
আমেরিকার ছাত্র ম্যাট পাজ (Matteo Paz) কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ব্যবহার করে নাসা-র পুরানো NEOWISE ডেটা থেকে মহাকাশের ১.৫ মিলিয়ন (১৫ লক্ষ) নতুন ও অদৃশ্য মহাজাগতিক বস্তুর খোঁজ পেয়েছেন, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তাঁর AI মডেলটি লক্ষ লক্ষ ইনফ্রারেড ডেটা বিশ্লেষণ করে এমন সূক্ষ্ম প্যাটার্ন শনাক্ত করেছে যা মানুষ ধরতে পারেনি।যার ফলে কোয়াসার, সুপারনোভা এবং অন্যান্য পরিবর্তনশীল বস্তুর নতুন তালিকা তৈরি হয়েছে, যা জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের মতো ভবিষ্যৎ গবেষণার পথ খুলে দিয়েছে।
কিশোর আবিষ্কর্তার নাম ম্যাট পাজ। আমেরিকার পাসাডেনা সেকেন্ডারি স্কুলের ছাত্র। স্কুলজীবন শেষ। হওয়ার আগেই নাসার লোভনীয় চাকরির অফার পেয়েছে সে। নাসার ডিরেক্টর জেরাড আইজ্যাকম্যান তাকে সরাসরি বলেছেন, ”ম্যাট, তুমি নাসায় চাকরির আবেদন জানাও। আমাদের প্রস্তাবে সই করলে আমি নিজে একটা বিমান পাঠাব তোমার জন্য। তাতে চড়ে আসবে তুমি।”
* ডেটা উৎস: পাজ NASA-র বন্ধ হয়ে যাওয়া NEOWISE টেলিস্কোপের ডেটা ব্যবহার করেন, যা ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মহাকাশের ইনফ্রারেড ডেটা সংগ্রহ করেছে।
* AI মডেল তৈরি: তিনি একটি বিশেষ মেশিন লার্নিং মডেল তৈরি করেন, যা এই বিশাল ডেটাসেট থেকে অদৃশ্য বা ছোটখাটো পরিবর্তনশীল মহাজাগতিক বস্তু শনাক্ত করতে পারে।
* শনাক্তকরণ: এই AI মডেলটি ডেটার মধ্যেকার সূক্ষ্ম প্যাটার্ন এবং ইনফ্রারেড সিগন্যালের পরিবর্তন বিশ্লেষণ করে লক্ষ লক্ষ নতুন বস্তুর সন্ধান দেয়, যা আগে অজানা ছিল।
গুরুত্ব ও প্রভাব: * নতুন মহাজাগতিক মানচিত্র: এই আবিষ্কার মহাকাশের মানচিত্রকে আরও সমৃদ্ধ করেছে, কারণ এতে নতুন কোয়াসার, সুপারনোভা এবং অন্যান্য অজানা বস্তুর তথ্য যুক্ত হয়েছে।
* ভবিষ্যৎ গবেষণার দিকনির্দেশ: পাজ-এর এই কাজ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST)-এর মতো শক্তিশালী টেলিস্কোপকে নির্দিষ্ট স্থানাঙ্কে নজর দিতে সাহায্য করবে, যা আরও গভীর গবেষণার সুযোগ করে দেবে।
* AI-এর শক্তি প্রদর্শন: এটি প্রমাণ করে যে, পুরানো ডেটা এবং উদ্ভাবনী AI পদ্ধতি ব্যবহার করে কীভাবে নতুন বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করা সম্ভব, যা তরুণ গবেষকদের জন্য একটি বড় অনুপ্রেরণা।
* অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রয়োগের সম্ভাবনা: এই মডেলটি শুধু মহাকাশেই নয়, স্টক মার্কেট বিশ্লেষণ বা পরিবেশ পর্যবেক্ষণের মতো অন্যান্য ক্ষেত্রেও সময়-ভিত্তিক ডেটা বিশ্লেষণে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ফলাফল: * পাজ-এর এই যুগান্তকারী আবিষ্কারের পর NASA তাকে চাকরির প্রস্তাব দিয়েছে এবং The Astronomical Journal-এ তার কাজ প্রকাশিত হয়েছে।
সংক্ষেপে, ম্যাট পাজ-এর এই আবিষ্কার প্রমাণ করে যে, AI কীভাবে জ্যোতির্বিজ্ঞানের মতো জটিল ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে এবং তরুণ প্রতিভারা কীভাবে বিশ্বকে নতুন করে জানতে সাহায্য করতে পারে।