সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ডাকে দেশব্যাপী ১০ ঘণ্টার ধর্মঘট। তবে তেমন কোনও বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গে।
সোমবার সকাল ছটা থেকে দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে ভারত বনধ (Bharat Bandh on September 27)। চলবে বিকেল ৪টে পর্যন্ত। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার (Samyukt Kisan Morcha) ডাকে দেশব্যাপী ১০ ঘণ্টার ধর্মঘটে (10-hour strike) সোমবার বেশ কয়েকটি অবিজেপি দল সমর্থন করার আশ্বাস দিয়েছে। এর ফলে দেশ জুড়ে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। তবে তেমন কোনও বিশেষ পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে না পশ্চিমবঙ্গে। বিভিন্ন জেলা থেকে বিক্ষিপ্ত কিছু খবর বাদ দিলে মোটের ওপর স্বাভাবিক রয়েছে সব পরিষবা।
সারা ভারত বনধের সমর্থনে দাঁতনে রেল ও জাতীয় সড়ক অবরোধ বনধ সমর্থকদের। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার ডাকে সারা ভারত সাধারণ ধর্মঘটের সমর্থনে সোমবার দাঁতন স্টেশনের রেল অবরোধ বনধ সমর্থকদের। এদিন সকালে দাঁতন স্টেশনে লোকাল ট্রেন অবরোধ করে বনধ সমর্থনকারী সিপিআইএম-এর কর্মী সমর্থকেরা। ট্রেনের সামনে পতাকা ফেস্টুন নিয়ে দিতে থাকেন স্লোগান। প্রায় এক ঘন্টা অবরোধের পর রেল পুলিশের হস্তক্ষেপে ওঠে অবরোধ। এদিন দাঁতন থানার বামনপুকুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বনধ সমর্থনকারীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দাঁতন থানার পুলিশ।
সংযুক্ত কিষান মোর্চার ডাকা ভারত বনধে তেমন কোন প্রভাব পরেনি বর্ধমানে। অন্যান্য দিনের মত সকাল থেকে ট্রেন ও বাস পরিষেবা স্বাভাবিক আছে। সরকারি ও বেসরকারি বাস রাস্তায় নেমেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে বাজার হাট খুলতে শুরু করেছে। একদা বাম দুর্গ নামে পরিচিত বর্ধমানে এখানো পর্যন্ত কোনো বনধ সমর্থনকারীকে বনধের সমর্থনে রাস্তায় দেখা যায়নি।
বনধকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশি টহলদারি রয়েছে জেলা জুড়ে।
ভারত বনধে পুরুলিয়ায় সরকারি বাস পরিষেবা পুরোপুরি সচল। তবে বেসরকারী বাস পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ। সকালের দিকে ঝাড়খন্ড গামী একটি মাত্র বাসকে বাসস্ট্যান্ড থেকে সামান্য কিছু যাত্রী নিয়ে বের হতে দেখা যায়। তবে পুরুলিয়ার বিভিন্ন ব্লক এলাকা বা ভিন জেলায় যাওয়ার জন্য যে বেসরকারি বাস পরিষেবা রয়েছে তা পুরোপুরি বন্ধ। সকাল থেকে দেখা যায় পুরুলিয়ার সরকারি বাস স্টপেজে যাত্রীদের ভিড়।
দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন নিগমের বাস স্ট্যান্ড থেকে যে সমস্ত বাস কলকাতা মালদা সহ অন্যান্য জেলায় যায়। সেগুলো যথারীতি নির্ধারিত সময়ে বাস স্ট্যান্ড থেকে বের হয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ পরিবহন নিগমের কর্মী জানান সকাল থেকেই কলকাতা সহ বিভিন্ন জেলায় যাবার জন্য সমস্ত রুটের বাস যাত্রী নিয়ে নির্ধারিত সময়ে রওয়ানা হয়েছে। রাস্তাতে কোথাও কোন বাস আটকানোর খবর নেই।
সম্মিলিত কিষাণ মোর্চা বা এসকেএমের ডাকে তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধে সোমবার দেশ জুড়ে ভারত বনধের ডাক দেওয়া হয়েছে। কড়া নিরাপত্তা জারি করা হয়েছে নয়াদিল্লিতে। দেশজুড়ে সাধারণ মানুষকে ধর্মঘটে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এসকেএম।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নভেম্বর মাস থেকে জারি রয়েছে কৃষকদের আন্দোলন। প্রথম থেকেই কৃষকরা তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার দাবি করে চলেছেন। আন্দোলনরত কৃষকদের আশঙ্কা, বিভিন্ন কৃষিপণ্যের জন্য তাঁরা যে এতদিন সরকারের বেঁধে দেওয়া 'ন্যূনতম সহায়ক মূল্য' পেতেন, এই তিনটি আইনের ফলে সেই নিশ্চয়তা আর থাকবে না। যার ফলে সমস্যায় পড়বেন তাঁরা।
এই বনধে সমর্থন জানানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, তেলেগু দেশম পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, বাম দল এবং স্বরাজ ভারত বনধ।