তিনি সাংসদ নন। কিন্তু তাতে কী! স্বামী তো লোকসভার নির্বাচিত সদস্য। সরকারি গাড়িতে চেপেই দলের কর্মসূচিতে হাজির হলেন সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর স্ত্রী, বিজেপি নেত্রী সুজাতা খাঁ! গাড়িতে চালকের আসনের পাশে বাঁদিকে কাঁচে লাল কালিতে লেখা 'এমপি'। তার নিচে লাল বোর্ডে সাদা কালিতে লেখা 'মেম্বার অফ পার্লামেন্ট'। সেই বোর্ডে আবার সাদা কালিতে অশোক স্তম্ভ! সাংসদ পত্নীর সাফাই, স্বামীর সবকিছুই স্ত্রীর ব্যবহার করতে পারেন, স্ত্রীরই সবকিছুতেই স্বামীরও সমান অধিকার!
২০১৪ সালে যখন তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর থেকে প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হন সৌমিত্র খাঁ, তখন তাঁর স্ত্রী সুজাতা সক্রিয় রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের আগে দলবদল করে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমিত্র। গেরুয়াশিবিরের প্রার্থী হিসেবে বিষ্ণুপুর থেকেই ফের সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। কিন্তু, আদালতের নিষেধাজ্ঞা কারণে ভোটের প্রচার করতে পারেননি। বিজেপিতে যোগ দেন সৌমিত্র খাঁ-এর স্ত্রী সুজাতা এবং স্বামীর হয়ে বাঁকুড়ায় বিষ্ণুপুরে প্রচার চালান।
সোমবার সকালে জনবহুল এলাকা থেকে মদের দোকানে সরানোর দাবিতে পুরুলিয়ায় পথে নামে বিজেপি মহিলা মোর্চা। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ধরে পথ অবরোধ ও বিক্ষোভ চলে পুরুলিয়া শহরের গাড়িখানা এলাকায়, পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কেও। সেই কর্মসূচিতে সামিল হন বাঁকুড়া বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-এর স্ত্রীরও সুজাতাও। কিন্তু সাংসদ স্বামীর সরকারি গাড়িতে চেপে কেন বিজেপি কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসেছেন? সুজাতা খাঁ-এর বক্তব্য, 'সংবিধানের কোথাও লেখা নেই যে, এমপি-এর গাড়িতে তাঁর স্ত্রী চাপতে পারবেন না। যদি সংবিধানে লেখা থাকত, তাহলে নিশ্চয়ই মেনে চলতাম। যে পার্লামেন্ট, সংবিধান সংসদের স্ত্রী সবরকম সুবিধা দেয়, তাঁর গাড়িতে আমি ব্যবহার করতেই পারি।'
তবে সাংসদ সৌমিত্র খাঁ--এর স্ত্রী যাই বলুন না কেন, সরকারি গাড়িতে চেপে তাঁর বিজেপি-এর কর্মসূচি যোগ দেওয়াকে ভালো চোখে দেখছেন না অনেকেই। বরং খোদ সাংসদের স্ত্রীর আচরণে দানা বেঁধেছে বিতর্ক। স্বামীর সবকিছুতেই স্ত্রীর অধিকার আইন স্বীকৃত। তা বলে সাংসদ নিজে ব্যবহারের জন্য সরকারের তরফে যে গাড়ি পান, সেই গাড়ি কী তাঁর স্ত্রী ব্যবহার করতে পারেন? উঠছে প্রশ্ন।