Durand Cup East Bengal: ইস্টবেঙ্গলের পরাজয়! তাও আবার ডুরান্ড কাপে প্রথমবারের খেলতে নামা ডায়মন্ডহারবার এফসি-র কাছে। নিঃসন্দেহে যে ম্যাচে অভিজ্ঞতার দিক দিয়ে অনেকটাই এগিয়ে ছিল লাল হলুদ ব্রিগেড (east bengal vs dhfc)। কিন্তু অভিজ্ঞতা দিয়ে তো সবসময় জেতা যায় না! মাঠে নেমে তাই আসল কাজটাই করে দেখাল ডিএইচএফসি (east bengal vs dhfc live score)।
কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে বুধবার, ডুরান্ড কাপের মেগা সেমিফাইনালে মুখোমুখি হয় ইস্টবেঙ্গল বনাম ডায়মন্ডহারবার এফসি। যে ম্যাচে ২-১ গোলে জিতে কার্যত, ইতিহাস রচনা করে ফেলল কিবু ভিকুনার ছেলেরা। অসাধারণ ফুটবল উপহার দিলেন জবি জাস্টিন। গোল করে যেন মাঠের মধ্যেই নিজের পুরনো দল লাল হলুদকে উপযুক্ত জবাব দিয়ে গেলেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন, সময় সবার আসে। ডায়মন্ডহারবারের হয়ে আরেকটি গোল করেন কোর্টাজার। অন্যদিকে, ইস্টবেঙ্গলের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন আনোয়ার আলি। আর সেই ম্যাচের পরেই, সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ইস্টবেঙ্গল কর্তা দেবব্রত সরকার।
তিনি বলেন, “বাজে খেলেছি আজকে আমরা। ডায়মন্ডহারবার আমাদের থেকে বেশি ভালো ফুটবল খেলেছে। চান্স ফ্যাক্টর কাজ করে। চান্সগুলো কাজে লাগাতে পারিনি। আমাদের থেকে ওরা ভালো খেলেছে। আমরা ডায়মন্ডহারবারের জন্য ফাইনালে দোয়া করব। সারা বাংলা যেন করে। যাতে বাংলায় ট্রফিটা আসে। এর বাইরে তো আর কিছু বলার নেই। আমরা যখনই খেলা শুরু করি, তখনই একটা কুণ্ডু! একটা অমুক, এইরকম চলে আসে। আমার কাছে ওর ডকুমেন্টসটা আছে। সেকেন্ড গোলটা কী হচ্ছে, হাতে লাগল। আমাদের পেনাল্টি দিল না কেন? হাত এবং লাস্ট যেটা করল, ল্যাং মেরে ফেলে দিল। এনিওয়ে, এটার জন্য হেরেছি আমি বলব না। আমি বলব, আমরা খেলতে পারিনি, তাই হেরেছি।"
দেবব্রত সরকারের কথায়, “কোচ করবে চিন্তা। কোচ বললে তখন আমরা দিমিত্রি দিয়ামান্তোকোসকে নিয়ে ভাবব। যে কোনও কারণে ডায়মন্ডহারবার ফাইনালে গেছে। আমি চাইব, সারা বাংলা ডায়মন্ডহারবারকে সাপোর্ট করুক। যে যার সাপোর্টার। আমি ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের কাছেও আবেদন করছি।"
সবথেকে বড় বিষয়, ডায়মন্ডহারবারের বিশাল পরিমাণ কোনও সমর্থক এদিন মাঠে উপস্থিত ছিলেন না। বরং, যুবভারতীতে অনেক বেশি সংখ্যায় ছিলেন লাল হলুদ সমর্থকরা। লাল হলুদ পতাকা এবং ব্যানারে মোড়া ছিল বুধবারের সল্টলেক স্টেডিয়াম। তবে ডায়মন্ডহারবার কোচ কিবু ভিকুনার প্রশংসা করতেই হয়। তাঁর হাত ধরেই মোহনবাগান আই লিগে জয় পেয়েছিল। সেইবারও কিন্তু ইস্টবেঙ্গলকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ফলে, ঐ অভিজ্ঞতা এবং টেম্পারমেন্ট, তাঁর দল পরিচালনার ক্ষেত্রে কাজে এসেছে। আর কিবুর ফুটবল মস্তিস্ক যেন সত্যিই টেক্কা দিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোকেও।
প্রমাণ হয়ে গেল, শক্তিশালী দল নিয়েই সবসময় জেতা যায় না। তার জন্য দরকার হয় ফুটবল মস্তিস্ক, ম্যাচ বাই ম্যাচ অ্যানালিসিস এবং উপযুক্ত পরিকল্পনা। আর এই ম্যাচে ডায়মন্ডহারবারের হয়ে জবি ছাড়াও, লুকা মাজসেনও অসাধারণ ফুটবল উপহার দেন। সেইসঙ্গে, হালি, স্যামুয়েল এবং রুয়াতকিমারও কথা বলতেই হয়। আর সেইসঙ্গে এদিনের জয়ের পিছনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিলেন ডায়মন্ডহারবার গোলকিপার মীরশাদ। দুর্দান্ত গোলকিপিং করে একাধিকবার দলের পতন রোধ করেন তিনি।
গোটা দলের অনবদ্য পারফরম্যান্সের সুবাদেই, সেমিফাইনালে রীতিমতো দাপুটে ফুটবল উপহার দিল ডায়মন্ডহারবার এফসি এবং কলকাতার অন্যতম বড় ক্লাব ইস্টবেঙ্গলকে ২-১ গোলে হারিয়ে ডুরান্ড কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল তারা। ফাইনালে তাদের সামনে নর্থইস্ট ইউনাইটেড। যারা গত মরশুমের ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন।
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।