কোমারাম ভীম ছিলেন হায়দরাবাদে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে মাথা তোলা এক ব্যক্তি। গোন্ডা আদিবাসী সম্প্রদায়ের কোমারাম ভীম ছিলেন চারিত্রিকভাবে প্রচণ্ড দৃঢ়চেতা এবং প্রতিবাদী। সেইসঙ্গে প্রবল দেশপ্রেমিক। ব্রিটিশের অধীনে থাকা করদরাজ্য নিজামের শাসনতন্ত্রের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছিলেন ভীম।
হায়দরাবাদের আফিসাবাদের সানেকপল্লিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন কোমারাম ভীম। সালটা ছিল ২২ অক্টোবর। তবে সালটা নিয়ে দুটো মত রয়েছে। কেউ বলেন তিনি ১৯০০ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। গোন্ডী নামে আদিবাসী গোষ্ঠীর ছিলেন তিনি। ঘন জঙ্গলে আদিবাসীদের মধ্যেই বড় হয়ে উঠেছিলেন ভীম। প্রাথমিক শিক্ষার উপরে আর শিক্ষালাভ করতে পারেননি ভীম। কারণ এলাকায় জমিদারদের অত্যাচার সমানে গোণ্ডী গোষ্ঠীভুক্ত মানুষদের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পালিয়ে যেতে বাধ্য করত। ছোট থেকে ব্রিটিশদের দ্বারা মদতপুষ্ট এই জমিদারদের অত্যাচারকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন ভীম। এমন ঘটনাপ্রবাহেই একদিন খুন হয়ে যান ভীমের বাবা। এই ঘটনা কিশোর ভীমের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। বাবার মৃত্যুর পর ভীমের পরিবার করিমনগরে চলে যায়। কিন্তু সেখানেও জমিদারদের কর প্রথার শিকার হতে হয় ভীমের পরিবারকে। একদিন তরুণ ভীমের হাতে জমিদারের এক কর্মচারী খুন হয়। গ্রেফতারি এড়াতে বন্ধুকে সঙ্গে নিয়ে চন্দা রাজ্যে আশ্রয় নেন ভীম। সেখানে তিনি হিন্দি, ইংরাজি ও উর্দু ভাষায় দক্ষতা অর্জন করেন। কিন্তু, একদিন চন্দা রাজ্যেও গ্রেফতারি হওয়ার উপক্রম হয়। এবার অসমে পালিয়ে যান ভীম। সেখানে গিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। এখানে গ্রেফতারও হন তিনি। কিন্তু, ৪ দিনের মধ্যেই জেল থেকে পালিয়ে সোজা চলে আসেন নিজের পুরনো জায়গা নিজাম রাজ্যে। এরপর সেখানে আদিবাসীদেরকে সংগঠিত করে নিজামের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শুরু করেন। কিন্তু, নিজাম-এর পুলিশ তাঁকে খুঁজে বের করে এবং গুলিতে শহিদ বরণ করেন কোমারাম ভীম।