Asia Cup 2025: পাকিস্তানকে নাকানিচোবানি খাইয়ে জয় ভারতের। আর ম্যাচ শেষে 'নো হ্যান্ডশেক' পলিসি সূর্যদের। জয় ছিনিয়ে এনে সোজা মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন সূর্যকুমার যাদব এবং শিবম দুবে (india vs pakistan live)। কোনও সৌহার্দ্য বিনিময় নয়, বরং ২২ গজে মোক্ষম জবাব বোধহয় একেই বলে। এমনকি, এই জয় দেশের সামরিক বাহিনী এবং পহেলগাঁও হামলায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের উৎসর্গ করেছে ভারতীয় ক্রিকেট দল (ind vs pak asia cup 2025)।
নিঃসন্দেহে ভারতবাসীদের আবেগকে সম্মান জানালেন দেশের ক্রিকেটাররা। অনেকেই প্রশ্ন তুলছিলেন, কেন ভারত খেলছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে? যে পাকিস্তান প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা এবং পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে যে দেশের সরাসরি যোগসূত্র মিলেছে, তাদের সঙ্গে তো কোনওরকম সম্পর্কই রাখা উচিত নয়। বাস্তবিক দিক দিয়ে দেখতে গেলে, এই আবেগের বহিঃপ্রকাশ খুবই স্বাভাবিক বিষয়।
কিন্তু এশিয়া কাপে আরও অনেকগুলি দেশ অংশ নিয়েছে। তাছাড়া এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বের মধ্যে অন্যতম সেরা ক্রিকেট খেলিয়ে দেশ হল ভারত। পাকিস্তানের জন্য ভারত কেন খেতাবের লড়াই থেকে পিছিয়ে আসবে? তাই পাকিস্তানের মাটিতে নয়! ভারত নিরপেক্ষ জায়গায় খেলার দাবি করে এবং সেইমতোই গোটা এশিয়া কাপের আসর বসে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বুকে। এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল সেই দাবি মানতে কার্যত, বাধ্য হয়। কারণ, ভারতই আসল ফ্যাক্টর, আর কেউ নয়। সেটা ক্রিকেটের নিরিখেও এবং ব্যবসায়িক দিক দিয়েও। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, ক্রিকেট মাঠও আসলে বিপ্লবের জন্ম দেয়। লড়াইয়ের উপাখ্যান রচনা করে। রবিবার সেটাই হল।
এবার আসা যাক, সেই মহারণের কথায়। রবিবার, দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে চলতি এশিয়া কাপে মুখোমুখি হয় ভারত বনাম পাকিস্তান। আসলে ২২ গজে নেমেও পাকিস্তানকে আবার বোঝানো দরকার ছিল যে, ঠিক যেভাবে দেশের সামরিক বাহিনী এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পাকিস্তানকে জবাব দিয়েছে, ঠিক সেইভাবেই ২২ গজেও জবাব অপেক্ষা করে রয়েছে তাদের জন্য। সর্বোপরি, ‘অপারেশন সিঁদুর'-এর পর প্রথম সাক্ষাৎ। ভারতের ‘অউকাত’ তো বোঝাতেই হত।
আর এদিনের ম্যাচে যেন পুরো দাবাং মুডে ছিল টিম ইন্ডিয়া। মাত্র ১২৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তানের ইনিংস। কুলদীপ একাই নেন ৩ উইকেট। এছাড়া ২টি করে উইকেট পান যশপ্রীত বুমরা এবং অক্ষর প্যাটেল। ১টি করে উইকেট পেয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া এবং বরুণ চক্রবর্তী।
ব্যাট করতে নেমে, এদিন যেন অভিষেক শর্মার একেকটা শট বুঝিয়ে দিচ্ছিল, জবাব মুখের উপর দিতে হয়। শুরু থেকেই চালিয়ে খেলতে শুরু করে ভারত। ২২ গজে মোক্ষম জবাব এবং চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া, ভারত কোনওকিছুতেই ভয় পায় না। বরং, প্রতিপক্ষদের মেপে পা ফেলা উচিত। এটা ‘ইন্ডিয়া'। আর সেই দাপট এবং আক্রমণাত্মক মেজাজের ফলে, ভারতের সামনে কার্যত, খড়কুটোর মতো উড়ে গেল পাকিস্তান। তাদের দেখে রীতিমতো অসহায় লাগছিল। এই দল আবার হুঙ্কার দেয়?
এই হাইভোল্টেজ ম্যাচে ১৩ বলে ৩১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস উপহার দেন অভিষেক শর্মা। দলের আরেক ওপেনার শুভমান গিল করেন ১০ রান। এরপর আসেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব এবং তিলক ভার্মা। অসাধারণ ইনিংস উপহার দিলেন দুজন। সূর্য শেষপর্যন্ত ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন এবং তিলক ভার্মার ঝুলিতে ৩১ রান। শেষদিকে নেমে শিবম দুবে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন। ভারতের এত লম্বা এবং দক্ষ ব্যাটিং লাইন-আপ থাকার কারণে, ভয়ের কোনও কারণই ছিল না।
হাসতে হাসতে ১৫.৫ ওভারেই ৩ উইকেট হারিয়ে ১৩১ রান তুলে নেয় ভারত। আর গোটা ম্যাচে ভারতকে দেখে এটাই মনে হয়েছে যে, প্রতিপক্ষ পাকিস্তানকে কোনও সমীহ নয়। কোনও সৌহার্দ্য বিনিময় নয়! বরং, চালিয়ে খেলো এবং আক্রমণাত্মক মেজাজেই ম্যাচ জেতার মনোভাব নিয়ে মাঠে নামেন হার্দিকরা। আর ম্যাচ শেষেও সেই ছবি ধরা পড়ল। ছক্কা মেরে জয় নিশ্চিত করে সোজা ডাগ-আউটের দিকে হাঁটা দিলেন সূর্য-শিবম। ‘নো হ্যান্ডশেক' এবং বডি ল্যাঙ্গুয়েজ বলে দিল, এখানে ভারত জিততে এসেছে। মোক্ষম জবাবের সঙ্গে টপ লেভেল অ্যাটিটিউড নিয়েই মাঠ ছাড়ল গোটা ভারতীয় দল।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।