রাজ্য-রাজনীতিতে এই মুহুর্তের সবচেয়ে বেশী আলোচিত নাম আনারুল হোসেনের। কিন্তু কে এই আনারুল হোসেন। কী করে রাজমিস্ত্রি থেকে বিলাস বহুল হোসেন হাউজের মালিক হয়ে উঠলেন এই আনারুল। কী করে নাম জড়ালও রামপুরহাটকাণ্ডে । চলুন এই প্রশ্নের সমুদ্রের কিনারা খোঁজা যাক।
রাজ্য-রাজনীতিতে এই মুহুর্তের সবচেয়ে বেশী আলোচিত নাম আনারুল হোসেনের (Anarul Hossain)। কিন্তু কে এই আনারুল হোসেন। কী করে রাজমিস্ত্রি থেকে বিলাস বহুল হোসেন হাউজের মালিক হয়ে উঠলেন এই আনারুল। কী করে নাম জড়ালও রামপুরহাটকাণ্ডে । চলুন এই প্রশ্নের সমুদ্রের কিনারা খোঁজা যাক।
এক সময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন আনারুল
রামপুরহাটকাণ্ডে গ্রেফতার স্থানীয় ব্লক তৃণমূল সভাপতি আনারুল হোসেনের। কিন্তু কে এই আনারুল হোসেন। এক সময় রামপুরহাট শহর লাগোয়া সন্ধিপুর এলাকায় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন আনারুল। সেই সময় কংগ্রেসের সমর্থক ছিলেন। পরে পরিবর্তনের হাওয়াতে আনারুল কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দেন জোড়াফুল শিবিরে। একটু একটু করে দলে প্রতিপত্তিও বাড়তে থাকে আনারুলের। তাঁকে রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের সভাপতিও করে দল। রাজনীতির ময়দানে নেমে দক্ষ সংগঠক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন। ধীরে ধীরে রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিধানসভার বর্তমান ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তিনি।
আরও পড়ুন, সিবিআই তদন্তে চাপ বাড়ল কি অনুব্রতদের, হাইকোর্টের নির্দেশে বেজায় খুশি বিজেপি
তাঁর ভয়ে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত
পাশাপাশি, তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলেরও ঘনিষ্ঠ বৃত্তেও চলে এসেছিলেন আনারুল। সাংগঠনিক দিক থেকে বগটুই গ্রাম ছিল আনারুলের আওতাতেই। এলাকায় কান পাতলে শোনা গেলো, নিজের এলাকায় আনারুল হয়ে উঠেছিলেন অপ্রতিরোধ্য নেতা। কার্যত তাঁর ভয়ে বাঘে গরুতে এক ঘাটে জল খেত, বলে দাবি স্থানীয়দের। নিজের খড়ের ছাউনি ঘর থেকে প্রাসাদ- সম হোসেন হাউজ বানাতে সময় লাগেনি আনারুলের।
অগ্নিকাণ্ডের সময় কারও ফোন তোলেননি আনারুল
স্থানীয়দের সাফ কথা, ব্লক থেকে জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের পদধূলি প্রায়ই পড়ত হুসেন হাউজে। বড়শাল পঞ্চায়েতের তৃণমূল উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন এবং তার পরবর্তী ঘটনায় আগুনে পুড়ে কয়েক জনের মৃত্যুর ঘটনায় শুরু থেকেই আনারুলের নাম উঠতে শুরু করে। যাঁরা পুড়ে মারা গিয়েছেন তাঁদের আত্মীয়দের দাবি, প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ওঠাবসা রয়েছে আনারুলের। আরও দাবি, অগ্নিকাণ্ডের সময় প্রাণে বাঁচানোর আর্তি জানিয়ে অনেকেই ফোন করেন আনারুলকে। কিন্তু অভিযোগ, তিনি সাড়া দেননি। এমনকি স্থানীয় থানাতেও তিনি বিষয়টি জানাননি। এর পিছনে আনারুলের কী স্বার্থ রয়েছে তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
'আনারুলের নির্দেশেই আগুন'
প্রসঙ্গত, ভাদু শেখ খুনের পরেই খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন আনারুল হোসেন। তিনি সেখানে বার বার শান্তির বার্তা দেন বলেও দাবি করেন। কিন্তু রাত গড়াতেই গ্রামে অশান্তি নেমে আসে। হত্যালীলা পরিণত হয় গ্রামে। মৃত্যু হয় ৮ জনের। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, 'ব্লক সভাপতি আনারুলের নির্দেশেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রামে। ভাদু খুনের আসামিরাই নিজেদের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যালীলা চালিয়েছে। তৃণমূলকে বদনাম করতেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে।'