নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডে বড় 'ব্রেকথ্রু'
জেরার মুখে ভেঙে পড়ল ধৃত 'কেমিক্যাল শহিদুল'
তাতেই ঘুম ছুটেছে প্রশাসনের
এমন কী জানালেন 'কেমিক্যাল শহিদুল'
নিমতিতা বিস্ফোরণ কাণ্ডে বড় 'ব্রেকথ্রু'। মঙ্গলবার, এই মামলায় ধৃত শহিদুল ইসলাম তথা 'কেমিক্যাল শহিদুল'-কে ম্যারাথন জেরা করে অনেক অজানা তথ্যই বের করে আনল সিআইডি। এদিন সিআইডি-র তদন্তকারীদের জেরার মুখে কার্যত ভেঙে পড়ে শহিদুল, এমনটাই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। আর সে যে তথ্য দিয়েছে, তাতেই রীতিমতো ঘুম ছুটেছে প্রশাসনিক আধিকারিকদের।
এদিন জেরায় শহিদুল জানিয়েছে, নিমতিতা স্টেশনে রাজ্যের শ্রম দফতরের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনের উপর আইইডি হামলা চালানোর জন্য পরিকল্পনামাফিক তৈরি করা হয়েছিল বিশেষ সার্কিট বোমা। তবে সে নিজে নয়, উত্তরপ্রদেশের আওরঙ্গাবাদের এক ব্যক্তি, তাকে এই হামলা চালানোর বরাত দিয়েছিল, বলে দাবি করেছে শহিদুল। সেইসময় সে ঝাড়খন্ডে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে ছিল। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদের সুতি এলাকায় এসে, বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিনা মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ব্যবহার করে ওই বোমা তৈরি করেছিল সে। বিস্ফোরণের পরই তড়িঘড়ি এলাকা ছেড়ে ফের ঝাড়খণ্ডে দ্বিতীয় স্ত্রীর কাছে আশ্রয় নিয়েছিল শহিদুল। প্রসঙ্গত সেখান থেকেই তাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
সিআইডি-র তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, একেবারে ছোট বয়স থেকেই অপরাধজগতে হাত পাকিয়েছিল 'কেমিক্যাল শহিদুল'। তার বাড়ি সুতি এলাকার মৌলবীপাড়ায়। দশম শ্রেণীতে পড়ার সময়ই বোমা বানিয়েছিল সে। সেই বোমা ব্যবহার করেই নিজের দাদার স্ত্রী অর্থাৎ আপন বৌদিকে প্রকাশ্যেই খুন করেছিল সে। ২০১১ সালে আবার ব্যক্তিগত শত্রুতার বদলা নিতে সুতির স্থানীয় মাদ্রাসা মাঠে, এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে জোরালো সকেট বোমা ছুড়ে তাকে খুন করেছিল সে। এরপর থেকেই এলাকাছাড়া ছিল শহিদুল। তার প্রথম স্ত্রী অবশ্য সুতি এলাকাতেই ছিলেন। তবে দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে ঝাড়খন্ডেই বেশি থাকতেন তিনি।
তবে, এই ঘটনার পরিকল্পনার নেপথ্যে কে বা কারা রয়েছে, তা জানার চেষ্টায় শহিদুল-কে ক্রমাগত জেরা করছে সিআইডি। ব্যক্তিগত শত্রুতার থেকে শহিদুল এই হামলা চালাতে পারে, সেই সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছে না বিজেপি। কারণ, মন্ত্রী জাকির হোসেন একাধিকবার তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিলেন। শহিদুল-এরও পুরনো শত্রুতার বদলা নেওয়ার ইতিহাস রয়েছে। 'কেমিক্যাল শহিদুল'-এর বিরুদ্ধে পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৬, ২০৭ , ১২০ বি এবং বিস্ফোরক সংক্রান্ত ধারায় মামলা করা হয়েছে।