মহাকুম্ভ নগর, ২৫ জানুয়ারী। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ প্রয়াগরাজ সফরে শনিবার দক্ষিণ ভারতের শৃঙ্গেরী পীঠের শঙ্করাচার্য জগদগুরু শ্রীশ্রী বিধুশেখর ভারতী জি মহারাজের সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁকে সম্মান জানান। এই উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শৃঙ্গেরী পীঠের পূজনীয় শঙ্করাচার্যের প্রয়াগরাজ আগমনে আনন্দের অনুভূতি হচ্ছে। আপনার আগমনে মহাকুম্ভ পরিপূর্ণতা লাভ করছে। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে দক্ষিণ রীতিতে স্বাগত জানানো হয় এবং তাঁকে কুম্ভের প্রতীক হিসেবে নারকেল উপহার দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রীও শঙ্করাচার্যকে শাল ওড়ा এবং ফল উপহার দিয়ে সম্মান জানান।
শৃঙ্গেরী পীঠের শঙ্করাচার্য জগদগুরু শ্রীশ্রী বিধুশেখর ভারতী জি মহারাজের সাথে সাক্ষাতের সময় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘ বিরতির পর দক্ষিণের শৃঙ্গেরী পীঠের মহাকুম্ভের মহাআয়োজনে আগমন ঘটছে। এতে মহাকুম্ভের শোভা আরও বেড়েছে। এটা আনন্দের বিষয় যে এই মহাকুম্ভে শৃঙ্গেরী পীঠের শঙ্করাচার্য ৫ দিনের জন্য অবস্থান করবেন, এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদের মতো। প্রদেশ সরকার এবং জেলা প্রশাসন আপনার কাছে কৃতজ্ঞ। কুম্ভের মতো আয়োজনকে ভব্য এবং দিব্য করে তুলতে আপনার উপস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী শঙ্করাচার্যকে মহাকুম্ভের ব্যবস্থা, সাধুদের অংশগ্রহণ এবং বিশ্বব্যাপী মানুষের আগমন সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য প্রদান করেন।
শৃঙ্গেরী পীঠের শঙ্করাচার্য মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া মহাকুম্ভ সম্পর্কিত তথ্যে প্রসন্নতা প্রকাশ করেন। তিনি মহাকুম্ভের ব্যবস্থা এবং সুযোগ-সুবিধার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তাঁর সেবায় নিয়োজিতদেরও তিনি আশীর্বাদ করেন। শঙ্করাচার্য মুখ্যমন্ত্রীকে দক্ষিণ পীঠের ঐতিহ্য সম্পর্কে অবহিত করেন। তিনি জানান, ৪৮ বছর আগে গুরুর গুরু কুম্ভে অমাবস্যার দিন স্নান করতে এসেছিলেন, কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে দক্ষিণ থেকে কোন শঙ্করাচার্য ১৫০ বছর পর মহাকুম্ভে যোগ দিচ্ছেন। তিনি জানান, ৫ দিনের প্রবাসকালে তিনি শাস্ত্রার্থের পাশাপাশি অমাবস্যায় শঙ্করাচার্যদের সাথে ত্রিবেণী সঙ্গমে স্নান করবেন। তিনি তাঁর প্রবাস এবং পরবর্তী কর্মসূচি সম্পর্কেও জানান। এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রী শঙ্করাচার্যকে কাশীতে শাস্ত্রার্থ সভা এবং প্রবচন করার অনুরোধ করেন। শঙ্করাচার্য সম্মতি দেন। অন্নপূর্ণা মন্দিরে কর্মসূচি পালনের ব্যাপারেও শঙ্করাচার্য সম্মতি প্রদান করেন। এই উপলক্ষে শঙ্করাচার্যের কুম্ভ প্রবাসের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাকেশ শুক্লা, দক্ষিণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুরলী জি সহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সেক্টর ১৯-এ অবস্থিত শ্রী কল্যাণ সেবা আশ্রম, অমরকন্টক আশ্রমেও যান এবং সেখানে তিনি সদ্গুরুদেব বাবা কল্যাণ দাস জি মহারাজের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন এবং তাঁর সাথে ব্যক্তিগত আলোচনা করেন। এই সময় মুখ্যমন্ত্রী মহাকুম্ভে সরকারের ব্যবস্থা এবং সুযোগ-সুবিধা নিয়েও তাঁর সাথে কথা বলেন। প্রায় ১০ মিনিট স্থায়ী এই সাক্ষাতের পর মুখ্যমন্ত্রী তাঁর পরবর্তী কর্মসূচির দিকে প্রস্থান করেন। মধ্যপ্রদেশের প্রধান পর্যটন এবং ধর্মীয় তীর্থস্থান পবিত্র নগরী অমরকন্টকে কল্যাণ সেবা আশ্রম ১৯৭৭ সাল থেকে জনসেবা, সমাজসেবা, আধ্যাত্মিক এবং ধর্মীয় কর্মকাণ্ডকে উদ্দেশ্য বানিয়ে কাজ করে চলেছে।