্বাগত জানানোর রীতি)। এই প্রতিটি আচার মানুষের জীবনে দেবীর দিব্য উপস্থিতি আহ্বানের আধ্যাত্মিক যাত্রাকে তুলে ধরে।
রীতিনীতি ছাড়াও, মহাষষ্ঠীর সাংস্কৃতিক এবং আবেগগত তাৎপর্যও রয়েছে। বাংলা এবং ভারতের অনেক জায়গার রাস্তা উৎসবের আলো, সজ্জিত প্যান্ডেল এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে জীবন্ত হয়ে ওঠে। এই দিনেই পরিবারগুলো একত্রিত হয়ে উদযাপন করে, শুভেচ্ছা বিনিময় করে এবং দুর্গাপূজার বাকি দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করে।
মহাষষ্ঠী শুধু আচার-অনুষ্ঠান বা প্রার্থনার দিন নয়—এটি দুর্গাপূজার বিশাল উৎসবের সূচনা। ভক্তদের জন্য, এটি অশুভের উপর শুভের জয়, জাগতিক সংগ্রামের উপর দৈব শক্তির বিজয় এবং মা সর্বদা তাঁর সন্তানদের রক্ষা করেন—এই আস্থার প্রতীক। এই দিনটি একটি গভীর আধ্যাত্মিক সংযোগ তৈরি করে, যা মানুষকে তাদের জীবনে ইতিবাচকতা, সহানুভূতি এবং সহনশীলতা গ্রহণ করতে মনে করিয়ে দেয়।
যখন উৎসবের ঢাকের শব্দ (ঢাকি) বেজে ওঠে এবং ধূপের গন্ধে বাতাস ভরে যায়, তখন মহাষষ্ঠী অষ্টমী, নবমী এবং দশমীর দিনগুলোর জন্য একটি নিখুঁত সুর তৈরি করে।