তাপস দাসঃ যারা ‘খেলা হবে’ স্লোগান তুলেছে, তারা মানুষকে ছেলেখেলার পাত্র হিসেবে বিবেচনা করছে। যিনি বলছেন, এক দলের দেওয়া মাংসভাত খেয়ে অন্য দলকে ভোট দিন, তিনি অনৈতিকতার চর্চা করছেন। রাজনীতিতে নৈতিকতার কথা মনে করিয়ে দিলেন কংগ্রেস প্রার্থী নেপাল মাহাত। বাগমুণ্ডি বিধানসভা কেন্দ্রের এই প্রার্থী জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। তবে জোট নিয়ে তাঁর বক্তব্য একটু অন্যরকম। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ মনে করেন, জোট হতে পারে হারানোর জন্য, অথবা জোটবদ্ধ দলগুলির নিজেদের শক্তিবৃদ্ধির স্বার্থ দেখতে। তিনি মনে করেন, সংযুক্ত মোর্চা গঠিত হয়েছে তৃণমূল বিজেপিকে হারাবার জন্য। নিজের বিধানসভায় এ কাজে তিনি সফল হবে বলে আত্মবিশ্বাসী নেপাল।
তাঁর বিধানসভা এলাকায় তাঁর বিরুদ্ধে জোটসঙ্গীরা শুরুতে দেওয়াল লেখা আরম্ভ করেছিল। এ নিয়ে ক্ষোভ থাকলেও, বিষয়টিকে রাজনৈতিক গণতন্ত্রের প্রেক্ষিতেই দেখতে চাইছেন তিনি। কংগ্রেসের গড় পুরুলিয়ায় বহু নেতা দলবদল করেছিলেন। কিন্তু তিনি মনে করিয়ে দিচ্ছেন, সবচেয়ে ভাল সময়েও কংগ্রেস এখানে তিনটের বেশি আসন পায়নি। তৃণমূল কংগ্রেস পুরুলিয়াতেও দল ভাঙানোর রাজনীতি করে নিজেরা লাভবান হয়েছে, কংগ্রেসের ক্ষতি করেছে। তবে ২০১৯ সালের ভোটে বিজেপি যে সুবিধা লাভ করেছে, তা দুর্ঘটনা বলে মনে করেন নেপাল মাহাত। তিনি বলেন, ধর্মের সুড়সুড়িকে কাজে লাগানো হয়েছিল সেবারের ভোটে। তাঁর দাবি, ওই ভোট, ১০ দিন পর হলেও এই বিজেপি হাওয়া থাকত না। তিনি স্পষ্ট বলছেন, তাঁদের ভোটাররা বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল এই হাওয়ায়। একই সঙ্গে ইভিএম নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন নেপাল।
জোট নিয়ে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করতে গিয়ে নেপাল মাহাত বলেছেন, জোট তিনি চান না। কিন্তু সামগ্রিক স্বার্থ ও দলের সিদ্ধান্তের কথা তিনি মনে রাখতে চান সর্বাগ্রে। নেপাল মনে করাচ্ছেন, রাজনীতি মানে সমাজসেবা, মানবসেবা এবং উন্নয়ন। বিধায়ক কেউ হলে, তাঁর মনে রাখা উচিত, তিনি মানুষের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, এবং সেই দায়বদ্ধতা তাঁর ভোলা উচিত নয়। শুধু বাংলা নয়, সর্বত্রই এই দায়বদ্ধতা এখন বেমিল বলে আক্ষেপ করেছেন তিনি। দায়বদ্ধতা ভুলে গেলে সাধারণ মানুষ নির্বাচনের উপর আস্থা হারাবেন এবং তাতে সংবিধান সংকটে পড়বে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন নেপাল।