২০১৪ সাল থেকে রকেটের গতিতে বড়লোক অনুব্রত, আদালতে জমা করা রিপোর্ট বিপুল সম্পত্তির হিসেব সিবিআই-এর

বেচতেন মাছ। আর ছিল বাবার একটা মুদিখানার দোকান। মাঝে নাকি একটা সাইকেল রিপেয়ারিং দোকানও খুলেছিলেন। সংসার চালানোর জন্য নিজেকে স্বনির্ভর করতে কী করেননি অনুব্রত মণ্ডল। কিন্তু, রাজনৈতিক কেরিয়ারটি ছিল তাঁর কাছে অনেকটা চিচিং ফাকে-র মতো। সিবিআই তদন্তে তেমনই তথ্য মিলছে। 
 

রাজনৈতিক প্রভাব প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে বিপুল সম্পত্তি বানিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। আদালতে গরু পাচারকাণ্ড নিয়ে তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট জমা করে এমনই দাবি করল সিবিআই। সেই সঙ্গে রিপোর্টের পরতে পরতে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা দেখিয়েছে কীভাবে বছরের পর বছর সম্পত্তি বৃদ্ধি করে গিয়েছেন অনুব্রত। যতটা না নিজের নামে করেছেন, তার থেকে বেশি তিনি সম্পত্তি করেছেন বেনামে। এর অর্থ এই সব সম্পত্তির বেশিরভাগের মালিকানা আত্মীয়দের নামে রেখেছেন অনুব্রত মণ্ডল। 

সিবিআই তাদের জমা করা রিপোর্টে বলেছে অনুব্রত মণ্ডলের নথিপত্র ঘেঁটে দেখা গিয়েছে যে তিনি একাধিক রাইস মিল থেকে স্টোন ক্র্যাশার, একাধিক হোটেল, ফার্ম হাউস, একাধিক বাড়ি এবং জমি, অসংখ্য গাড়ি রয়েছে তাঁর। এর কোনওটা অনুব্রতর নামে, আবার কোনওটা স্ত্রী থেকে কন্যা এবং অন্যান্য আত্মীয়দের নামে। এই রিপোর্টে সিবিআই অনুব্রত-র সম্পত্তি বৃদ্ধিকে রকেট স্পিড বলে দাবি করেছে। ২০১৪ সাল থেকে অনুব্রত মণ্ডল ভুতের রাজা দিল বরের মতো সম্পত্তি বাড়িয়ে গিয়েছেন। একজন সাধারণ আয়কারী রাজনৈতিক নেতা এত অর্থ কীভাবে পেলেন তাতে প্রশ্ন তুলেছে সিবিআই। অনুব্রত-র আয়ের উৎসে ভালমতো গড়মিল রয়েছে বলেও দাবি করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।   

গরু পাচারকাণ্ডে পাচারকারীদের পুলিশ-প্রশাসনের হাত থেকে রেহাই দিয়ে রাখার প্রতিশ্রুতি দিতেন অনুব্রত। আর তার বিনিময়ে যে কমিশন আসত তার পরিমাণটা কয়েক কোটি টাকা। আর সেই টাকা দিয়ে একের পর এক সম্পত্তি নাকি কিনেছেন অনুব্রত। সিবিআই এমন দাবি ও করেছে। তবে, কমিশনের পুরো অর্থ-ই যে অনুব্রত রাখতেন তা নয়, কমিশনের সিংহভাগটাই অন্যত্র পাচার হয়ে যেত বলেও সিবিআই দাবি করেছে। এই টাকা কোথায় যেত সেই রাস্তাটা এবং তার প্রাপকের পরিচয় খোঁজার চেষ্টা চলছে। এমনকী এই কালো টাকাকেও সাদা করার জন্য সিএসআর প্রকল্পের সাহায্য নেওয়া হত বলেও সিবিআই-এর বিশ্বস্ত সূত্রে খবর। এর জন্য অনুব্রত ঘনিষ্ঠ একাধিক ব্যবসায়ীর সম্পত্তি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ব্যবসায়ীরা গত ১০ বছরে উল্কার গতিতে উন্নতি করলেন কি করে তাও খতিয়ে দেখছে সিবিআই। এর ফলে মনে করা হচ্ছে আগামী দিনে হয়তো বীরভূম জেলার একাধিক ব্যবসায়ীকেও সিবিআই-এর জেরার সামনে পড়তে হতে চলেছে। 

Latest Videos

অনুব্রতকাণ্ডে এখনও পর্যন্ত ১৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হিসাব পাওয়া গিয়েছে। যেসব ব্যাঙ্কে এই সব অ্যাকাউন্ট রয়েছে, সেখানকার ম্যানেজারকে যাবতীয় তথ্য প্রদানের জন্য চিঠি ও দিয়েছে সিবিআই। এই ১৮টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের অধিকাংশটাই অনুব্রত মণ্ডলের বিভিন্ন আত্মীয়র নামে রয়েছে।  
আরও পড়ুন- 
অনুব্রত পেয়াদা, মলয় যদি মুখোশ হয় তাহলে পিছনে কারা, চাঞ্চল্যকর দাবি বিশ্বনাথ গোস্বামীর 
এবার সিবিআইের রেডারে অনুব্রত ঘনিষ্ট বিদ্যুৎ বরণ গায়েন, বোলপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালায় এই কেন্দ্রীয় সংস্থা 
অনুব্রতকে 'বাবা' ডাকতেন, সিবিআই-এর নজরে হঠাৎ 'বড়লোক হওয়া' পুরসভা কর্মী বিদ্যুৎবরণ গায়েন

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

'বালি চুরি, কয়লা চুরিতে যুক্ত পুলিশদের একাংশ' বিস্ফোরক মন্তব্য মমতার | Mamata Banerjee
'আমি মারা গেলে আমার যেন স্ট্যাচু না হয়' দলের উদ্দেশ্যে বার্তা মমতার
টাকা 'হজম' করার আগেই ধরে ফেলে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন শুভেন্দু অধিকারী | Suvendu Adhikari | Awas Yojana
বিচ্ছেদের পরও ভয়ঙ্কর আক্রমণ প্রাক্তন জামাইয়ের! আতঙ্কে গোটা পরিবার | Hooghly News Today
Live: মথুরাপুরে সদস্যতা অভিযান অগ্নিমিত্রা পালের, দেখুন সরাসরি