কোডিনযুক্ত কাশির সিরাপের বেআইনি পাচার সংক্রান্ত তদন্তে প্রকাশ্যে নতুন তথ্য। এই ঘটনার তদন্তের জন্য গঠিত বিশেষ তদন্তকারী দল (এসআইটি) উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে একটি বিশেষ রিপোর্ট জমা দিয়েছে। ওই রিপোর্টে দেশে লাইসেন্স ব্যবস্থার ফাঁকফোকর, হাওয়ালা অর্থায়ন এবং আন্তর্জাতিক পাচারচক্রের সঙ্গে যুক্ত সিন্ডিকেটের অস্তিত্বের কথা তুলে ধরা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
25
সমাজবাদী পার্টি সরকারের আমলে দুর্নীতির অভিযোগ
এসআইটি-র রিপোর্টে কাশি সিরাপ চক্রের মূল হোতা হিসেবে বিভোর রানা-র নাম উঠে এসেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০১৬ সালে রানা কাশি সিরাপ উৎপাদনের লাইসেন্স পান। এসআইটির দাবি, এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত সব সন্দেহজনক সংস্থার লাইসেন্সই ২০১৭ সালের আগে, তৎকালীন সমাজবাদী পার্টি সরকারের আমলে ইস্যু করা হয়েছিল।
35
কী বলছে রিপোর্ট?
ওই রিপোর্টে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে কোডিনযুক্ত কাশি সিরাপ আইনত নিষিদ্ধ ওষুধ নয়। তবে ১২ বছরের কম বয়সি শিশুদের জন্য চিকিৎসাগতভাবে নিষিদ্ধ এবং এর ব্যবহার ও বিক্রি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। তদন্তকারীদের ধারণা, এই সিরাপের অবৈধ কারবার বেশ বড়রকম ভাবেই হয়েছে। শুধু তাই নয়, অভিযোগ- এই সিরাপ অন্য খাতে সরিয়ে নেওয়া, মজুতদারি এবং নেশার উদ্দেশ্যে প্রেসক্রিপশন ছাড়াই বিক্রির মাধ্যমে। অভিযানে যে কাশি সিরাপগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, সেগুলি ভুয়ো নয়, বরং আসল ও বৈধ পণ্য ছিল বলে দাবি করা হয়েছে।
তদন্তে জানা গিয়েছে, সিন্ডিকেটটি সুপার-স্টকিস্ট থেকে শুরু করে খুচরো বিক্রেতা পর্যন্ত বহুস্তরীয় সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে কাজ করত। যার ফলে বিপুল পরিমাণ কাশি সিরাপ মজুত করে তা মাদকবাজারে পাচার করা সম্ভব হতো। এসআইটি জানিয়েছে, এই সরবরাহ শৃঙ্খলকেই কেন্দ্র করে উত্তরপ্রদেশ সরকার অবৈধ কাশি সিরাপ পাচারের বিরুদ্ধে দেশের সবচেয়ে বড় অভিযান চালিয়েছে। একইসঙ্গে ঘুমের ওষুধ ও সেডেটিভের বেআইনি বেচাকেনার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
55
কাশি সিরাপ প্রত্যাহারের অনুরোধ
নেপাল সীমান্তের কাছে একটি মাদ্রাসা নেটওয়ার্কের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হলে পাচার চক্র সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়। এর জেরে বিভোর রানা ও তাঁর সহযোগীরা অল্প সময়ের জন্য কার্যকলাপ বন্ধ রাখতে বাধ্য হন। নজরদারি ও তদন্তের চাপ বাড়তে থাকায়, পুলিশের সম্ভাব্য পদক্ষেপের আশঙ্কায় রানা অভিযোগ অনুযায়ী ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা অ্যাবটের কাছে প্রায় এক কোটি বোতল কাশি সিরাপ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান।