'এখনও চোখ বুজলে রক্তাক্ত মুখটা স্পষ্ট দেখতে পাই।' প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কোভিড আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়ার পর থেকেই মন ভালো নেই চিকিৎসক পলাশ মজুমদার। তাঁর একটাই প্রার্থনা, 'সেবারের মতোই সুস্থ হয়ে উঠুন প্রণববাবু।'
আরও পড়ুন: প্রিয় 'মামাবাবু'-র আরোগ্য কামনায় হোমযজ্ঞ শুরু, প্রণব মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে উতলা লাভপুরবাসী
২০০৭ সালের ৭ এপ্রিল। সন্ধ্যাবেলায় জাতীয় সড়কে ধরে হুটার বাজিয়ে কলকাতার দিকে যাচ্ছিল তৎকালীন বিদেশমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কনভয়। গাড়িতে মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন মানস ভুঁইয়া। তখন তিনি কংগ্রেসের নেতা। আর পিছনে অন্য একটি গাড়িতে প্রণবের আপ্ত সহায়ক প্রদ্যোৎ গুহ। আচমকাই ঘটল দুর্ঘটনা।
জাতীয় সড়কের উল্টো দিকে আসছিল একটি লোহার রড বোঝাই একটি লরি। সেই লরিটির পাশ দিয়ে যখন যাচ্ছে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের গাড়িতে, তখন লরির ডান দিকের পিছনের চাকাটি ফেটে যায়। লরিটি কাত হতে গাড়িতে ঘষে যায়। দুর্ঘটনায় প্রণববাবু নিজে গুরুতর আহত হন। অল্প আঘাত পেয়েছিলেন মানস ভুঁইয়া। এরপর কোনওমতে ধরাধরি করে পাইলট কারে তুলে অচৈতন্য অবস্থায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে আনা হয় বেথুয়াডহরি গ্রামীণ হাসপাতালে। জরুরি বিভাগে তখন ডিউটিতে ছিলেন মেডিক্যাল অফিসার পলাশ মজুমদার।
আরও পড়ুন: শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে ক্রমশই, প্রণবের সুস্থতা কামনায় যজ্ঞ কীর্ণাহারে
সেদিন নিজের হাতে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ক্ষতস্থান পরিষ্কার করে সেলাই করে দিয়েছিলেন ওই তরুণ চিকিৎসক। এরপর ভিআইপি রোগীকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে। জেলা হাসপাতালে অবশ্য তখন সিটি স্ক্যানের ব্য়বস্থা ছিল না। রাতে একটি নার্সিংহোমে স্ক্যান করিয়ে তৎকালীন বিদেশমন্ত্রীকে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয় দিল্লিতে। সুস্থ হওয়ার পর জীবন বাঁচানোর জন্য চিকিৎসক পলাশ মজুমদার ধন্য়বাদ জানিয়ে চিঠি পাঠান প্রণব মুখোপাধ্যায়। সেই আজ সযত্নে রেখে দিয়েছেন তিনি। ঘটনার পর কেটে গিয়েছে তেরো বছর। এখন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে করোনা আক্রান্তের চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ পলাশ মজুমদার।