২০১৬ সাল থেকেই বাংলার রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। তিনি দেখেছেন বাংলায় বিজেপির উত্থান। ২০১৬ সালে যখন বাংলার রাজনীতিতে তিনি পা রেখেছিলেন তখনও তেমন শক্তিশালী ছিল দলের সংগঠন। কিন্তু তিন বছর পর দলীয় কর্মী সমর্থকদের অক্লান পরিশ্রমে বাংলায় একটি বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে বিজেপি। তেমনই জানিয়েছেন বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেছেন এই রাজ্যে এসে তিনি স্থানীয় জনগণের শ্রদ্ধা আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওপর আস্থার ঝলক দেখতে পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন এই রাজ্যে অনেক সমস্যা রয়েছে। কেউ যদি সেই সমস্যা মুছে ফেলতে পারে তিনি হলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে তেমনই জানিয়েছেন অমিত শাহ।
অমিত শাহ বলছেন এই রাজ্যে রাজনীতি করতে এসে তিনি দেখেছেন, তথাকথিত মিথ দ্বারা চালিত হওয়া ঠিক নয়। বাস্তবতা বুঝে রণকৌশল তৈরি করাই ঠিক। সংশ্লিষ্ট স্থানে সংস্কৃতি ও পৌরানিক কাহিনী মানুষের চাহিদা সবকিছু বুঝে প্রতিটি পদক্ষেপ করা জরুরি। আর বিজেপি সেজাতীয় পদক্ষেপ করেই বাংলায় সাফল্য পাচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। একই সঙ্গে অমিত শাহ জানিয়েছেন আগামী ২ মে স্পষ্ট হয়ে যাবে এই রাজ্যে এবার সরকার গঠন করবে বিজেপি।
তিনি বলেন জঙ্গলমহল ও উত্তরবঙ্গে শক্ত ঘাঁটি। ২০১৯এর লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি আসন দখল করেছিল বিজেপি। সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলাগুলি আরও বেশি শক্তি অর্জন করেছে। যা পরিলক্ষিত হবে চলতি বিধানসভা নির্বাচনে। তেমনই জানিয়েছেন অমিত শাহ। একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, হাওড়া, ২৪ পরগনা, কলকাতা সহ যেসব এলাকায় এপর্যন্ত ভোট গ্রহণ হয়েছে সেইসব স্থানেও বিজেপি উন্নতি করবে। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলের ফলাফল যথেষ্ট ভালো হবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
মাস্ক পরছেন না মমতা ও অভিষেক, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি পোস্ট প্রশ্ন নেটিজেনের ...
অমিত শাহ বলেন চলতি নির্বাচনে রাজ্যের মহিলা সবথেকে বেশি বিজেপিকে সমর্থন করছে। কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যে মোদীজির দুটি প্রকল্প কিষান সম্মান নিধি ও আযুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করেননি।সেই কারণেই রাজ্যের মহিলাদের একাংশ মমতার সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ। যার প্রভাব পড়বে ভোট বাক্সে। একই সঙ্গে বিজেপি নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাড়ি বাড়ি জলের ব্যবস্থা, নারী সুরক্ষায় জোর, অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করা-- এগুলিও মহিলাদের বিজেপির প্রতি আস্থা বাড়াচ্ছে বলেও দাবি করেছেন অমিত শাহ।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রীর বহিরাগত প্রসঙ্গেও যথেষ্ট উষ্মা প্রকাশ করেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, এই প্রসঙ্গে না কথা বলাই শ্রেয়। তারপরই অমিত শাহ বলেন, উত্তর প্রদেশের মানুষের কাছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বহিরাগত নন, তেমনই আবার তামিলনাড়ু বা তেলাঙ্গনার কাছে নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বহিরাগত নন। বিজেপি একটি সর্বভারতীয় দল। আর সেইজন্যই ভোট প্রচারে বিজেপির নেতা মন্ত্রীরা এই রাজ্যে আসছেন। মোদীজি দেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি প্রয়োজনে এই রাজ্যের মানুষের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। একই সঙ্গে তিনি আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন বাংলার ভূমিপুত্রই এই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করবে। সংসদীয় বোর্ড বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তার সিদ্ধান্ত নেবে।
বাংলায় বিজেপি এলে মরুকরণের রাজনীতি শুরু হবে। এই প্রশ্ন উত্তরে অমিত শাহ বল ঠেলে দিয়েছেন তৃণমূলের কোর্টে। তিনি বলেন, ভোটের ফলাফল প্রকাশ পেলে দেখা যাবে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)কে গোটা বাংলারই পরাজিত করেছেন। কোনও একটি বর্ন তাঁর বিরুদ্ধে ভোট দেয়নি। গোটা বাংলাই তাঁকে নির্মূল করেছে। বিজেপির প্রার্থী তালিকায় তৃণমূল ছেড়ে আসা নেতারাই বেশি প্রাধান্য পেয়েছেন। এই প্রশ্নের উত্তরে অমিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতিকেই দায়ি করেছেন। তিনি বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি মেনে নিতে না পেরেই দল ছেড়েছেন। তাঁরা বিজেপির নীতির সঙ্গে একমত হয়েছেন। তাই এই বিষয়টি আগামী দিনে সমস্যা তৈরি করবে না বলেও মনে করেন তিনি।
'মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি', আসানসোলের জনসভা থেকে শীতলকুচি ইস্যুতে মমতাকে নিশানা মোদীর ..
নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়েও মুখ খুলেছেন অমিত শাহ। তিনি বলেন, সিএএ এখন আইনে পরিণত হয়েছে। তাই এটি কার্যকর করা খুবই জরুরি। খুব তাড়াতাড়ি এটি বাস্তাবায়িত হবে। এই আইন দেশের মঙ্গল করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। লাভ জিহাদ নিয়ে অমিত শাহ স্পষ্ট করে জানিয়েছেন বিজেপির ইস্তেহারে তেমন কিছু নেই। তাই লাভ জিহাদ আইন এখনএই লাগু হওয়ারও কোনও সম্ভাবনা নেই।