মোদী বনাম মমতা - বিধানসভা ভোটেই ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের রিহার্সাল

২০২১-এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে এবার মোদী বনাম মমতা

আসলে এটা ২০২৪ লোকসভা ভোটের রিহার্সাল

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে ভারতের অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলি

বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে আর কংগ্রেসের পাশে নেই কেউ

Asianet News Bangla | Published : Mar 17, 2021 1:05 PM IST / Updated: Mar 17 2021, 07:30 PM IST

কথায় আছে, বাংলা আজ যা ভাবে ভারত কাল তা করে। সেটা যে খুব একটা ভুল ধারণা নয়, তাই সম্ভবত দেখিয়ে দিতে চলেছে ২০২১-এর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোট। বিহারের আরজেডি থেকে মহারাষ্ট্রের শিবসেনা, এনসিপি - ভিন্‌ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গীরা বাংলার ভোটে তৃণমূলের পাশে দাঁড়িয়েছে। ইঙ্গিত স্পষ্ট, বিজেপি বিরোধিতার প্রশ্নে কংগ্রেসের থেকে তৃণমূল অনেক এগিয়ে। আরও পরিষ্কার করে বললে মোদীর বিকল্প হিসাবে কংগ্রেসের রাহুল গান্ধীর থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য বলে মনে করছে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এদিকে, বাংলায় বিজেপি যেহেতু এখনও মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসাবে কাউকে তুলে ধরেনি, সেহেতু লড়াইটা ঘুরেফিরে মোদী বনাম মমতাতেই এসে দাঁড়িয়েছে। তাই এবারের বাংলার লড়াই আদপে ২০২৪-এ লোকসভা ভোটের রিহার্সাল।  

কিন্তু ভিন্‌ রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গীরা এই রাজ্যে তৃণমূলের হাত ধরল কেন?

প্রথম কারণ, রাহুল এই মুহূর্তে ‘অফিশিয়াল’ কংগ্রেস দলনেতা না হলেও বকলমে তিনি বা তাঁর পরিবার কংগ্রেসকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু কংগ্রেসেরই প্রায় দু’ডজন নেতা যে ভাবে রাহুলের প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করেছিলেন প্রকাশ্যে, তাতে তাঁর দলের উপরে কন্ট্রোল নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। অন্যদিকে, মমতা তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী। দলে তাঁর একচ্ছত্র আধিপত্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই। তার উপরে মমতার নেতৃত্বে বারবার ভোটের বৈতরণী পার হয়েছে তৃণমূল। রাহুলের নেতৃত্বে কংগ্রেসের স্কোরবোর্ড সেখানে ততটাই খারাপ। দলের দুঃসময়ে রাহুলের বিদেশ-ভ্রমণ তাঁর ইমেজে যতটা কালি লেপেছে, মমতার হুইলচেয়ারে বসে রোড-শো ততটাই তাঁর লড়াকু মনোভাবকে নজরে এনেছে। শিবসেনার মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত একধাপ এগিয়ে মমতাকে ‘রিয়্যাল বেঙ্গল টাইগ্রেস’ (আসল বাংলার বাঘ) উপাধি দিয়েছেন। কিছু দিন আগে কলকাতায় মমতার সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন  আরজেডি-র তরুণ নেতা তেজস্বী যাদব। তাঁর সাফ কথা, কংগ্রেস আর বামেদের সঙ্গে আরজেডি-র জোট শুধু বিহারে প্রযোজ্য, অন্য কোথাও নয়। উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব বলেছেন, এ রাজ্যে তৃণমূলের হয়ে প্রচারে সাহায্য করবে তাঁর দল।

এই ভাবেই কেন্দ্রে বিজেপি-বিরোধীরা তৃণমূলের পাশে দাঁড়াচ্ছে একে-একে। আর এই কারণেই ২০২১-এর বাংলার ভোট এ যাবত কালের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষা অমিত শাহ, নরেন্দ্র মোদীর কাছে। মমতা আর মোদী যেন সেয়ানে-সেয়ানে টক্কর। দু’জনেই রাস্তায় নেমে তৃণমূল স্তর থেকে রাজনীতি করেছেন দীর্ঘদিন। তারপরে দু’জনেই হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৪-তে নরেন্দ্র মোদী একধাপ এগিয়ে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। ২০২৪-এর লোকসভা ভোট মমতার কাছে এমনই একটা সুযোগের দরজা খুলে দিতে চলেছে বললে ভুল কিছু বলা হবে না। বস্তুত এই দশ বছরে মমতা প্রশাসক হিসাবে যেমন নিজেকে প্রমাণ করেছেন তেমনই হিন্দুত্ব বিরোধী একটা ইমেজও গড়ে তুলতে পেরেছেন সর্বভারতীয় স্তরে। এখন শুধু জয়ীর পালক দরকার মুকুটে। মোদী বনাম মমতার দ্বৈরথ শুরু হয়ে গিয়েছে। ২০২১-এ বাংলায় যিনি জিতবেন, ২০২৪-এ কেন্দ্রের ভোটে তিনিই এক ধাপ এগিয়ে থাকবেন।

 

 

Share this article
click me!