
টেনিস কোর্টে টানাটান ম্য়াচ নয়, অস্ট্রেলিয়ান ওপেন (Australian Open) শুরুর আগে বিশ্বের পয়লা নম্বর টেনিস তারকা নোভাক জোকোভিচকে (Novak Djokovic) নিয়ে টানাটান নাটক কোর্টের বাইরে। যেই লড়াইয়ে কার্যত সম্মুখ সমরে অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসন (Australia Government), জোকোভিচ। টেনিস তারকার পাশে দাঁড়িয়েছে সার্বিয়ার সরকারও। ঘটনার সূত্রপাত কোভিড ভ্যাকসিন (Covid Vaccine)না নিয়ে জোকভিচের অস্ট্রেলিয়া ওপেনে অংশ গ্রহণ করতে নিয়ে। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল করোনা টিকা নিয়ে তবেই খেলতে আসতে হবে। তা না থাকলে সঠিক কারণ দেখিয়ে চিকিৎসকদের ছাড়পত্র প্রয়োজন। জোকোভিচ সেই ছাড়পত্র নিয়ে আসলেও কেন তাকে আটকানো হল ও ভিসা বাতিল করল স্কট মরিসন সরকার তানিয়েই বিবাদ শুরু। বিচারের দাবিতে আদালতের (Court)দ্বারস্থ্য় পর্যন্ত হয়েছেন ডিফেন্ডিং অস্ট্রেলিয়া ওপেন চ্যাম্পিয়ন।
এক ঝলকে জেনে নিন কীভাবে তৈরি হল এই বিবাদ-
১. অন্য়ান্য দেশের মতোই অস্ট্রেলিয়াতেও বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন বছরের শুরুতেই সবথকে বড় গ্র্যান্ডস্ল্যাম অস্ট্রেলিয়া ওপেন। ইতিমধ্যেই প্রতিযোগিতার অন্দরেও থাবার বসেয়েছে করোনা। সেই কারণে খুব কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে আয়োজকরা
২. অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল করোনা টিকা নিয়ে তবেই খেলতে আসতে হবে। তা না থাকলে সঠিক কারণ দেখিয়ে চিকিৎসকদের ছাড়পত্র প্রয়োজন। তা বিচার বিবেচনা করে দেখবে কর্তৃপক্ষ।
৩. কোভিড টিকা নিতে অনীহার কথা আগেই জানিয়েছিলেন নোভাক জোকোভিচ। এখনও কোভিড টিকা নেননি বিশ্বের পয়লা নম্বর টেনিস তারকা। যা নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই জলঘোলা চলছিল জোকারের অস্ট্রেলিয়া ওপেনে খেলা নিয়ে। চিকিৎকের ছাড়পত্র ছিল সার্বিয়ান টেনিস তারকার কাছে।
৪. যেহেতু জোকোভিচ ভ্যাকসিন নেননি, তাই নিয়ম শিথিল না করলে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন খেলা হবে না ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নের। আয়োজকদের তরফে চেষ্টা করা হয় জকোভিচের জন্য সরকারি নিয়ম শিথিল করার। শেষে জানানো হয় যে, করোনা ভ্যাকসিন না নেওয়া সত্ত্বেও জোকারকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে খেলতে দেওয়া হবে।
৫. কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পা রাখতেই অন্য মোড় নেয় চিত্রনাট্য। বিমান বন্দরেই আটকে দেওয়া হয় নোভাক জোকোভিচকে। জোকোভিচ করোনা টিকা নিয়েছেন কি না তার সঠিক প্রমাণ না থাকার কারণে ভিসা বাতিল করার নির্দেশ দেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন।
৬. ভ্যাকসিন সংক্রান্ত নিয়মে আটকে যাচ্ছে বলেই জকোভিচকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় শরণার্থী হোটেলে। তবে জোকোভিচ জানিয়েছিলেন, তিনি চিকিৎসকদের থেকে অস্ট্রেলিয়া আসার ছাড়পত্র পেয়েছেন। সেই জন্যই খেলতে এসেছেন অস্ট্রেলিয়ায়। কিন্তু তার কথায় কাজ হয়নি।
৭.স্ট মরিসন সরকারের এহেন আচরনে বেজায় চটে যান নোভাক জোকোভিচ। তিনি আইনি পথে মামলা লড়ার সিদ্ধান্ত নেন। অন্য়ায়ভাবে তার সঙ্গে এমন করা হয়েছে বলে দাবি বিশ্বের পয়লা নম্বর টেনিস তারকার।
৮. অবশ্য তড়িঘড়ি অস্ট্রেলিয়া ছাড়তে হচ্ছে না ২০টি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী টেনিস তারকাকে। জকোভিচের আইনজীবী জানান যে, অস্ট্রেলিয়া সরকার সুনানির আগে পর্যন্ত জকোভিচকে ওদেশে থেকে বার করে দিচ্ছে না। সুতরাং, গোটা উইকএন্ড জোকারকে কাটাতে হবে শরণার্থী হোটেলেই।
৯. কারণ মাঝে উইকএন্ড থাকায় এখনই আদালতে মামলার শুনানির হওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই। ফেডেরাল সার্কিট কোর্টে আগামী সোমবার হবে মামলার শুনানি। তখনই বোঝা যাবে অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসন ঠিন না নোভাক জোকোভিচ।
১০. তবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে জোকারের এমন অভিজ্ঞতা হওয়ায় সরব হয়েছেন তার ভক্তরা। তবে আইনি মামলা জিতলেও শেষপর্যন্ত অস্ট্রলিয়া ওপেনে সার্বিয়ান টেনিস তারকা আর খেলবেন কিনা তা নিয়ে একটা প্রশ্ন চিহ্ন থেকেই যাচ্ছে।