৫০০০-এরও বেশি মহিলার সঙ্গে সম্পর্কের স্প্রেডশিট রাখতেন সিলিকন ভ্যালির ধনকুবের (Silicon Valley billionaire) মাইকেল গোগুয়েন (Michael Goguen)।
সিলিকন ভ্যালি। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া প্রদেশের দক্ষিণ সান ফ্রান্সিসকো উপকূলের এই অঞ্চলে জন্ম হয়েছে এই সময়ের বহু বিশ্বখ্য়াত স্টার্ট-আপ এবং গ্লোবাল প্রযুক্তি সংস্থার। অ্যাপল, ফেসবুক, গুগল - এরকম বহু সংস্থার সদর দফতর অবস্থিত এই সিলিকন ভ্যালিতে। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলি রাতারাতি জন্ম দিয়েছে বহু প্রথম প্রজন্মের ধনকুবেরেরও। এবার এরকমই এক 'সিলিকন ভ্যালি বিলিয়নেয়ার'এর বিরুদ্ধে বিরাট যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠল। জানা গিয়েছে, ৫০০০-এরও বেশি মহিলার সঙ্গে তিনি অবৈধ যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন এবং একটি স্প্রেডশীটে তিনি সেইসব যৌন সম্পর্কের হিসাবও রাখতেন।
নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠেছে সেকোইয়া ক্যাপিটাল সংস্থার প্রাক্তন অংশীদার, মাইকেল গোগুয়েন-এর বিরুদ্ধে। সেকোইয়া ছেড়ে তিনি এখন নিজের এক বহুজাতিক ফার্ম প্রতিষ্ঠা করেছেন। তাঁর চারজন প্রাক্তন কর্মচারী এই অভিযোগ এনেছে। তাদের দাবি, তাদের সাহায্যেই বহু সংখ্যক মহিলার 'হারেম' চালাতেন ৫৭ বছর বয়সী গোগুয়েন। মার্কিন জেলা আদালত, মন্টানায় দায়ের করা এক নাগরিক অভিযোগে তারা আরও দাবি করেছে, এক কিশোরী ধর্ষণের পর, তার মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে বিপুল অর্থও দিয়েছিলেন এই মার্কিন ধনকুবের। এছাড়া, তাঁর কথা মতো মুখ না বন্ধ না রাখলে, গোগুয়েন তাঁর নিরাপত্তা প্রধানকে, ওইসব মহিলাদের হত্যা করার নির্দেশও দিতেন বলে অভিযোগ করেছে তারা।
মাইকেল গোগুয়েন বিবাহিত শুধু নন, তিনি দুই সন্তানের বাবাও বটে। তবে, সকলের অগোচরে সিলিকন ভ্যালিতে, তিনি একের পর এক বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, বাড়ি ক্রয় করেছেন, যেগুলিকে তিনি 'সেফ হাউস' বলতেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। সেই 'সেফ হাউস'গুলি তিনি ব্যবহার করতেন বিভিন্ন তরুণীর সঙ্গে সঙ্গমের জন্য। এই সব যৌন মিলনের কথা তিনি একটি স্প্রেডশিটে নথিভুক্ত করেও রাখতেন। এর পাশাপাশি, এক স্থানীয় বারও কিনেছিলেন তিনি। সেই বারের বেসমেন্ট একটি গোপন কক্ষ ছিল। যাকে তিনি বলতেন 'বুম বুম রুম'। সেই ঘরটি 'অবৈধ যৌন কার্যকলাপের উদ্দেশ্যে মহিলাদের আটকে রাখার জন্য' ব্যবহার করা হত বলে অভিযোগ করেছেন গোগুয়েনের পুরোনো কর্মচারীরা।
নিউইয়র্ক পোস্টের ওই প্রতিবেদন অনুসারে, সব মিলিয়ে ১৩৫ পৃষ্ঠা দীর্ঘ এই অভিযোগপত্রটি। তাতে ৮০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে মামলাকারীরা। গোগুয়েনের এই চার প্রাক্তন কর্মচারীই তাঁর বর্তমান নিরাপত্তা ঠিকাদার সংস্থা 'গোগুয়েনের অ্যামিন্টর গ্রুপ এলএলসি' স্থাপনে তাঁকে সহায়তা করেছিল। এই নিরাপত্তা সংস্থার আড়ালেই চলত গোগুয়েনের যৌন লীলা। ওই ৪ কর্মীকেই তাঁর এই জটিল অভিসারের ঝক্কি সামলাতে হত। তারা জানিয়েছেন, মহিলাদের বিভিন্ন দামী দামী 'উপহার' দিয়ে তাদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচারে লিপ্ত হতেন এই সিলিকন ভ্যালি বিলিয়নেয়ার। সেই সঙ্গে তাঁর এই গোপন দিক, গোপন রাখার জন্য মহিলাদের অনেক উপহার, অর্থ দেওয়া হত।
গোগুয়েনের পক্ষ থেকে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে এখনও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে এই মারাত্মক অভিযোগে কেঁপে গিয়েছে সিলিকন ভ্যালি।