জিয়াগঞ্জ ট্রিপল মার্ডার কেসে মঙ্গলবার বড়সড় ব্রেক থ্রু এলেও রয়ে গেল কিছু প্রশ্ন। হত্যাকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত উৎপল বেহেরাকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তবে অভিযুক্তের হয়ে আদালতে সওয়াল করল না কোনও আইনজীবী। ফলে অভিযুক্তের পক্ষে সওয়াল ছাড়াই ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত উৎপল বেহেরার।
এদিন বেহেরা গ্রেফতার হতেই লালবাগ মহকুমা আদালত চত্বর জুড়ে কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হয়। শুরুতেই এই খবর চাউর হতেই আদালতে উৎসুক মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে নিল তোয়ালেতে মুখ ঢেকে লালবাগ এসিজেএম আদালতের বিচারক সুপর্ণা রায়ের এজলাসে তোলা হয় উৎপলকে । উত্তেজনার কথা ভেবে পুলিশ অপরাধীর ধারে কাছে ঘেঁষতে দেয়নি সাধারণ মানুষকে । অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ৩০২ ও ২০১ ধারায় খুন ও খুনের চিহ্ন লোপাট করার অভিযোগে মামলা করা হয়।
একই সঙ্গে এদিন অপরাধীর পক্ষে কোনও আইনজীবী মামলা লড়েননি । এই ব্যাপারে লালবাগ শ্যামাসুন্দরী বার অ্যাসোসিয়েশানের সদস্য তথা জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা আইন জীবী বিশ্বজিৎ সাহা বলেন , আমি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করি । আজ এই হত্যাকাণ্ডের অপরাধীর হয়ে যাতে কেউ মামলা না লড়েন বারের আইনজীবীদের কাছে সেই আবেদন রেখেছিলাম । আমার বন্ধুরা সেই আবেদনে সাড়া দিয়েছেন। কার্যত অভিযুক্ত এর পক্ষে সওয়াল ছাড়াই পুলিশের ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজত বিচারকের তরফে মঞ্জুর হয়ে যায়।
এদিকে এদিন জিয়াগঞ্জের ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা ধৃতের দিদি জিয়াগঞ্জ কানাইগঞ্জের বাসিন্দা শ্রাবণী সরকারের বাড়িতে চড়াও হন । ওই আতঙ্কে শ্রাবণীদেবী অসুস্থ হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি জিয়াগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । বিক্ষোভকারিদের দাবি , খুনের আগের দিন উৎপল এই বাড়িতে এসেছিল । তাই আমরা ঠিক করেছি এই রকম অপরাধীর কোনও আত্মীয় পরিজনদের আমরা আমাদের পাড়ায় থাকতে দেব না। এই ব্যাপারে আমরা পুলিশের সঙ্গে কথা বলতেও রাজি । কিন্তু আমাদের সিদ্ধান্ত থেকে এক পা নড়ব না । এই ব্যাপারে জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা চিকিৎসক রাজকুমার সাহার বক্তব্য , পুলিশ অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে । এবার এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থার জোরদার করা উচিত । তাহলেই মানুষের মন থেকে আতঙ্ক দূর হবে ।
অপরাধীকে পুলিশি হেফাজতে পেয়ে জেলার পুলিশ সুপার জানান , দু এক দিনের মধ্যেই অপরাধীকে নিয়ে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে । অতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্কখা এবং টাকার লোভেই খুন হয়ে যেতে হল ওই শিক্ষক পরিবারকে। এদিন লেবুবাগানের বাড়িতেই ছিলেন বন্ধুপ্রকাশের মা মায়ারানি পাল। খবর শুনে তিনি বলেন , শুনেছি উৎপল ধরা পড়েছে । ও আমার প্রতিবেশী ও এক সময় আমার ছাত্রও ছিল। সামান্য কিছু টাকার জন্য ও আমাদের এত বড় ক্ষতি করে দিল । ওকে এমন সাজা দেওয়া হোক আজ আমি যে কষ্ট পাচ্ছি ওর পরিবারও যেন সমান কষ্ট পায়। এই কথা বলার পাশাপাশি মায়ারানি দেবীর অনুমান, ও একা এই কাজ করেনি। এর সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত থাকাতে পারে। পাশাপাশি এই ঘটনায় অভিযুক্তের বাবা মাধব বেরা পাল্টা অভিযোগ করে বলেন,আমার ছেলে ঘটনার দিন অর্থাৎ বিজয়া দশমীর দিন বাড়িতেই ছিল।ঘটনার পিছনে আসল রহস্য কে চাপা দিতেই আমার ছেলেকে ফাঁসানো হল। এর বেশি কিছু বলার নেই।