Ranji Trophy 2025: বাংলা বনাম আসাম ম্যাচ ড্র। রঞ্জি ট্রফির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে বাংলা বনাম আসাম (bengal vs assam highlights)। কল্যাণীর বেঙ্গল ক্রিকেট একাডেমি গ্রাউন্ডে, রবিবার থেকে শুরু হয় সেই ম্যাচ (bengal vs assam ranji trophy live)।
টসে জিতে এই ম্যাচে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলা। আর প্রথমে ব্যাট করতে নেমে, বিশাল কোনও স্কোর খাড়া করতে পারেনি আসাম। মাত্র ২০০ রানেই শেষ হয়ে যায় তাদের ইনিংস। দলের ওপেনার প্রদ্যুন সাইকিয়া করেন ৩৮ রান, ঋষভ দাসের ঝুলিতে ২ রান, স্বরূপম পুরকায়স্থের সংগ্রহে লড়াকু ৬২ রান এবং ডেনিশ দাস ৩ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে।
এছাড়া দলের অধিনায়ক তথা উইকেটকিপার-ব্যাটার সুমিত ঘড়িগাঁওকার ৫৩ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস উপহার দেন। এরপর আর কেউ সেইভাবে ভালো খেলতে পারেননি। শিবশঙ্কর রায়ের ঝুলিতে ৯ রান, ঋতুরাজ বিশ্বাস কোনও রান না করেই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান, আকাশ সেনগুপ্তর সংগ্রহে ৬ রান, আব্দুল আজিজ কুরাইশি করেন ১১ রান এবং মুখতার হোসেন ৯ রান যোগ করেন স্কোরবোর্ডে।
মাত্র ২০০ রানেই শেষ হয়ে যায় আসামের ইনিংস। বাংলার হয়ে দাপুটে বোলিং করেন মহম্মদ শামি এবং সুরাজ সিন্ধু জয়সওয়াল। দুজনেই ৩টি করে উইকেট পান। সেইসঙ্গে, দুটি উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ কাইফ এবং একটি উইকেট ঈশান পোড়েলের দখলে।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে, বাংলার ওপেনার সুদীপ কুমার ঘরামি ফিরে যান মাত্র ২ রানে। দলের অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ ৬৬ রানের ইনিংস উপহার দেন। অন্যদিকে, শাকির হাবিব গান্ধীর সংগ্রহে ৫৮ রান এবং অনুষ্টুপ মজুমদারের ঝুলিতে ৪৩ রান। বোঝাই যাচ্ছে যে ওপেনিং এবং মিডল অর্ডার বেশ ভালোই খেলেছে।
তবে শাহবাজ আহমেদের কথা আলাদাভাবে বলতেই হয়। কারণ, তাঁর দুরন্ত সেঞ্চুরির সুবাদেই বাংলা আরও শক্তিশালী জায়গায় পৌঁছে যায়। শাহবাজের ঝুলিতে গুরুত্বপূর্ণ ১০১ রান। অন্যদিকে, সুমন্ত গুপ্তও যথেষ্ট ভালো ক্রিকেট উপহার দেন। তাঁর সংগ্রহে ৯৭ রান।
সেইসঙ্গে, রাহুল হরি প্রসাদ ২৮ রান, সুরাজ সিন্ধু জয়সওয়াল ১১ রান, মহম্মদ শামি ১৮ রান এবং মহম্মদ কাইফ ৬ রান যোগ করেন। বাংলার ইনিংস শেষ হয় ৪৪২ রানে। আসামের হয়ে ২টি করে উইকেট পেয়েছেন মুখতার হুসেন, আবদুল আজিজ কুরাইশি, আকাশ সেনগুপ্ত এবং ঋতুরাজ বিশ্বাস। এছাড়া ১টি উইকেট নিয়েছেন আয়ুষ্মান মালাকার।
জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে, প্রাথমিকভাবে বেসামাল হয়ে পড়ে আসাম। কারণ, তৃতীয় দিনের শেষে, তাদের স্কোর ছিল ৩ উইকেট হারিয়ে ৯৮ রান। ওপেনার ঋষভ দাস এবং প্রদ্যুন সাইকিয়া খালি হাতে প্যাভিলিয়নে ফিরে যান। স্বরূপম পুরকায়স্থ করেন মাত্র ৪ রান। ক্রিজে ডেনিশ দাস ৬৩ রানে এবং দলের অধিনায়ক ও উইকেটকিপার-ব্যাটার সুমিত ঘড়িগাঁওকার ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন।
অর্থাৎ, আসাম পিছিয়ে ছিল ১৪৪ রানে এবং শেষদিন বাংলার জয়ের জন্য দরকার ছিল ৭ উইকেট। ফলে, চতুর্থ দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায় এই ম্যাচের জন্য। কিন্তু কঠিন পরিস্থিতিতেই দায়িত্বপূর্ণ ইনিংস খেললেন আসামের তিন ব্যাটার, ডেনিশ দাস, সুমিত ঘড়িগাঁওকার এবং শিবশঙ্কর রায়।
ডেনিশ করেন ৭৩ রান, অধিনায়ক ঘড়িগাঁওকারের ঝুলিতে ৬৭ রান এবং শিবশঙ্করের সংগ্রহে ৫২ রান। মূলত এই তিনজনের জন্যই লড়াইতে ফিরে আসে আসাম। কার্যত, ক্রিজ আঁকড়ে ধরে খেলতে শুরু করেন তারা। ডেনিশ এবং সুমিত ১১১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। এরপর ডেনিশ দাস আউট হয়ে গেলেও শিবশঙ্কর রায়কে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান সুমিত ঘড়িগাঁওকার। তাদের দুজনের পার্টনারশিপ ৫৮ রানের।
এছাড়া ঋতুরাজ বিশ্বাস এবং , আকাশ সেনগুপ্ত করেন ১৩ রান ও আবদুল আজিজ কুরাইশির সংগ্রহে ২৩ রান। অন্যদিকে, আয়ুষ্মান মালাকার করেন ৯ রান। শেষপর্যন্ত, বাংলা ৭ উইকেট ফেলতে পারেনি আসামের। চতুর্থ দিন, ৯ উইকেট হারিয়ে ২৮২ রান তোলে আসাম। তারপরেই খেলার সমাপ্তি ঘোষণা করেন আম্পায়াররা। ফলে, বাংলা বনাম আসামের মধ্যে রঞ্জি ট্রফির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ড্র হল।
বাংলার হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে৪ উইকেট নেন শাহবাজ আহমেদ। তিনিই ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন। বাংলার হয়ে প্রথম ইনিংসে তিনি সেঞ্চুরিও করেন। অপরদিকে, ২টি উইকেট পেয়েছেন মহম্মদ শামি। ১টি করে উইকেট সুরাজ সিন্ধু জয়সওয়াল, ঈশান পোড়েল এবং রাহুল হরি প্রসাদের দখলে।
বাংলাঃ অভিমন্যু ঈশ্বরণ (অধিনায়ক), সুদীপ কুমার ঘরামি, শাকির হাবিব গান্ধী (উইকেটকিপার-ব্যাটার), অনুষ্টুপ মজুমদার, শাহবাজ আহমেদ, সুমন্ত গুপ্ত, রাহুল হরি প্রসাদ, সুরাজ সিন্ধু জয়সওয়াল, মহম্মদ শামি, মহম্মদ কাইফ, ঈশান পোড়েল
আসামঃ সুমিত ঘড়িগাঁওকার (অধিনায়ক এবং উইকেটকিপার-ব্যাটার), ডেনিশ দাস, শিবশঙ্কর রায়, স্বরূপম পুরকায়স্থ, মুখতার হুসেন, আকাশ সেনগুপ্ত, প্রদ্যুন সাইকিয়া, আয়ুষ্মান মালাকার, ঋতুরাজ বিশ্বাস, আবদুল আজিজ কুরাইশি, ঋষভ দাস
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।