বিচারের নামে প্রহসন যুগ-যুগ ধরে চলছে, স্তালিন থেকে ট্রাম্প কেউই এর বাইরে নন

  •  বিচারের নামে একটা সাজানো নাটকের উদাহরণ বহু  
  • যে আমেরিকা তাদের প্রেসিডেন্টকে অভিশংসনে দোষী করে 
  •  তারাই বিচারের নামে সাজানো নাটকে ট্রাম্পকে খালাস করে
  • বিচারের নামে প্রহসন স্তালিনের সাজানো বিচার থেকে চলছে 

 আমেরিকাই পৃথিবীর প্রথম রাষ্ট্র যেখানে গণতন্ত্র স্থাপিত হয়েছিল। যদিও একসময়ে সে দেশ আদিবাসী আমেরিকানদের নির্বিচারে হত্যা করেছে, ট্রান্স–আটলান্টিক দাস কেনাবেচা করেছে অবাধে। কিন্তু একদিন তারাই সেই নৃশংস, অমানবিক সমাজ সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়ছিল। প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল এক ব্যাপক গণতন্ত্রের। তবে একথাও তো একই সঙ্গে ঠিক যে এই আমেরিকায় ১৯৬৫ সালের আগে অধিকাংশ কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের ভোটাধিকার ছিল না। কেবল তাই নয়, ১৯২০ সালের আগে সে দেশে ভোটাধিকার ছিল না নারীদেরও।

সেই আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রে ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠিত হল মজবুত গণতন্ত্র। দেশটির আইনসভা ও বিচার বিভাগ এতটাই মজবুত ভিত্তির ওপর দাঁড়াল যে দরকার হলে তারা খোদ প্রেসিডেন্টকে পর্যন্ত অভিশংসিত করতে পারে। এমনকি তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করতে পারে। 

Latest Videos

সম্প্রতি আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিশংসনের মধ্য দিয়ে আমেরিকার সেই জোরালো গণতন্ত্রকে দেখেছিল গোটা বিশ্ব। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ছাড়া আরও দুজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এর আগে অভিশংসিত হয়েছেন। অ্যান্ড্রু জনসন এবং বিল ক্লিনটন। আমেরিকার ইতিহাসে তৃতীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে হাউজ অব রেপ্রেজেন্টেটিভে অভিশংসিত হয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তখন তার প্রেসিডেন্ট থাকা বা না থাকাটা নির্ভর করছিল সেনেটের শুনানির ওপর।

সবাই বুঝে গেল, বিচারের নামে একটা সাজানো নাটকের মধ্য দিয়ে ট্রাম্পকে চূড়ান্তভাবে খালাস করা হল। গণতন্ত্রের নামে এমন এক নাটক মঞ্চস্থ হল যা গণতন্ত্রকেই লজ্জা দিল। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এই বিচার দেখে যে কারও গেল শতকে তিনের দশকের ‘মস্কো ট্রায়াল’–এর কথা মনে পড়তে পারে। সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নে জোসেফ স্তালিন তাঁর প্রতিপক্ষ লিও ট্রটস্কির অনুগতদের সাজা দেওয়ার জন্য এক সাজানো বিচার শুরু করেছিলেন। যাঁদের ধরা হচ্ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ছিল, তাঁরা সোভিয়েত ইউনিয়নে নতুন করে পুঁজিবাদ প্রতিষ্ঠার চক্রান্ত চালাচ্ছে। সেই সাজানো বিচারে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করার রায় আগেই ঠিক করা হয়েছিল। ঠিক যেমনটা ট্রাম্পের বেলায় হল।

 প্রতিনিধি পরিষদে অভিশংসিত ট্রাম্পকে যে সিনেটের সালিসিতে নির্দোষ ঘোষণা করা হবে, সেটাও তো আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, তিনি ইউক্রেনের সরকারকে চাপ দিয়েছিলেন, যাতে তারা তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বার্নি স্যান্ডার্সের বিরুদ্ধে তদন্ত করে। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা এই অভিশংসন প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদে পাস হয় এবং ট্রাম্পকে সিনেটে বিচারের সম্মুখীন হতে হয়।

একটি বিচার তখনই নিরপেক্ষ ও যথার্থ হয়, যখন বিচারকেরা সিদ্ধান্ত নেন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁরা আপস করবেন না; কিন্তু সিনেটের প্রভাবশালী জুরিরা বিচার শুরুর আগেই প্রকাশ্যে ঘোষণা দিলেন—তাঁরা নিরপেক্ষ নন, তাঁরা প্রেসিডেন্টের পক্ষে।

ইরানে পাহেলভি শাসন এবং এখনকার ইসলামিক শাসন দুই আমলেই লোকদেখানো বিচার বসিয়ে বহু দোষী মানুষকে নির্দোষ বানানো হয়েছে। আবার বহু নির্দোষ মানুষকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। মিসরে হোসনি মোবারক এবং মোহাম্মদ মুরসিও একই ধরনের বিচারের মুখে পড়েছেন। 

সব শেষে সৌদি আরবের সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যার বিচারের উল্লেখ করা যায়। ওই বিচারেও মূল সন্দেহভাজন মোহাম্মাদ বিন সালমানকে দায়মুক্ত করা হয়।ঠিক যেমনভাবে ট্রাম্পকে নির্দোষ ঘোষণা করা হয়েছে। 

Share this article
click me!

Latest Videos

'উনি চক্রান্তের বড় শিকার' নেতাজির জন্মদিনে এ কী বললেন মমতা? Mamata on Netaji
রাগের মাথায় এ কী করে বসলো স্বামী! দেখলে আঁতকে উঠবেন, চাঞ্চল্য Nadia-এ | North 4 Parganas News Today
সুকান্ত মজুমদারকে বিজেপির নবজাতক আখ্যা কুণালের, পাল্টা দিয়ে যা বললেন সুকান্ত : Sukanta on Kunal
নেতাজির 'মৃত্যুদিন' ঘোষণা রাহুলের, ক্ষোভ উগরে একহাত নিলেন সুকান্ত মজুমদার | Sukanta on Rahul
ED Raid Today: Kolkata-র একাধিক স্থানে ফের ED-র অভিযান! Salt Lake-এ হাজির বিশাল ইডির দল | Kolkata