Messi in Kolkata: দুর্দান্ত একটি ইভেন্ট হতে পারত। কিন্তু বাস্তবে হল ঠিক তার উল্টো। চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা এবং লণ্ডভণ্ড সল্টলেক স্টেডিয়াম। যে ইতিহাস এবং ঐতিহ্য কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনকে ঘিরে এতদিন ছিল, তথা ফুটবলের মক্কা এই শহরের গ্ল্যামার যেন এক লহমায় ফ্যাকাসে হয়ে গেল শনিবার (messi india tour)। বাংলার ফুটবলে কালো দিন। রাজ্যের রাজধানীতে এসেছিলেন বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম মেগাস্টার, ফুটবলের রাজপুত্র তথা ম্যাজিশিয়ান লিওনেল মেসি। কিন্তু তাঁর আসার দিনেই মাথা হেঁট হল পশ্চিমবঙ্গের। এই লজ্জা কোথায় লুকোবে বাংলা? তারিখটা ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ (messi in kolkata)। ‘স্ক্যাম হয়েছে আমাদের সঙ্গে!’ বললেন, হতাশ সমর্থকরা।
এই ধরনের মেগা ইভেন্ট যে প্রফেশনাল পদ্ধতিতে সামলানো উচিত ছিল, তার ধারেকাছে কিছু দেখা যায়নি শনিবার। মেসির গাড়ি যুবভারতীতে প্রবেশ করতেই একদল মানুষ তাঁকে ঘিরে ধরেন। তারা কারা? সিকিউরিটি অফিশিয়াল ছাড়াও ইভেন্ট সংস্থার কর্মী এবং মিডিয়া ফটোগ্রাফার বাদে বহু মানুষ ফিল্ড অফ প্লে-তে বারবার ঢুকে পড়ছিলেন। যেখানে গুটি কয়েকজনের থাকার কথা, মেসিকে অনেকটা জায়গা ছেড়ে দেওয়ার কথা, সেখানে তারা রীতিমতো গায়ের উপর উঠে পড়ছিলেন বারবার। এমনকি, মেসির দুই সতীর্থ লুই সুয়ারেজ এবং রদ্রিগো ডি'পলকেও বেশ কয়েকবার বিরক্ত হতে দেখা যায়।
নিয়মের তোয়াক্কা না করেই সেলফির আবদার করতে দেখা যাচ্ছিল অনেককে। সঞ্চালকের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও পাত্তাই দেননি সেই বহিরাগতরা। এই ধরনের মেগাস্টারকে ঘিরে উপদ্রব করার সুযোগ তারা পেলেন কীভাবে? প্রশ্ন উঠছে। কাদের নির্দেশে তারা এই সাহস পেলেন?
পুরো মৌচাকের মতো মেসিকে ঘিরে ধরেন তারা। ফলে, গ্যালারি থেকে দেখাই যায়নি বিশ্ব ফুটবলের ম্যাজিশিয়ানকে। প্রচুর মানুষ মোটা অঙ্কের টাকা খরচ করে টিকিট কাটেন মেসিকে দেখবেন বলে। অথচ সেই ফুটবলপ্রেমী জনতাকে রীতিমতো বঞ্চিত করা হল। তারা দেখতেই পেলেন না মেসিকে। তারপরেই গোটা যুবভারতী জুড়ে তৈরি হয় উত্তপ্ত পরিস্থিতি। ফুটবলপ্রেমী জনতার অভিযোগ, চূড়ান্ত অব্যাবস্থা ছিল আয়োজকদের তরফ থেকে।
সকাল ১১.৫২ মিনিটে, মেসি যুবভারতী ছাড়তেই পরিস্থিতি কার্যত, হাতের বাইরে চলে যায়। এমনকি, স্টেডিয়ামের ফেন্সিং ভেঙে মাঠে ঢুকে পড়েন বিরাট সংখ্যক মানুষ। মেসিকে দেখতে না পেয়ে, রাগের চোটে তারা গ্যালারির চেয়ারও ভেঙে ফেলেন। তারপর ছুঁড়তে শুরু করেন। জলের বোতলও ছোঁড়া হয় গ্যালারি থেকে।
মাঠের বাইরে এসেও তীব্র ক্ষোভ জানাতে থাকেন তারা। ‘এলএম১০'-কে দেখতে না পেয়ে রীতিমতো হতাশ সমর্থকরা। একজনের কথায়, “১০ মিনিটও ভালো করে দেখতে পেলাম না। আমরা ভেবেছিলাম যে, একবার বলে টাচ করবে বা পেনাল্টি মারবে মেসি। কিছুই হল না।"
এক খুদে সমর্থক বললেন, “পুরো সময় নষ্ট হল।" আরেকজন তো বলেই দিলেন, “এটা পুরো স্ক্যাম হয়েছে আমাদের সঙ্গে।" এক মেসি ভক্তের বক্তব্য, “টাকা-পয়সা, ইমোশন, সব ভেঙে চুরমার। সকাল ৬.৩০ মিনিট থেকে লাইন দিয়েছিলাম আমরা। একটা মুহূর্তের জন্যও দেখতে পেলাম না। ভালোভাবে"
একজন তো কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “সেই সকালে এসেছিলাম। একবার ভগবানকে দেখব বলে। পারলাম না।" অপর এক ব্যক্তির কথায়, “অফিস ছুটি নিয়ে এসেছিলাম বেঙ্গালুরু থেকে। কী পেলাম? সরকারের লোকরা সব ঘিরে ছিল। আমাদের দেখতেই দিল না।"
এক সমর্থক বললেন, “আমার নিজের বিয়ে। তারপরেও এলাম। পুরো স্ক্যাম করেছে আয়োজকরা আমাদের সঙ্গে।" এক মেসি ভক্তের কথায়, “আমরা কী দেখব? নেতারাই তো সব ঘিরে রেখে দিয়েছিল। বাংলার মানুষকে বোকা বানানো হচ্ছে। খুব খারাপ। সরকারকে এর দায় নিতে হবে।"
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।