
বলা হয় যে জীবনে কিছু হতে হলে ছাত্রজীবনেই নিজের লক্ষ্য পরিষ্কার করে নেওয়া উচিত। কিন্তু ইউকেজি-তে পড়া একটি বাচ্চা মেয়ে যদি বলে যে সে আইএএস হতে চায়, তাহলে অবাক হতেই হয়। এমনই কিছু করেছে একটি ছোট্ট মেয়ে, যে গোরখপুরের জেলাশাসকের অফিসে পৌঁছে ডিএম-কে বলে যে সে ইউপিএসসি পাশ করে আপনার মতো আইএএস অফিসার হতে চায়।
আসলে, গোরখপুরের ডিএম দীপক মীনা কালেক্টরেটে জনতা দর্শনে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনছিলেন। এরই মধ্যে কনকনে ঠান্ডায় ৫ বছরের একটি মেয়ে তার বাবার সাথে জেলাশাসকের অফিসে পৌঁছায়। যখন কর্মচারীরা জিজ্ঞাসা করেন, 'সোনা, তোমার এখানে কী কাজ, আর কার সাথে দেখা করতে চাও?' তখন মেয়েটি জানায় যে তার নাম জিজ্ঞাসা এবং তাকে কালেক্টর স্যারের সাথে কিছু জরুরি কথা বলতে হবে। এই কথা শুনে লোকেরা ভাবে যে হয়তো তার স্কুলের কোনো সমস্যা আছে এবং সে আবেদনপত্র দিতে এসেছে। কিন্তু যখন মেয়েটি তার মনের কথা বলে, তখন সেখানে উপস্থিত সবাই মেয়েটির উত্তর এবং তার সারল্য দেখে অবাক হয়ে যায়।
জানিয়ে রাখি, মেয়েটি গোরখপুরের একটি নামী স্কুলে ইউকেজি-তে পড়ে। সে বেশ কয়েকদিন ধরে তার বাবার কাছে জেদ করছিল যে তাকে কালেক্টর স্যারের সাথে দেখা করতে হবে। কিন্তু জিজ্ঞাসা সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, স্কুল না গিয়ে সরাসরি তার বাবার সাথে জেলাশাসকের অফিসে পৌঁছে যায়। মেয়েটির জেদ এবং সারল্য দেখে সেখানকার কর্মচারীরা ভেতরে কেবিনে বসে থাকা কালেক্টর দীপক মীনাকে বিষয়টি জানালে, তিনি কোনো আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই মেয়েটিকে সরাসরি ভেতরে ডেকে নেন। এরপর কালেক্টর হেসে বলেন, 'সোনা, বলো তো আমার সাথে কেন দেখা করতে চেয়েছিলে, আমি তোমার কী সাহায্য করতে পারি...' এরপর জিজ্ঞাসা বলে, 'স্যার, আমিও আপনার মতো ডিএম হতে চাই। এর জন্য আমাকে কী করতে হবে?' বাচ্চা মেয়েটির এই কথা শুনে সবাই হাসতে শুরু করে।
মেয়েটির কথা শুনে কালেক্টর দীপক মীনা জিজ্ঞাসাকে বলেন, 'যদি আমার মতো এই চেয়ারে বসতে চাও, তাহলে আগে তোমাকে প্রতিদিন স্কুলে যেতে হবে। সেখানে শিক্ষকরা যে হোমওয়ার্ক দেবেন, তা পূরণ করতে হবে। খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করতে হবে।' জেলাশাসকের কথা মেয়েটি খুব মনোযোগ দিয়ে শুনছিল। এই সময় সেখানে উপস্থিত মেয়েটির বাবা তার মেয়ের কথা শুনে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন মেয়েটির উৎসাহ দেখে খুব খুশি হন।