১০ জানুয়ারি থেকে হলদিয়ার দুর্গাচক এক্সসাইড ব্যাটারি কারখানায় লাগাতার শ্রমিক বিক্ষোভ চলছিল। জানা গিয়েছে, কারখানার অটোমোটিভ সেকশনে গাড়ির ব্যাটারির আলফা চার্জিং পয়েন্টের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করেছিল।
হলদিয়ার (Haldia) এক্সাইড কারখানায় (Exide Factory) শ্রমিক বিক্ষোভকে (Labour Protest) কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আর সেই বিক্ষোভে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার (Arrest) করা হয় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের ২ শীর্ষ নেতাকে। এমনকী, ধৃত দুই নেতা তমলুক সাংগঠনিক জেলার INTTUC সভাপতি তাপস মাইতি ও INTTUC-র হলদিয়ার পর্যবেক্ষক সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়কে সাসপেন্ড (Suspend) করেছে INTTUC নেতৃত্ব। এদিকে গতকালই দুই নেতার অন্তর্বর্তী জামিন মঞ্জুর করে হলদিয়া মহকুমা আদালতের বিচারক। তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করার পরই তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পদেও রদবদল করা হয়। ধৃত তাপস মাইতির পরিবর্তে নতুন জেলা সভাপতি হয়েছেন শিবনাথ সরকার। খারিজ করা হয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষকের পদও।
ঠিক কী ঘটেছিল?
১০ জানুয়ারি থেকে হলদিয়ার দুর্গাচক এক্সসাইড ব্যাটারি কারখানায় লাগাতার শ্রমিক বিক্ষোভ চলছিল। জানা গিয়েছে, কারখানার অটোমোটিভ সেকশনে (Automotive Section) গাড়ির ব্যাটারির আলফা চার্জিং পয়েন্টের কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করেছিল। এর ফলে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছিল কারখানা কর্তৃপক্ষের। মাত্র দুই দিনে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়। এই অচলাবস্থা কাটাতে বার-বার আলোচনার পরিবেশ তৈরি করেও কোনও লাভ হয়নি। এক্সাইড কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, গত কয়েকদিন ধরে শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে কারখানায় ব্যাহত হচ্ছিল উৎপাদন। কয়েকজন ঠিকা শ্রমিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অন্য ঠিকা শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছিল। শেষে কোনও উপায় না পেয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয় ওই শিল্প সংস্থা। এ নিয়ে হলদিয়ার দুর্গাচক থানায় অভিযোগ দায়ের করে তারা। সেই অভিযোগ পেয়েই দুই ঠিকা শ্রমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন-স্ত্রীর প্রেমিকের হাতে খুন স্বামী, ব্যাপক চাঞ্চল্য পুরুলিয়ায়
ধৃত দুই ঠিকা শ্রমিককে গ্রেফতার করার পরই শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ। জেরার সময় উঠে আসে তমলুক সাংগঠনিক জেলার INTTUC সভাপতি তাপস মাইতি ও INTTUC-র হলদিয়ার পর্যবেক্ষক সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। তারপরই কারখানা বন্ধে বিশৃঙ্খলা ও উস্কানির অভিযোগে দুই INTTUC নেতাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এদিকে, দলের দুই নেতার গ্রেফতারির পরই তৎপর হয়ে ওঠে তৃণমূল। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে হলদিয়ার বিভিন্ন শিল্প সংস্থার সঙ্গে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন বৈঠক করবে বলে জানা গিয়েছে। তার জন্য তড়িঘড়ি হলদিয়ায় পৌঁছান শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ও আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন-রক্ষকই ভক্ষক, তল্লাশির নামে ব্যবসায়ীর বাড়িতে ২৫ লক্ষ টাকা সহ ৩৪ ভরি সোনা লুট পুলিশের
এই ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী মলয় ঘটক (Malay Ghatak) বলেন, "সমগ্র পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার ও দলের নজর রয়েছে। এই অচলাবস্থা যে দল ভালো ভাবে নেয়নি তা দুই নেতাকে গ্রেফতারির মাধ্যমেই পরিষ্কার। ওই দুই নেতাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।" রাজ্য আইএনটিটিইউসি সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "বেশ কয়েকদিন ধরেই আমাদের হেল্প লাইনে বিভিন্ন ভাবে অভিযোগ জমা পড়ছিল। তার ভিত্তিতে আমরা ওই দুই নেতাকে তাঁদের পদ থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।"