মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বামী বিবেকানন্দ। রোজ সকালে উঠে এই দু' জনের ছবির সামনে দাঁড়ালেই তিনি উজ্জ্বীবিত হন। নতুন করে কাজ করার শক্তিও খুঁজে পান। রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের কোনও নেতা বা মন্ত্রী নন, সরকারি সভার মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই এমন মন্তব্য করলেন হাসনাবাদের বিডিও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়। প্রকাশ্যেই প্রশাসনিক কর্তার মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি এই আনুগত্যে জোর বিতর্ক শুরু হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাসে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সবথেকে জনদরদি মুখ্যমন্ত্রীও বলেন তিনি। প্রশাসনিক পদে থেকেও তিনি রাজনৈতিক আনুগত্য দেখিয়েছেন, ওই বিডিও-র বিরুদ্ধে এমন অভিযোগেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা।
উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে শনিবার বুলবুল বিধ্বস্ত হাসনাবাদ ব্লকের বাসিন্দাদের হাতে ত্রাণ সামগ্রী তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। সেই উপলক্ষে হাসনাবাদ মডেল বাজারের স্কুল মাঠে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি এমন আনুগত্য প্রকাশ করেন অরিন্দমবাবু। তিনি যেভাবে মুখ্যমন্ত্রী এবং স্বামী বিবেকানন্দের ছবি দেখে উজ্জ্বীবিত হন, অনুষ্ঠানে হাজির স্থানীয় বাসিন্দাদরাও সেই একইভাবে মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেখে সুফল পেতে পারেন বলেও আশা প্রকাশ করেন অরিন্দমবাবু।
এখানেই শেষ নয়, ত্রাণ বন্টনের জন্য সরকারি আধিকারিকরা যে মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছেতেই এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেড়াচ্ছেন বলে দাবি করেন ওই বিডিও। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কথা ভেবে মুখ্যমন্ত্রী পরিবার পিছু পাঁচ লিটার করে কেরোসিন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই প্রসঙ্গে তুলে অরিন্দমবাবু বলেন. 'পশ্চিমবঙ্গে দাঁড়িয়ে আমি মনে করি এত জনদরদি মুখ্যমন্ত্রী আগে কখনও আসেননি, পরে আসবেন কি না আমার জানা নেই। কারণ একজন ছাত্রছাত্রীর পড়াশোনার খবরও তিনি রাখেন। একটা রাজ্য যদি পড়াশোনায় পিছিয়ে যায়, তাহলে সবকিছুতেই পিছিয়ে যাবে।'
স্বভাবতই বিডিও-র এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে বিজেপি। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনিক স্তরেও যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনীতিকরণ করেছেন, বিডিও-র এই মন্তব্য তাঁরই প্রমাণ। যদিও তৃণমূল নেতাদের দাবি, বিডিও যে কথা বলেছেন তা একান্তই চাঁর ব্যক্তিগত মতামত।