দিনদশেক আগে খোদ মুখ্য়মন্ত্রী জেলায় এসে প্রশাসনিক বৈঠকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বিষয়টি নিয়ে। প্রকাশ্য়ে বেনফিশ কর্তাদের ভর্ৎসনা করে বলেছিলেন, রায়গঞ্জে বেনফিশের অতিথি নিবাস কেন বিয়েবাড়ির জন্য় ভাড়া দেওয়া হয়। কিন্তু ক-দিন যেতে-না-যেতেই আবার সেই অতিথি নিবাসে দেখা গেল বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান। ঘটনায় ক্ষুব্ধ জেলাশাসক বললেন, "আমি এক্ষুণি খোঁজ নিয়ে দেখছি"।
রায়গঞ্জ শহরের বেনফিশের অতিথি নিবাসটি বেশ কয়েকবছরের পুরনো। বাম জমানার মৎস্য়মন্ত্রী কিরণময় নন্দ এর উদ্বোধন করেছিলেন। দপ্তরের কর্মী, আধিকারিক বা উপভোক্তারা বিভিন্ন কাজে জেলা সদরে এলে তাঁদের থাকার জন্য সেখানে ১৪ টি ঘর বানানো হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগ, তৃণমূল জমানায় ওই অতিথি নিবাসটি কার্যত 'বিয়েবাড়ি'তে পরিণত হয়। এমনকি লোকমুখে তার নাম হয়ে যায়, 'বিয়েবাড়িভবন'। যেখানে নাকি একদিনের ভাড়া ১০ হাজার টাকা আর দু-দিনের জন্য় ১৩ হাজার টাকা। শুক্রবার রাতে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, বিয়েবাড়ির আলোয় আলোকিত সেই বাড়ি। সেইসঙ্গে উচ্চমাধ্য়মিক পরীক্ষার সময়েও সেখানে সাউন্ড বক্স বাজিয়ে চলছে গানবাজনা।
ঘটনার কথা জানাজানি হতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায়। খোদ মুখ্য়মন্ত্রী যেখানে দিনদশেক আগে জেলায় এসে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন, সেখানে কী করে এমন ঘটনা আবারও ঘটতে পারে তা ভেবে বিস্মিত স্থানীয়রা। খবর পেয়েই নড়েচড়ে বসেছেন জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তারা। জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা জানিয়েছেন, " কীভাবে এই ঘটনা ঘটলো তা আমি এক্ষুনি খোঁজ নিয়ে দেখছি। " ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি বলে "মুখ্যমন্ত্রী নিষেধ করার পরেও ওই অতিথি নিবাস ভাড়া দেওয়ার সাহস সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কী করে হয়। আমি ওই প্রোজেক্ট ডিরেক্টরকে ডেকে পাঠিয়েছি।"
এদিকে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগের তির, বেনফিশের সেই প্রোজেক্ট ডিরেক্টর তাঁর মতো করেই ঘটনার সাফাই দিয়েছেন। তাঁর কথায়, "অনেক আগে থেকেই ওই অতিথি নিবাস ভাড়া নেওয়া হয়েছিলো। তবে এরপরেও সেখানে বিয়েবাড়ির জন্য ভাড়া দেওয়া হবে কি না, তা আমাদের কলকাতার অফিস থেকে বলতে পারবে।" যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, একটি সরকারিভবনকে যখন বিয়েবাড়িতে পরিণত করা হল, তখন এখানকার প্রশাসন থেকে শুরু করে শাসকনেতারা কার্যত চুপ করে ছিলেন। মুখ্য়মন্ত্রীর নির্দেশে কি রাতারাতি এতদিনের অভ্য়েস পাল্টায়?