
মোরাদাবাদে চাঞ্চল্যকর ঘটনা: বুধবার রাতে এক চার বছরের শিশুকন্যা তার দিদিমাকে ভিডিও কল করে। সে ফোনের ক্যামেরা ঘরের দিকে ঘুরিয়ে যা বলে, তা শুনে দিদিমার হুঁশ উড়ে যায়— "বাবা মাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে, মা কিছু বলছে না।" স্ক্রিনে তার মায়ের নিথর দেহ ফাঁসিতে ঝুলতে দেখা যায়।
দিদিমা তৎক্ষণাৎ পুলিশে খবর দেয় এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা গাজিয়াবাদ থেকে মোরাদাবাদে রওনা হয়। শিশুকন্যার বাবা রোহিত কুমার, যিনি গাজিয়াবাদের মদীনগরের বাসিন্দা এবং একজন সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, তাকে বৃহস্পতিবার সকালে আটক করা হয়।
৩৫ বছর বয়সী রুবি রানী, যিনি মোরাদাবাদের কুন্দরকি ব্লকের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ছিলেন, তার বিয়ে ২০১৯ সালে রোহিতের সাথে হয়েছিল। দুজনেই তাদের চার বছরের মেয়ের সাথে বুদ্ধি বিহার কলোনী, মোরাদাবাদে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
রুবির পরিবারের দাবি, এটি আত্মহত্যা নয়, বরং খুন, যাকে আত্মহত্যার রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের মতে, রোহিত ক্রমাগত রুবিকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছিল, এবং এই নিয়ে দুজনের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হত।
পরিবারের অভিযোগ, বুধবার সন্ধ্যায় রোহিত রুবির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০,০০০ টাকা ইউপিআই-এর মাধ্যমে নিজের অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছিল।
এছাড়াও, গাজিয়াবাদের মদীনগরে অবস্থিত তাদের বাড়ির কিস্তিও রুবি একাই দিচ্ছিলেন, কারণ রোহিত টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল।
"রোহিত এই বাড়িটি বিক্রি করতে চাইত, কিন্তু রুবি রাজি ছিলেন না। এই কারণেই সে তাকে নির্যাতন করত," পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে জানিয়েছে।
এসপি সিটি রণবিজয় সিংয়ের মতে, পুলিশ এবং ফরেনসিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। রোহিতকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং ময়নাতদন্তের রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও পুলিশ আত্মহত্যার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না। তদন্তে জানা গেছে, ঘটনার আগে রুবি রোহিতকে ফোন করে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।
পুলিশ রোহিতের মোবাইল, ল্যাপটপ এবং অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস জব্দ করেছে। এখন প্রশ্ন হল, রুবি কি আত্মহত্যা করেছেন, নাকি এটি একটি পরিকল্পিত খুন? পুলিশ শীঘ্রই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে পারে।